রাজাপুর (ঝালকাঠি) উপজেলা সংবাদদাতা : ঝালকাঠির রাজাপুর শহরের জমির দাম আকাশ চুম্বি হওয়ায় ভ‚মিদস্যুরা হাকডাক দিয়ে দিন দিন খালে দখলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলার এক সময়ের খরস্রোত নদী জাঙ্গালিয়ার শাখা নদীটি ভ‚মিদস্যুদের কারণে আজ মরা খালে আবার কোথাও নালায় পরিণত হয়েছে। সেই খাল ও নালা নানা কৌশলে দখলে নিলেও ক্ষমতাসীন ও পয়সাওয়াদের ভয়ে সকলে চুপ থাকলেও সচেতন মহলের মধ্যে প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। খাল দখলে ক্ষমতাসীন, পয়সাওয়া ও জনপ্রতিনিধিরা জড়িয়ে পড়ায় প্রশাসনও মুখ থুবড়ে রহস্যজনক ভ‚মিকায় আরও উৎসাহী হচ্ছে ভ‚মিদস্যুরা। এ সুযোগে ভ‚মিদস্যু মহলটি দিন দিন খাল দখল করে অবৈধভাবে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে। প্রশাসনের সামনের নাকের ডগায় একের পর এক পাকা স্থাপনা নির্মাণ ও খাল ভরাটের ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো হলেও প্রশাসনের রসহ্যজনক ভ‚মিকায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি রাজাপুর সাংবাদিক ক্লাবের সাংবাদিকরা ঘুরে দেখেছেন, বাগড়ি বাজার এলাকা থেকে শুরু করে পশ্চিম দিকে রাজাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যন্ত দু’পাড় ভ‚মিদস্যুরা গিলে যাচ্ছে, নানা কৌশলে পাকা স্থাপনা, খালের মধ্যে বাশ-খুটি ও পিলার পুতে দোকান উত্তোলন, ভরাট করে যাচ্ছে ভ‚মিদস্যুরা। অভিযোগ রয়েছে এক চেয়ারম্যানকে মাসোয়ারা দিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পেছনের খালের উপরে একাধিক দোকান চলছে। এছাড়া সদরের বাজারের খালে ইট-সুড়কি ফেলে এবং কলেজ রোডের কালি মন্দির এলাকায় বালু ফেলে খাল ভরাট করে ফেলা হয়েছে, এমনকি বাজারের সিড়িও পুরোপুরি ডেকে ফেলা হলেও প্রশাসন অন্ধকারে। প্রশাসনের এমন ভ‚মিকায় শহরজুড়ে চলছে নানা মুখরোচক পয়সা-পাতি লেনদেনের অভিযোগ। আর এসব বিষয়ে লেখালেখি করতে গিয়ে সাংবাদিকদের চাপের মধ্যে পড়তে হচ্ছে প্রশাসন ও প্রভাবশালী ভ‚মিদস্যুদের। সদরের মাছ বাজার ব্রিজের উত্তর পার্শ্বে খালের মধ্যে নির্মাণাধীন পাকা ভবন নির্মাণের জন্য নির্মাণাধীন পিলার সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানালে তিনি ভ‚মি অফিসের কয়েকজনকে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিলে পরবর্তীতে কৌশলে আবার নির্মাণাধীন পিলার কালো পলিথিনে মুড়িয়ে আবার কাঠের ঘর নির্মাণ করে ভ‚মিদস্যুরা। এছাড়া বাজার থেকে বাগড়ি বাজার এবং বাজারের দক্ষিণ মাথা এলাকা পর্যন্ত খালের দু পাশে চলছে ভরাট ও পাকা স্থাপনা নির্মানের প্রতিযোগীতা। অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই আবার কাজ শুরু করা হয়েছে। উপজেলা সদর ঘুরে দেখা গেছে, লোকচক্ষু এড়ানোর জন্য খালের চর প্রথমে বেড়া দিয়ে আগলে রাখে তা ভরাট করে তারা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে। বর্তমানে খালের চর বিক্রির হিড়িক চলছে। নগদ পয়সাওয়ালারা ভাল প্লেস দেখে খালের চর ক্রয় করছেন। তার পরে খালের মধ্যে শুরু করে বিভিন্ন ভবন নির্মাণ। স্বয়ং উপজেলা প্রশাসনও স্বীকার করে খাল দখলের বিষয়ে তাদের কাছেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। বুধবার যদিও আশার বানী শুনালেন ইউএনও আফরোজা বেগম পারুল। তিনি জানান, মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপজেলা সহকারি কমিশনারকে (ভ‚মি) প্রধান করে খাল দখল মুক্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। খাল দখলের স্থানগুলো চিহ্নিতপূর্বক পর্যায়ক্রমে অভিযান পরিচালনা করে দখল মুক্ত করনে করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন