মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

নাই হলো মা জেওর লেবাস...

শেখ দরবার আলম | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এক.
ইসলাম এবং নজরুল ইসলাম আমার পরিবারের মানুষদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় বিষয়। সাতচল্লিশের মধ্য আগস্টের আগে মুসলমানদের প্রতিটি ঘরে ঘরেই এসব ছিল প্রিয় বিষয়। সাতচিল্লশের মধ্য আগস্টের পর সেসব অনেকটাই ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। তবু এই রোজার কয়েক দিন পর আমার স্ত্রীকে বলতে শুনলাম; ‘নাই হলো মা জেওর লেবাস বসল ভ‚ষণ এই ঈদে আমার/আল্লাহ আমার মাথার মুকুট রসুল গলার হার।’
কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সৃষ্টির কথা যখন ভাবি তখন মনে হয় যে, তার মহৎ অবদানের অনেক দিকের কথাই তুলে ধরার আছে এবং তার অবদানের এক এক দিক নিয়ে তাকে এক একভাবে, অনেকভাবেই অভিহিত করা চলে। তার অবদানের কোন দিকটা কে কীরকম গুরুত্ব দেবেন সেটা সেই মানুষটির পড়াশোনা, অভিজ্ঞতা ও জীবনবোধের ওপর নির্ভর করে।
আমার মনে হয় নজরুল জীবন ও সৃষ্টির সেবামূলক দিকগুলোই সবচেয়ে বেশি স্বাতন্ত্র্যমÐিত, অনন্য সাধারণ এবং অপরিহার্যভাবেই প্রয়োজনীয়। সে দিক দিয়ে আমি তাকে তামাম উপমহাদেশের ও বিশ্বের গণমানুষের অর্থনৈতিক সাম্যের ও বিভিন্ন ধর্মীয় সমাজের আর্থ-সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত, আইনগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক সহাবস্থানের কবি হিসেবেই দেখি।
সাহিত্যকর্ম নজরুলের কাছে বিলাসিতা ছিল না। সাহিত্য ও সঙ্গীতসেবা নজরুল সেভাবে করতে চাননি। তার মূল লক্ষ্য, প্রধান লক্ষ্য ছিল হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, ইহুদি, বৈন, পারসি, শিখ, এ রকম ধর্মীয় সমাজ নির্বিশেষে গণমানুষের সেবা। সে দিক দিয়ে তার সবচেয়ে বড় পরিচয়, যে পরিচয় তিনি নিজে দিতে চাইতেন সেটা হলো এই যে, তিনি গণমানুষের অর্থনৈতিক সাম্যের ও বিভিন্ন ধর্মীয় সমাজের আর্থ-সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত, আইনগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক সহাবস্থানের কবি। ঠিক এই দৃষ্টিভঙ্গিতেই নজরুল মুসলমান সমাজের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাহিত্য-সঙ্গীত ও ইসলামী সংস্কৃতির পরম্পরা এবং এই পরম্পরাভিত্তিক মুসলিম জাতিসত্তাকে এবং অন্যান্য ধর্মীয় সমাজের মতো হিন্দু সমাজের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাহিত্য-সঙ্গীত, হিন্দু ধর্মীয় সংস্কৃতির পরম্পরা এবং এই পরম্পরাভিত্তিক হিন্দু জাতিসত্তাকে বিভিন্ন ধর্মীয় সমাজের সহাবস্থানের দৃষ্টিতে দেখেছেন। কেবল দেখেননি, দেখতে চেয়েছেনও। তাই বিভিন্ন ধর্মীয় সমাজের ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা ধর্মীয় স্মরণীয় দিন উপলক্ষে নজরুল কবিতা, গান, নাটিকা ইত্যাদি লিখেছেন এবং বেতারে, গ্রামোফোন রেকর্ডে এ রকম অনুষ্ঠানাদিতে অংশগ্রহণও করেছেন। নজরুল কেবল মুসলমানের নয়, সব ধর্মীয় সমাজের কবি হতে চেয়েছিলেন।
নিজের পরিচয় সম্পর্কে তিনি অত্যন্ত স্পষ্টভবেই বলতেন যে, তিনি আল্লাহর বান্দা এবং নবীর উম্মত; কিন্তু তিনি কবি সব মানুষের, সব ধর্মীয় সামজের মানুষের। এই রকম জীবনবোধসম্পন্ন সাম্য ও সহাবস্থানকামী কবি বাঙলা সাহিত্যে আর কেউ আসেননি, বিশ্ব সাহিত্যে কেউ এসেছেন কি না তা আমার জানা নেই।

দুই.
ঈদ উপলক্ষেও নজরুলের এই দৃষ্টিভঙ্গির কথা মনে রাখতে হবে। আর মনে রাখতে হবে যে, ইসলাম কোনো অনুষ্ঠানসর্বস্ব ধর্ম নয়। ইসলামী জীবনব্যবস্থা থেকে ইসলামকে বিচ্ছিন্ন করে দেখার কোনো সংস্থান নেই। আর ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রতি নজরুলের ছিল আপোষহীন আনুগত্য এবং অপরিহসীম শ্রদ্ধাবোধ ও অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণ। তার চিন্তা-ভাবনার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল তৌহিদবাদ, আল্লাহর একত্ববাদ, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। এটা বিস্তৃত হলে নজরুল জীবন ও সৃষ্টিকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করা যাবে না।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের মানবিক কর্তব্যবোধের ও মানবাধিকার বোধেরও মূল ভিত্তি ছিল ইসলাম। আল্লাহ আছেন এ বিশ্বাস তার পূর্বাপর সব সময়েই ছিল। পরকালে বিশ্বাস ছিল। ইহকালে কে কিভাবে জীবনযাপন বা জীবন ধারণ করেছেন, এই সব কিছুর বিচার আল্লাহ এক সময় করবেন, এ বিশ্বাস তার ছিল। তিনি এ-ও বিশ্বাস করতেন যে, আল্লাহই তাকে পরিচালিত করছেন, আল্লাহই তার সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করছেন। তার ব্যবহারিক জীবনের মূল ভিত্তিও ছিল এই বিশ্বাস। এর ফলেই ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, অঞ্চল নির্বিশেষে সব মানুষের প্রতিই ছিল তার গভীর সহমর্মিতাবোধ।
তিনি সব সময়ই সবার প্রতিই সৎ থাকতেন, সুবিচারবোধসম্পন্ন থাকতেন, ন্যায়পরায়ণ থাকতেন, সহজ-সরল ও সুরুচিসম্পন্ন ও ব্যক্তিত্ববান থাকতেন। এক কথায় মনুষ্যত্ব বোধসম্পন্ন একজন পূর্ণাঙ্গ ও পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবেই তিনি জীবনযাপন ও জীবন ধারণ করতেন। এ কারণেই বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার ছিল আপোষহীন প্রতিবাদ। তিনি ছিলেন সাম্যের পক্ষে মানুষ, মজলুম মানুষদের পক্ষে মানুষ।
(অসমাপ্ত ...)

নজরুলের সাম্যবাদী আদর্শ
আফতাব চৌধুরী
নিদারুণ দারিদ্র্য ও দুঃখ-কষ্টের মধ্যেই কেটেছে নজরুলের ছেলেবেলা। প্রথম থেকেই তিনি ছিলেন বেপরোয়া, বেহিসেবী, প্রাণভোলা। কখনও যাত্রা দল, কখনও লেটোর দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন গ্রাম গ্রামান্তরে। কাছ থেকে দেখেছেন দরিদ্র অবহেলিত মানুষের জীবনের জলছবি-তাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না কিশোর নজরুলের অনুভূতির তন্ত্রীতে দুঃখী মানুষদের জন্য এক স্থায়ী অনুরণন সৃষ্টি করেছিল। দারিদ্র্যের কশাঘাতে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার আগেই স্কুলের পাঠ শেষ না-করে যোগ দিলেন পরাধীন ভারতের ব্রিটিশ পরিচালিত সামরিক বাহিনীতে। তখন চতুর্দিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা। ঊনপঞ্চাশ নম্বর বেঙ্গলি রেজিমেন্টের সৈনিক হিসাবে করাচি সেনানিবাসে কাজে যোগ দিলেন। সৈনিক জীবন সদ্যযুবা নজরুলকে দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্দীপ্ত করল। সৈনিক বৃত্তি তাঁকে স্বাধীনতার আকাক্সক্ষায় উদ্বেল করে তুলেছিল। পল্টনে থাকাকালীন তাঁর কানে রুশ বিপ্লবের বার্তা এসে পৌঁছায়। রাশিয়া ও মধ্য এশিয়ার মানুষের সংগ্রাম, সংঘর্ষ ও সমাজ পরিবর্তনের খবর তিনি জানতে পারেন। এই খবরগুলো তাঁর মনকে ভীষণভাবে আন্দোলিত করে তোলে। সৈনিক জীবন তাঁর বিশ্বচেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করেছিল। বিকশিত করেছিল কিশোর বয়স থেকে লালিত সাংস্কৃতিক চেতনা। পরবর্তী সময়ে এই চেতনাকে সাম্যবাদী আদর্শ ও দর্শনে আরো উন্নত ও ধারালো করে তুলেছিলেন মুজফ্ফর আহমদ অবিভক্ত বাংলার সাম্যবাদী আন্দোলনের অন্যতম প্রাণপুরুষ ও ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
১৯১৭ সালের নভেম্বরে রাশিয়ায় বিপ্লবের পর ভারতের শ্রমিক আন্দোলনের ওপর তার যে প্রভাব পড়তে থাকে তাকে উপজীব্য করে কমরেড মুজফ্ফর আহমদ ১৯১৯ সালে ‘দ্বৈপায়ন’ ছদ্মনামে ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকায় নিবন্ধ লিখতেন। ঐ ছদ্মনামে ‘ধূমকেতুতেও তিনি লিখেছেন। কমিউনিষ্ট পার্টি গঠনের ক্ষেত্রে লেনিনের বক্তব্য ছিল ‘‘শ্রমিকশ্রেণীর সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠা করাই হবে পার্টি গঠনের প্রথম ধাপ।’’ ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলার সেই প্রথম যুগে লেনিনের এই কথায় মুজফ্ফর আহমদ অনুভব করলেন, প্রচার না করলে মানুষকে বৈপ্লবিক সংগ্রামে টেনে আনা যাবে না। ১৯১৯ সালে মুজফ্ফর আহমদ, কাজি নজরুল ইসলাম এবং আরো কয়েকজন আলোচনা করে ঠিক করলেন একটি বাংলা দৈনিক বের করতে হবে। কাগজের নাম ঠিক করা হল ‘নবযুগ’। ১৯২০ সালের ১২ জুলাই কাজী নজরুল ইসলাম ও মুজফ্ফর আহমদের যৌথ সম্পাদনায় আত্মপ্রকাশ ঘটল সান্ধ্যা দৈনিক ‘নবযুগ’ পত্রিকার। যদিও কাগজে ঐ দু’জনের নাম ছাপা হতো না। নজরুলের জোরালো লেখার গুণেই প্রথম দিন থেকেই কাগজটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেল হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের কাছে! একটি সুস্থ ও ঐক্যবদ্ধ জাতীয় চেতনা বিস্তারে এই পত্রিকার অবদান অসামান্য। পত্রিকায় ভাষা ও সংস্কৃতিগত সংগ্রাম ও ঐক্যের জোয়ার এনেছিলেন নজরুল ও মুজফ্ফর আহমদ এই তাঁদের রচনায় সারল্য ও ঋজুতার সঙ্গে জীবন সংগ্রামের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে থাকেন নবযুগের পাতায়। ‘নবযুগ’ পত্রিকায় নজরুলের সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। এর আগে তিনি কোনোদিন কোনো কাগজের অফিসের চৌকাঠ পর্যন্ত মাড়াননি। অথচ সাংবাদিকতার উন্নত মান স্পর্শ করেছিল নবযুগ, মূলত নজরুলের সম্পাদনা ও লেখনীর জোরে। সম্পাদকীয় রচনা, শিরোনাম নির্বাচন, সংবাদ ভাষ্য রচনায় নজরুলের কলম অনবদ্য সার্থকতা লাভ করে। খিলাফৎ আন্দোলনের সময় ভারত থেকে বহু মুসলমান ব্রিটিশনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ স্বেচ্ছানির্বাসনে যান আফগানিস্তানে। এদের বলা হতো মুহাজির বা নির্বাসিত। এই নিরীহ মুহাজিরদের ওপর ব্রিটিশ সৈন্য অকথ্য অত্যাচার করে। নিহত হন বহু মুহাজির। এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে নজরুল নবযুগে জোরালো সম্পাদকীয় লেখেন ‘মুহাজির হত্যার জন্য দায়ীকে।’ সংবাদের শিরোনাম রচনাতেও্র নজরুলের বিশেষত্ব উল্লেখযোগ্য। ইরাকের রাজা ফয়সলের বিরুদ্ধে বিট্রিশ সা¤্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সংবাদের শিরোনাম লেখেন রবীন্দ্রনাথের গানের কলি ব্যবহার করে ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার/পরাণসখা ফয়সল হে আমার।’
তৎকালীন বাংলাদেশে শ্রমিক-কৃষকের জীবন যন্ত্রণাকে চিত্রিত করে ও স্বাধীনতা চেতনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন রকম পত্র-পত্রিকার মতো ধূমকেতু পত্রিকাও ছাপা হতো ৩২ নং কলেজ স্ট্রিটের বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির দফতর থেকে। পত্রিকা প্রকাশের আড়াই মাসের মাথায় ১৯২২ সালের ৬ নভেম্বর সেই দফতরে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়লো। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল ধূমকেতুর সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম এবং মুদ্রক প্রকাশক মুহাম্মদ আফজালুল হকের বিরুদ্ধে। মুদ্রক-প্রকাশক সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার হলেন। কিন্তু নজরুল তখন এক বিশেষ কাজে চলে গিয়েছিলেন বিহারের সমস্তিপুর। পরে সেখানে থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে তিনি চলে যান পূর্ববঙ্গে। অবশেষে পুলিশ তাঁকে কুমিল্লা শহর থেকে গ্রেফতার করে আনে। বিচারাধীন বন্দী হিসাবে তাঁকে হুগলি জেলে রাখা হয়। কিন্তু স্বভাব-বিদ্রোহী দামাল নজরুলকে দামানো সহজ নয়। রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তির দাবিতে ও জেলের ভিতরের নানা অব্যবস্থার প্রতিবাদে নজরুল অনশন শুরু করেন। এই অনশনের খবরে সারা দেশ সচকিত হয়ে ওঠে। রবীন্দ্রনাথ ¯েœহভোজন কবিকে তারবার্তা পাঠিয়ে অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেন ‘অনশন ত্যাগ করো আমাদের সাহিত্য তোমাকে চায়। কবির অনুরোধ ও মাতৃসমা বিরজাসুন্দরী দেবীর অনুরোধে অবশেষে নজরুল তাঁর অনশন ভঙ্গ করেন। সরকারও বন্দিদের দাবি মেনে নেয়। দশমাস বন্দিজীবন যাপনের পর নজরুল জেল থেকে ছাড়া পান।
নজরুল তাঁর রচিত ‘ব্যথার দান’ গল্পে বাংলা সাহিত্যে প্রথম লালফৌজকে উপস্থিত করেছেন। ১৯১৭ সালের নভেম্বর মাসে রুশ বিপ্লব সংঘটিত হবার পরে পৃথিবীর সা¤্রাজ্যবাদী সরকারগুলো রাশিয়াকে চারদিক থেকে ঘিরে ভিতরের প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিবিপ্লবী বাহিনীকে সাহায্য করতে থাকে বিপ্লবকে পরাজিত করা ও শিশু সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য। সে সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শ্রমিকশ্রেণির অগ্রগামী সদস্যরা বিপ্লবকে রক্ষা করতে শ্রমিকশ্রেণির আন্তর্জাতিকতাবোধ থেকে লালফৌজে যোগ দিয়েছিলেন। একদল ভারতীয়ও মধ্য এশিয়ায় লালফৌজের নেতৃত্বে সংগ্রাম করেছিলেন। এই বাস্তব ঘটনার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় ব্যথার দান গল্পের নায়ক সয়ফুল মূলক-এর বয়ানে ‘‘যা ভাবলুম তা আর হল কৈ? ঘুরতে ঘুরতে শেষে এই লালফৌজে যোগ দিলুম। এ পরদেশীকে তাদের দলে আসতে দেখে তারা উৎফুল্ল হয়েছে। মনে করছে, এদের স্থানে নিঃস্বার্থ ইচ্ছা বিশ্বের অন্তরে অন্তরে শক্তি সঞ্চয় করছে। আমায় আদর করে এদের দলে নিয়ে গিয়ে এরা বুঝিয়ে দিলে যে কত মহাপ্রাণতা আর পবিত্র নিঃস্বার্থ প্রণোদিত হয়ে তারা উৎপীড়িত বিশ্ববাসীর পক্ষ নিয়ে অত্যাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে এবং আমিও সেই মহান ব্যক্তি সঙ্ঘের একজন।’ ১৯২২ সালে ‘ব্যথার দান’ বই আকারে প্রকাশ হবার সময় মুজফ্ফর আহমদ লালফৌজ কথাটির পরিবর্তে মুক্তি সেবক সৈন্যদল কথাটি বসিয়েছিলেন বইটিকে ও লেখককে রাজরোষ থেকে রক্ষার জন্যে। (অসমাপ্ত...)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন