আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে পশুর হাট ও চামড়া নিয়ে কোনো নৈরাজ্য হতে দেয়া হবে না বলে জানান ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া।
গতকাল সোমবার ডিএমপি সদরদফতরে আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে ঢাকা মহানগর এলাকায় কারবানির পশুর হাট সমূহের নিরাপত্তা, মানি এস্কর্ট, জালনোট সনাক্তকরণ, কাঁচা চামড়া ক্রয় বিক্রয়কালে নিরাপত্তা ও অবৈধ পাচার রোধ সংক্রান্তে এক সমন্বয় সভা শেষে পুলিশ কমিশনার এসব কথা বলেন। উক্ত সমন্বয় সভায় ডিএমপি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থার ও সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, হাট ইজারাদার, চামড়া ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এবারের ঈদে ঢাকা মহানগরের সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত মোট ২৩ টি পশুর হাট বসানো হবে। যার মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৩টি ও উত্তর সিটি করপোরেশনে রয়েছে ১০টি পশুর হাট । এবারের ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে পশুর হাটে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। তার মধ্যে পশুর হাট কেন্দ্রিক, মানি এস্কর্ট ও জালনোট সনাক্তকরণ এবং চামড়া ক্রয়-বিক্রয় ও পাচার রোধ সংক্রান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পশুর হাটের নিরাপত্তা সম্পর্কে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের সবার সাথে সমন্বয় করে একটি সুন্দর কোরবানির পশুর হাটের ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকা শহরে অনুমোদিত ২৩ টি পশু হাটে থাকবে পুলিশের কঠোর নজরদারি। পশুবাহী ট্রাক যেখানে যেতে চাই তাকে সেখানে যেতে দিতে হবে। কোন অবস্থায় তাকে বাধা দেয়া যাবে না। এটা সরকারি নির্দেশ। প্রত্যেকটি ট্রাক তার গন্তব্য স্থানের নাম বড় করে ব্যানার বানিয়ে ট্রাকের সামনে ঝুলিয়ে দিবে। কোন ভাবেই এক হাটের পশু অন্য হাটে জোর করে নামানো যাবে না। যদি এমন কেউ করে তাকে চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের অপরাধে আইনের আওতায় আনা হবে। ঈদে পশুর হাট চলবে তিন দিন। ঈদের ৩ দিন আগে কোরবানির হাট ও তার ২ দিন আগে থাকবে প্রস্তুতি। তিনি বলেন, নির্ধারিত হাসিলের অতিরিক্ত আদায় করা যাবে না। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে। পুলিশের মানি এস্কর্ট ছাড়া কোন নগদ টাকা বহন করা যাবে না। বাহিরের ভ্রাম্যমান দোকান ও হকার হাট এলাকায় ঢুকতে পারবে না। ইজারাদাররা নির্দিষ্ট দোকান ঠিক করে দিবেন এবং পাইকারদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করবেন না। তিনি গরু ব্যবসায়ীদেরকে আহবান জানিয়ে বলেন, প্রত্যেক গরু ব্যবসায়ী নিজস্ব ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন। নগদ টাকা পুলিশের সহায়তায় নিজ একাউন্টে জমা করবেন। এতে আপনাদের টাকা নিরাপদে থাকবে। উক্ত সমন্বয় সভার আলোচনায় আরও উঠে আসে- প্রত্যেক পশুর হাটে থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পুলিশ। ইজারার চৌহদ্দির বাহিরে কোন অননুমোদিত হাট বসতে দেয়া হবে না। নির্ধারিত সময়ের আগে পশুর হাটে পশু আনতে হবে। প্রত্যেক হাটে থাকবে পুলিশের কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার। পশুর হাটে ও তার আশপাশে জনসচেতনতামূলক ব্যানার দৃশ্যমান স্থানে টানানো ও প্রচার প্রচারণা করতে হবে। জালটাকা সনাক্তকরণের জন্য পুলিশ কন্ট্রোল রুমে থাকবে জালটাকা সনাক্তকরণ মেশিন। এছাড়াও হাট এলাকায় বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। ইজারাদাররা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটরের ব্যবস্থা নিবেন। হাসিলের হার বড় করে দৃশ্যমান স্থানে টানাতে হবে। হাটের চৌহদ্দি বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে রাখতে হবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিবেন ইজারাদাররা। যাতে করে হাট ব্যবস্থাপনা সুষ্টু থাকে। কোরবানি পশুর হাটে সিটি করপোরেশন ও ইজারাদার কর্তৃক সার্বক্ষণিক মেডিকেল টিম রাখতে হবে। চামড়া ক্রয়-বিক্রয় এবং পাচার রোধে যে সমস্ত ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে- কাঁচা চামড়া ক্রয় বিক্রয়ে জন্য ব্যবসায়ীদের নগদ অর্থ বহনে সার্বক্ষণিক থাকবে পুলিশের মানি এস্কর্ট সেবা। কাঁচা চামড়া পাচার রোধে ঢাকা হতে বহিঃগমন পথগুলোতে বসানো হবে চেকপোস্ট ও নদী পথে বাড়ানো হবে নৌ পুলিশের টহল। ঢাকার বাহির থেকে শুধুমাত্র কাঁচা চামড়াবাহী যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ করতে পারবে। কোন কাঁচা চামড়াবাহী যানবাহন ঢাকা থেকে বাহিরে যেতে পারবে না। চামড়া ক্রয় বিক্রয়ে যাতে কেউ সিন্ডিকেট তৈরি করতে না পারে সে ব্যাপারে রয়েছে কঠোর নজরদারি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন