মো. আবু শহীদ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে
অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে অধিক ফলন হওয়ায় ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষকেরা। কৃষকেরা জানায় উৎপাদন খরচের তুলনায় ধানের বাজার মূল্য কম হওয়ায় ধান চাষ করে প্রতিবছরই তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। গত বছরের বোরো ধানে যে লোকসান হয়েছে সেই লোকসানের বোঝা এখনো টানতে হচ্ছে। তাই বিকল্প হিসেবে অন্যান্য ফসলের মধ্যে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এই এলাকার কৃষক। অন্যান্য ফসল চাষের তুলনায় ভুট্টা চাষে খরম কম ও অধিক ফলন হওয়ায় কৃষককুল এখন ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় মাঠ ভরে গেছে ভুট্টার ক্ষেতে। আবওহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় রকমের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে বলে আশাবাদী এই এলাকার ভুট্টা চাষিরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হামিম আশরাফ বলেন, উপজেলায় ৬২৫০ একর জমিতে ভট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬৫৪৫একর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। প্রতি একরে ভুট্টার ফলন হয় ১২৫ মণ বা ৫ দশমিক ৫ টন। যা অন্যান্য ফসলের তুলনায় অনেক বেশি। তিনি আরো বলেন, এই অঞ্চলের পলি ও দোআঁশ মাটির সংখ্যা বেশি যা ভুট্টা চাষে উপযুক্ত। এ কারণে এই অঞ্চলে ভুট্টার অধিক ফলন হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভুট্টাচাষিদের সময়মতো সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে যার ফলে এই এলাকায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি জানান। উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের ভুট্টা চাষি ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, অন্য ফসলের তুলনায় কম খরচে অধিক ফলন হওয়ায় ভুট্টা চাষ করা লাভজনক এবং বর্তমানে বাজারে ভুট্টার চাহিদাও ব্যাপক। এজন্য তিনি এই মৌসুমে ৩ একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। রাজারামপুর গ্রামের কৃষক আবু বক্কর বলেন, আল ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষ করা যায়। এ জন্য তিনি তার ৫একর আলুক্ষেতে ভুট্টা চাষ করেছেন। আলু গত ১মাস আগেই তুলে নিয়েছেন এখন শুধু ভুট্টা রয়েছে। ভুট্টা চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন ভুট্টা চাষিরা এজন্য এ অঞ্চলে চাষিরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছে। একই কথা বলেন, শিবনগর এলাকার ভুট্টা চাষি মনসুর মন্ডল, ভিমলপুরের মকছেদ আলী ও আমজাদ মিয়া। কৃষকেরা আরো বলেন, যেভাবে ভুট্টার ব্যবহার বাড়ছে সে অনুযায়ী এ অঞ্চলে ভুট্টা ভিত্তিক কোনো কলকারখানা গড়ে উঠেনি। তাই এ অঞ্চলে ভুট্টার আটা ও পশু খাদ্য তৈরির মিল স্থাপন করা হলে ভুট্টা চাষ আরোও বৃদ্ধি পাবে এবং চাষিরা তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য পাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন