পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির ৩য় দিনে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল নেমেছিল। বৃষ্টি বাদলের দিনে পর্যাপ্ত পর্যটক আসবেন কি না, এনিয়ে ঈদের আগে খানিকটা ভাবিয়েছিল পর্যটন সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু না, গতকালের নির্মল আবহাওয়া কক্সবাজার সাগর সৈকতে চুম্বকের মত টেনে নিয়ে আসে হাজার হাজার পর্যটক। কক্সবাজারে বরাবরের মতই শান্ত রয়েছে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সামাজিক পরিবেশ। তাই বেড়ানোর জন্য কক্সবাজারেই কর্ম্পোট অনুভব করে থাকেন ভ্রমণ পিয়াসু পর্যটকরা।
পর্যটকদের স্বাগত জানাতে একদিকে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা যেমন মন উজাড়র করে আন্তরিকতা দিয়ে পর্যটকদের বরণ করে থাকেন। অন্যদিকে দেশী-বিদেশী হাজারো পর্যটকদের কাছে কক্সবাজার তথা দেশের সুনাম ধরে রাখতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সবসময় আন্তরিক ভূমিকা রেখে থাকেন। এবারের ঈদেও এর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে না। সৈকতের যে কোন পয়েন্টে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারী দেখা গেছে পর্যটকদের আশ্বস্থ করার মত। তবে হোটেল-মোটেল গুলোতে বন্ধ না থাকলেও রেষ্টুরেন্ট গুলো এখনো ব্যাপক আকারে খোলেনি। এতে করে পর্যটকদের খাওয়া-দাওয়ায় কষ্ট হচ্ছে বলেই জানাগেছে।
গতকাল সৈকতের লাবনী পয়েন্ট, সী ইন পয়েন্ট ও কলাতলীর সী ক্রাউন পয়েন্ট এবং হিমছড়ি পয়েন্টে ঘুরে দেখাগেছে সব বয়সী পর্যটকদের উন্মুক্ত বিচরণ, দৌড়ঝাঁপ ও সাগরে গোছল করে কক্সবাজার ভ্রমণের তৃপ্তি মেটাতে। আবছার ফয়সল ও সাইফুল তিনজনই একটি মাদরাসার ৯ম শ্রেণীর ছাত্র। তারা এসেছিল ছুটিতে কক্সবাজার সৈকতে বেড়াতে। ফুরফরে আবহাওয়ায় তাদের দৌড়ঝাঁপ ছিল দেখার মত। আবীর মুন্না ও মারুফ এসেছিল ঢাকা থেকে। তারা তিনজনই একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তারা রাতের গাড়িতে সকালে কক্সবাজার পৌঁছে সৈকতে খেলাধূলা করে, সাগরে গোছল করে ঢাকার ঘিঞ্জিভাব কাটিয়েছে। তাদের মতে কক্সবাজার এত সুন্দর যে, এখানে বারবার আসলেও আর্কষণ কমে না।
হাবিব দম্পতি এসেছিলেন ঢাকা থেকে। পেশায় তিন ব্যবসায়ী। জানালেন কক্সবাজার তিনি আরো এসেছেন। তারা দুপুরে বিমানে এসে রাত অবস্থান করে আবার (আজকের) ফ্লাইটে চলে যাবেন। তার মতে কক্সবাজারের আল্লাহ প্রদত্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ঘিরে আরো অনেক কিছু করার আছে পর্যটক আকর্ষণে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন (আমেরিকান নাগরিক) বিদেশী পর্যটক বলেন, আসলেই কক্সবাজার একটি সুন্দর এবং আকর্ষনীয় স্থান। বাংলাদেশের জন্য এটি অনেক বড় সম্পদ। কক্সবাজারের পর্যটনকে লালন করেই দেশের বড় রাজস্ব বাজেট অর্জন করা যেতে পারে। তিনি কক্সবাজারের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রশংসা করে বলেন, এখানকার প্রশাসন এবং জনগণ সত্যিই পর্যটন বান্ধব।
সৈকত বীচ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং সীবিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি কাসেম আলী জানান, কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা পর্যটক ও পর্যটন বান্ধব। দেশী বিদেশী পর্যটকদের আতিথেয়তা দিয়েই কক্সবাজারকে তারা প্রমোট করেছেন। বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি কক্সবাজারকে বিশ্বের কাছে আরো বেশী করে তুলে ধরার জন্য নানা ধরণের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।
কক্সবাজারের পর্যটন সম্পর্কে কক্সাবজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কর্ণেল অবঃ ফুরকান আহমদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের গুরুত্ব বিবেচনা করেই বিশ্বের অন্যতম আকর্ষনীয় পর্যটন শহর করার জন্য ‘কক্সাবজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ গঠন করেছেন। তিনি এলক্ষ্য বাস্তবায়নে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি নিঃসংকুচে কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য দেশী বিদেশী পর্যটকদের প্রতি আহবান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন