ভারতের উচ্চ আদালত সম্প্রতি শরীয়তের একটি আইনকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে সরকারকে বলেছে, নতুন আইন করতে। যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী তাদের জন্য আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে মাবুদ মানা সম্ভব নয়। তাদের সর্বোচ্চ আইনদাতা আল্লাহ এবং রাসূল সা.। অপরিবর্তনীয় কিছু আইন এমন আছে যাতে কোনরূপ পরিবর্তন বা সংশোধন ইসলাম সমর্থন করে না। অবশ্য শরীয়ত বিশেষজ্ঞ ইমাম, মুফতি ও বিচারকগণ কোন কোন আইন অবস্থার প্রেক্ষিতে প্রয়োগ করতে পারেন। এরজন্যও রয়েছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। দুনিয়ার কোন রাষ্ট্র ও সংবিধান মুসলমানদের জন্য এমন কোন বিষয়কে বেআইনি বা অসাংবিধানিক সাব্যস্ত করার নৈতিক অধিকার রাখে না, যা শরীয়ত তাদের জন্য বৈধ ও আইনসম্মত করেছে। যদি করে তাহলে তা জুলুম, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকারের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। যেমনটি ভারতে ঘটেছে। বিবাহ তালাক, উত্তরাধিকার আইন, মুসলিম পারিবারিক আইনের অংশ। এটি সম্পূর্ণভাবে শরীয়া বিশেষজ্ঞ আলেম ও ফিকাহবিদদের বিষয়। কোন রাষ্ট্র বা বিচারালয় এতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। রাষ্ট্র ইচ্ছে করলে সংবিধান পরিবর্তন করে ইসলামকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করতে পারে। বিচারালয় পারে এর আলোকে শরীয়া আইন বাতিল করে দিতে। আমাদের জানা নেই দীর্ঘ দেড় হাজার বছর পর এমনই একটি দুঃসময় ভারতবর্ষে আসছে কিনা। মহিলাদের একই সাথে মৌখিক তিন তালাক অসাংবিধানিক ঘোষণা দিয়ে না সারতেই বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত লেখিকা তসলিমা নাসরিন দাবি তুলেছেন যেন গোটা ইসলামী আইনই বাতিল ঘোষণা করা হয়। নিষিদ্ধ করা হয় শরীয়তের বিধান। এ বিষয়ে আলোচনা কেবল শুরু হয়েছে। সামনে বিস্তারিত শোনা ও বোঝা যাবে। সংক্ষেপে শুধু মুসলমানদের বলতে চাই, চোখ কান খোলা রাখুন। কারণ ইসলাম ও মুসলমানের অস্তিত্ব, পরিচয়, ঈমান, ঐতিহ্য হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে শত্রুদের উদ্দেশ্য সফল করার জন্য নিয়োজিত দালাল, নাস্তিক মুরতাদ, রাষ্ট্র ও ধর্মদ্রোহী কুলাঙ্গারের এদেশেও অভাব নেই।
মুসলিম সমাজে একশ্রেণির লোক এমন সবসময়ই ছিল যারা ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ। যেমন, কেউ কেউ মত প্রকাশ করে যে পশু কোরবানী না দিয়ে সমপরিমাণ অর্থ দান করে দিলে আরও ভালো হয়। এতে নাকি পশুর প্রাণও বেঁচে যায়, কৃষিতে সংকট দেখা দেয় না আর গরীব মানুষ অর্থও হাতে পায়। অজ্ঞতা থেকে এমন কথা বলা খুবই খারাপ। আর ইসলামবিদ্বেষ ও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে বলা জঘন্য অপরাধ বটে। এরকমই একটি নির্বোধশ্রেণি ইদানিং বলতে শুরু করেছে, এ বছর বন্যার সময় কোরবানী ঈদ এসেছে। অতএব পশু কোরবানী না দিয়ে সমপরিমাণ অর্থ বন্যার্তদের মাঝে বিলিয়ে দিলে ভালো হয়। এসব কথার পেছনে যে যুক্তি দেখানো হয় তা খোঁড়া যুক্তি। শরীয়তের উদ্দেশ্য ও হেকমতের সামনে এসব যুক্তি চলে না। সাধারণ বিবেচনায়ও এসব যুক্তি ধোপে টেকে না। অনেক বøগার এসব প্রচারণা চালাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এসব আলোচনা নিয়ে খুব সরগরম। মুসলমান মাত্রই জানা উচিত যে, প্রতিটি মুসলমানেরই আর্তমানবতার প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। ফরজ দান ছাড়াও নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে তার অনেক ক্ষেত্রেই সাধ্যমতো দান করা কর্তব্য। যেমন বলা হয়েছে, ‘আমি ঈমানদারদের যে জীবনোপকরণ দিয়েছি তা থেকে তারা ব্যয় করে।’ অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘তাদের অর্থসম্পদে বঞ্চিত অভাবীদের জন্য নির্ধারিত অংশ রয়েছে।’ -আলকোরআন। হাদীস শরীফে আছে, ‘সে ব্যক্তি মুসলমান নয় যার প্রতিবেশী না খেয়ে থাকে।’ আরো বলা হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান তুমি সৎ পথে ব্যয় কর, আমি আল্লাহ তোমাকে দান করব।’ যেমন বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীবাসীর ওপর দয়া করো ঊর্ধ্বলোক থেকে আল্লাহ তোমাকে দয়া করবেন।’
এ ধরনের উদ্দীপনা যে ধর্মে দেওয়া আছে সেখানে ফরজ হজ বন্ধ করে গরীবকে টাকা দান করা, ওয়াজিব কোরবানী বন্ধ করে গরীবকে টাকা দেওয়া, এসব বাজে চিন্তা মূর্খতার প্রমাণ। অথবা নাস্তিক মুরতাদদের শয়তানী ওয়াসওয়াসা। একজন লোক নিতান্ত নির্বোধ হলেই এসব কথা চিন্তা করতে পারে। নয়ত সে শয়তানের চেলা, যে যুক্তির আড়ালে ইসলামকে আহত ও বিকৃত করতে চায়।
যারা বন্যার কথা বলে কোরবানী বন্ধ করতে চায় তারা কি বন্যার সময় ব্যক্তিগত ব্যয়, পারিবারিক ব্যয়, সামাজিক খরচাদি, দেশের অন্য কোনো ব্যয়, অতিরিক্ত খরচ কিংবা অপচয় বন্ধ করার চেষ্টা করেছে? না এজন্য প্রচারণা চালাচ্ছে? সরকারের সাধারণ কোনো কর্মসূচী বাতিল করে বন্যার্তদের দিকে এর বাজেট পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে? দেশের বড় বড় শিল্প, কল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের আয় থেকে বন্যার্তদের জন্য কী কী উদ্যোগ নিয়েছে সেটাও কি তাদের চিন্তা ভাবনায় আছে? আমরা যতটুকু সংবাদ পাই, স্থানীয় সামর্থ্যবান মানুষই বিপন্ন মানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছে। বন্যাদুর্গত এলাকার মসজিদের ইমাম, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক, সাধারণ আলেম-উলামা ও সমাজের নানা শ্রেণি পেশার মানুষ নিজ নিজ সাধ্য অনুযায়ী বন্যার্তদের কিছু হলেও সাহায্য সহযোগিতা দিচ্ছেন। সরকার ব্যাপকভাবে ত্রাণ তৎপরতা ও পুনর্বাসন কার্যক্রম চালাবে মানুষ সেটাই আশা করছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্গত এলাকায় সফর শুরু করেছেন। অনেক জায়গায় তিন মাস পর্যন্ত জরুরি খাদ্য বিতরণের প্রোগ্রাম নেওয়া হয়েছে। কোনো কেনো অঞ্চলে বন্যার প্রকোপ অনেক বেশি হওয়ায় সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। এখানে ত্রাণ সাহায্য ব্যাপক করার জন্য আরও বহু উপায়, পথ ও পদ্ধতি প্রস্তাব করা যায়, উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়। কিন্তু মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঈদ উৎসব ও মহান ত্যাগের নিদর্শন পশু কোরবানী রহিত করে দেওয়া এবং এর পরিবর্তে ত্রাণ বিতরণ করার প্রস্তাব কত বড় মূর্খতা ও বাতুলতা তা ভাবতেও অবাক লাগে। কোরবানী কোন দান নয়, এটি আল্লাহর দেওয়া হালাল প্রাণী তারই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা। অর্থ ব্যয় উদ্দেশ্য নয়। অতএব পশু জবাই ছাড়া এর কোন বিকল্প নেই।
কোরবানীর পশু অন্তত নব্বই ভাগ মানুষ অর্থের বিনিময়ে সংগ্রহ করে থাকে। বাকি দশ ভাগ মানুষ হয়তো নিজেদের ঘরের পশু কোরবানী দেয়। নব্বই ভাগ মানুষ যে দেড় দুই কোটি পশু ক্রয় করে থাকে এর অর্থ কি মানুষের হাতে পৌঁছে না? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই অর্থনৈতিক তৎপরতা গোটা জাতির জীবনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে থাকে। কোরবানী কার্যক্রমের সাথে অনেক কৃষক, ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী, শ্রমজীবী মানুষ জড়িত। এসময় তারা বাড়তি সামাজিকতা, গণসংযোগ, আত্মীয়তার হক আদায়, উপার্জন ও বদান্যতার সুযোগ লাভ করে। কোরবানীর ক্ষেত্রে এর গোশত সকলের জন্য পবিত্র ও হালাল হওয়ায় মুসলিম জাতির মধ্যে বিশেষ উৎসবের আমেজ পরিলক্ষিত হয়। অন্তত ঈদ মৌসুমে কম বেশি গোশত খায় না বা পায় না এমন মানুষ মুসলিম সমাজে পাওয়া যাবে না। কোরবানীর পশু আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করার পর দয়াময় আল্লাহ তা কবুল করত তার বান্দার জন্য মেহমানদারীস্বরূপ এর গোশত ভোগ করার অধিকার দিয়ে দেন। এ যেন আল্লাহর দেওয়া তোহফা। সাধারণভাবে এর বণ্টন প্রায় এমনই হয় যে মানুষ নিজে তা থেকে খায়, প্রতিবেশী বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের দেয়। পাশাপাশি নিজের চেনা অচেনা যত মানুষের সাথে তার চলাচল, তা সে সচ্ছল হোক বা অভাবী, যথা সম্ভব তাদের সবাইকেই এতে শরীক করে। ফলে দেখা যায় কোনো না কোনো সুবাদে সব মানুষই কোরবানী ঈদের আনন্দে শরীক হতে পারে। এ খোদায়ী দাওয়াত বা ঐশী মেজবানী যাদের চোখে ভালো লাগে না অথবা অন্য কথায় যাদের অন্তরে গরু কোরবানী ভালো না লাগার রোগ আছে তারাই কেবল এর বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরার সুযোগ খুঁজে বেড়ায়। এ বছর দেশব্যাপী বন্যা কোরবানীর পথে কোন অন্তরায় নয়। যাদের অবস্থা বিপন্ন তাদের ওপর তো কোরবানী নেই। যারা গবাদি পশু নিয়ে বিপদে কোরবানী উপলক্ষে অসংখ্য পশু ক্রয়-বিক্রয় হবে বলে বন্যার্তরা পশুর বিনিময়ে টাকা পয়সা হাতে পাবেন। যা অন্যান্য সমস্যা দূর করতে কাজে লাগবে।
বাংলাদেশের সমাজে বিপুল পরিমাণ দরিদ্র, অসহায়, এতীম শিশু এতীমখানা ও কওমী মাদরাসার আশ্রয়ে পড়ালেখা ও জীবনধারণ করে। যারা মাদরাসার আশ্রয় না পেলে সমাজের বোঝা হিসেবে বেড়ে উঠত। বড় হয়ে বেকার, সন্ত্রাসী ও সমাজবিরোধী শক্তি হিসেবে দেশ ও জাতির জন্য অভিশাপ হয়ে দেখা দিত। এসব শিশু ছাড়াও সমাজের সুবিধবঞ্চিত বহু ছাত্র মাদরাসার কল্যান তহবিল থেকে সাহায্য নিয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠছে। এই তহবিলের অন্যতম উৎস কোরবানীর চামড়া, যা শত বছর যাবত বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ এর প্রাপকরা একাধারে দরিদ্র ও ইলমে দীন শিক্ষার্থী, এ দুটি গুণের কারণে মাদরাসায় দিয়ে অভ্যস্থ। শরীয়তের দৃষ্টিতে যা প্রশংসনীয়। মাদরাসার কর্তৃপক্ষ যাকাত, সদকা, কোরবানীর চামড়া খুব সতর্কভাবে এই দরিদ্রকল্যাণ তহবিলে ব্যয় করেন। নিজেদের বেতন, সম্মানী, নির্মাণ, উন্নয়ন বা সাধারণ খাতে এসব ব্যয় করেন না। গত কয়েক বছর যাবত বাংলাদেশের মাদরাসা বন্ধ করে দেওয়ার নানবিধ ফন্দি-ফিকির ইসলামের দুশমনেরা করে চলেছে। এর মধ্যে অপপ্রচার, জঙ্গি অপবাদ ছাড়াও কোরবানীর চামড়া মাদরাসায় না দেওয়ার জন্য ক্যাম্পেইন করা তাদের একটি ষড়যন্ত্র। মিডিয়াতেও একশ্রেণির ধর্মদ্রোহী লোককে দেখা যায় মাদরাসাবিরোধী অপপ্রচারের সময় কোরবানীর চামড়া নিয়ে খোঁচা দিতে। এরাই ঈদের দিন চামড়া ছিনতাইকে উৎসাহিত করে। দেখা গেছে সারা জীবন যেখানে মাদরাসার তরুণ শিক্ষার্থীরা সুন্নত মোতাবেক কোরবানীর পশু জবাই করে দিত এবং পরবর্তীতে চামড়াটি সংগ্রহ করত, গত ক’ বছর এ কাজে স্থানীয় ও বহিরাগত ক্যাডাররা বাগড়া দিচ্ছে। কিছু ইসলামবিরোধী এনজিও টাকা পয়সা দিয়ে মাস্তান নিয়োগ করছে চামড়া কেনার জন্য। যারা বাজার দরের চেয়ে কম মূল্য দিয়ে মানুষের বাড়ি থেকে জোর করে চামড়া নিয়ে যাচ্ছে। এমনও দেখা গেছে, কোনো প্রতিষ্ঠানের সংগ্রহকৃত ট্রাক বোঝাই চামড়া রাজনৈতিক পরিচয়ধারী ক্যাডাররা ছিনিয়ে নিয়েছে। তাছাড়া গত তিন চার বছর যাবত মন্ত্রণালয় কর্তৃক চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার ফলে দেশীয় ব্যবসায়ীদের হাত থেকে চামড়া ব্যবসা পরিচয় গোপনকারী একটি নেপথ্য শক্তির হাতে চলে যাচ্ছে। ব্যবসায় লসের ভয়ে অনেকে চামড়া বেশি দামে কিনছে না আর নির্দিষ্ট দামে পাচ্ছেও না। অথচ বিশ্ববাজারের সমপর্যায়ের মূল্যে প্রায় সব চামড়া সীমান্ত এলাকায় কেনা বেচা হয়ে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখানে গরু কোরবানী নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি চামড়ার ওপর দুশমনের শ্যেনদৃষ্টিও লক্ষ করার মতো।
আমরা আশা করি, সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলেরা এসব বিষয় দরদের সাথে ভাববেন। জনগণের সুখ-দুঃখ দেখার দায়িত্ব সরকারের। ৯৩ ভাগ মানুষ মুসলমান। তাদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। মুসলিম জনসাধারণের জন্য চারপাশের সকল দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শরীয়ত নির্ধারিত ইবাদত-বন্দেগী করাও অপরিহার্য। সুতরাং নির্বোধ ও বিদ্বেষীদের কথায় শরীয়তের একটি ওয়াজিব বর্জন যেমন জায়েয নয় ঠিক তেমনি দুশমনদের প্ররোচনায় দীনি কর্তব্য ভুলে যাওয়াও চরম গাফিলতি। সতর্কভাবে যথারীতি অবশ্যই কোরবানী দিতে হবে। সচেতনভাবে এর চামড়া দরিদ্র কল্যাণতহবিল আছে এমন মাদরাসায় পৌঁছে দিতে হবে। জেনে না জেনে, বোঝে না বোঝে যে বা যারা ইসলামের ক্ষতি করতে চায় তাদের বোঝাতে হবে। যারা অজ্ঞ, যারা দুশমন, যারা ষড়যন্ত্রকারী তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে খোঁজ-খবর রাখতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন