কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) উপজেলা সংবাদদাতা : ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে চরগোলগলিয়া মৌজায় ভূমি অধিগ্রহণ না করেই অন্যের জমিতে ওয়াসার বিরুদ্ধে নির্মাণ কাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাজ বন্ধের জন্য ওয়াসার বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় জমির মালিক একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চরগোলগলিয়া এলাকায় সরেজমিনে গেলে জমির মালিক আলহাজ্ব মোঃ সামসুল হক জানান, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে চরগোলগলিয়া মৌজায় আমার ক্রয়কৃত ২৬ একর জায়গা রয়েছে। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের ৮ লেন প্রকল্পের জন্য এই জায়গা অধিগ্রহণ নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে আমার জটিলতা দেখা দিয়েছে। ২৬ একর জমির মধ্যে প্রায় ৩ একর জমি চীনা সি এ এম সি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানীর কাছে তিন বছর মেয়াদ চুক্তিতে ভাড়া দেই। চুক্তির মেয়াদ আগামী অক্টোবরে শেষ হবে। তাদের সাথে আমি চুক্তির মেয়াদ বাড়াইনি এবং বাড়ানোর কোন পরিকল্পনাও আমার নেই। কিন্তু আমি বিদেশে থাকা অবস্থায় চায়না সিএএমসি কোম্পানীর প্রতিনিধি, প্রকৌশলী এবং ওয়াসার প্রকৌশলী একত্রিত হয়ে ওই জায়গায় স্থায়ীভাবে বিভিন্ন মালামাল রাখতে এবং জায়গার কিছু অংশে একটি পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করে। আমি বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসে তাদের অবৈধ কার্যাক্রমের ব্যাপারে গত ২৩ জুলাই চীনা কোম্পানীর প্রতিনিধিদের সাথে, ৩১ জুলাই পুনরায় চীনা কোম্পানীর প্রকৌশলী মো. ইকবাল ও আব্দুল মালেক গংদের সাথে এবং পরবর্তীতে ওয়াসার প্রকৌশলী মো. মুনীরের সাথে বৈঠক করি। কিন্তু তারা একতরফাভাবে গৃহীত কার্যক্রমের কোন প্রমানাদি আমাদের কাছে দেখাতে ব্যার্থ হয়। তারা আমাকে মৌখিকভাবে কাজ বন্ধ করার ব্যাপারে আশ্বস্ত করলেও লিখিতভাবে কোন কাগজপত্র করতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন। উক্ত জায়গাসহ আমাদের প্রায় ২৬ একর জায়গা নিয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘিত হওয়ায় আমি কনটেম্পট অব কোর্ট সংক্রান্ত রীট পিটিশন দাখিল করলে আদালত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে শোকজ জারি করেন। আমি সিএস ও এসএ রেকর্ডের মালিকাধীন জায়গা ক্রয় করি। আর এস রেকর্ডে কিছু জমি ভ‚লক্রমে খাস খতিয়নে রেকর্ড হয়। ২০০৩ সালে তহশিল অফিসে খাজনা দিতে গেলে আমি তখন তা জানতে পারি। ওই বছরেই আদালতে আরএস রেকর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ২০০৬ সালে আদালতের দোতরফা মামলায় বাদীর পক্ষে ডিগ্রী হয় এবং আরএস রেকর্ড বাতিল হলে নামজারীর জন্য আবেদন করা হয়। ২০১১ সালে ঢাকা জেলা প্রশাসক মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৪ সালে আদালত ওই আপিল মামলাটি খারিজ করে দেন। আমার এই ২৬ একর জমি বিএস রেকর্ডভ‚ক্ত হয়েছে। এই জমি বাবদ আমি ইসলামি ব্যাংক জিনজিরা শাখা থেকে ৫০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছি। সরকার এই জমি অধিগ্রহণের জন্য আমাকে কোন নোটিশ দেয়নি। ঢাকা-মাওয়া মহসড়কের ৮ লেন প্রকল্পের জন্য সরকার জমি নিতে চাইলে আমি দিতে রাজি আছি। তবে সরকার আমার এই ২৬একর জমি অধিগ্রহনের মাধ্যমে নিতে চাইলে আমার কোন আপত্তি থাকবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন