রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

মাধবপুরে হলুদ চাষে সফলতা

| প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, নোয়াপাড়া, ছাতিয়াইন ইউনিয়নে হলুদ চাষ করে সহস্রাধিক কৃষকের ভাগ্য বদল হয়েছে। এ বছর হলুদের ভাল ফলন ও চড়া দাম পাওয়ায় কৃষকরা সফলতার মুখ দেখছেন। আগে এসব এলাকার ভূমি পতিত পরে থাকত। এখন মসলা জাতীয় হলুদ চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপজেলার ছাতিয়াইন শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের রতনপুর উত্তর নোয়াপাড়া, সন্তোষপুর, ভবানীপুর, মির্জাপুর, বড়ধূলিয়া, গোয়াছনগর, সুরমা, বিশাল এলাকা জুড়ে হলুদের চাষাবাদ করা হয়েছে। গত বছর এসব এলাকায় সামান্য পরিসরে হলুদ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এ বছর কৃষকরা বেশি পরিমাণ জায়গায় হলুদ চাষ করেছে। স্থানীয় হলুদ চাষী ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উলে­খিত স্থানগুলো হলুদ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। জমিগুলো অপেক্ষাকৃত উচুঁ ভূমিতে হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সাধারণত পানি জমে না। পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি হলে হলুদ ক্ষেতের কোনো ক্ষতি হয় না। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় হলুদের ফলন হয়েছে বেশ ভাল। কৃষকরা জানান, হলুদ ক্ষেতে সাধারণত কোনো পোকায় আক্রমন করে না। হলুদ গাছের পাতা তেতো হওয়ায় হলুদ গাছে পোকা বসে না। এ কারণে হলুদে কোনো কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। রতনপুর গ্রামের কৃষক শহীদ মিয়া জানান, এ এলাকায় তিনি সর্ব প্রথম হলুদের চাষ শুরু করেন। গত বছর তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে হলুদ চাষ করে প্রায় ২ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে হলুদের চাষ করে আসছেন। চলতি বছরেও তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে হলুদ চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার টাকা। যে ফলন হয়েছে তাতে আড়াই লক্ষ টাকার বিক্রয় আসবে বলে জানান তিনি। ইটাখোলা গ্রামের সোহেল মিয়া জানান, মসলা চাষের জন্য সরকার ঋণ দেওয়ার ঘোষনা দিলেও এ এলাকার কৃষকরা এ জাতীয় কোনো ঋণ পায়নি। তিনি জানান, কৃষকদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ঋণ সুবিধা ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করলে কৃষকরা ব্যাপক আকারে হলুদ চাষ করতে পারত। কৃষকরা জানান, হলুদ প্রক্রিয়া ও গুদাম জাত করণের ব্যবস্থা না থাকায় জমি থেকে উত্তোলনের পরেই কৃষকরা বাধ্য হয়ে হলুদ বিক্রি করে দিতে হয়। স্থানীয়ভাবে হলুদ প্রক্রিয়াজাত করণের কোনো যন্ত্র পাতি না থাকায় উত্তোলনের মৌসুমে কাচা হলুদ বিক্রি করে দিতে হয়। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে মাধবপুরে উৎপাদিত হলুদ বিদেশে রপ্তানি করা যেত। এখন পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে হলুদ আমদানি করতে হয়। এছাড়া ভোক্তারা অনেক দাম দিয়ে শুকনো হলুদ কিনতে হয়। নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ আলমগীর জানান, মাধবপুর উপজেলায় শতশত একর জমি পতিত পড়ে থাকে। এসব জমিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হলুদ চাষ করা হলে বিদেশ থেকে মসলা জাতীয় ফসল হলুদ আমদানি হ্রাস পেত। মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিকুল হক জানান, এ বছর মাধবপুরে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ জায়গায় হলুদ চাষ করা হয়েছে। এ ফসলের চাষাবাদ ব্যাপক আকারে করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পরামর্শ ও সহযোগীতা করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন