তানোর (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজশাহীর তানোরে দুটি এতিমখানায় ভুয়া এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা আতœসাৎ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এতিমের টাকা আতœসাতের খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
জানা গেছে, বিগত ১৯৮৬ সালে তানোর পৌর এলাকার চাপড়া গ্রামে চাপড়া শিশু সদন নামে একটি এতিমখানা প্রতিষ্ঠিত করা হয় এবং ১৯৯১ সালে নিবন্ধিত হয়। অপরদিকে ১৯৮৮ সালে তানোর পৌর এলাকার সিন্দুকাই গ্রামে ‘ইসলাহিয়া শিশু সদন’ নামে একটি এতিমখানা প্রতিষ্ঠিত করা হয় এবং ১৯৯৯ সালে এটি নিবন্ধিত হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, চাপড়া শিশু সদনের নিজস্ব সম্পদ, অনুদান, যাকাত ও ফিতরা ইত্যাদি থেকে বছরে আয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা এবং এসব থেকে ইসলাহিয়া শিশু সদনের আয় প্রায় ৪০ লাখ টাকা। কিন্তু তার পরেও ভুয়া এতিমের নাম ব্যবহার করে সরকারি অনুদানের টাকা ও বিভিন্ন উৎস্য থেকে আয়ের সিংহভাগ টাকা তারা আতœসাৎ করে চলেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নীতিমালা অনুযায়ী এতিমখানায় সরকার যে সংখ্যক এতিমের অনুদান দিবে তার দ্বিগুন পরিমাণ এতিম থাকা বাধ্যতামূলক এবং এতিমদের মাধা পিছু সরকার প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে অর্থ বরাদ্দ করেছে। সূত্র জানায়, চাপড়া শিশু সদনে মোট ৫৮ জন এতিম দেখিয়ে প্রতি মাসে ২৮ জন এতিমের নামে ২৮ হাজার টাকা সরকারি অনুদান উত্তোলন করা হয়। অথচ সেখানে এতিম রয়েছে মাত্র ৯ জন। অন্যদিকে ইসলাহিয়া শিশু সদনে ৫৭ জন এতিম দেখিয়ে প্রতি মাসে ২৭ জন এতিমের নামে ২৭ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। অথচ সেখানে মাত্র ৭ জন এতিম রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মতিনুর রহমান বলেন, চাপড়া ও ইসলাহিয়া এতিমখানায় ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতি হয় এবং তারা ভুয়া এতিম দেখিয়ে বছরের পর বছর সরকারি অনুদানের টাকা আতœসাৎ করে আসছে। তিনি বলেন, এসব এতিমখানা পরিদর্শনে গিয়ে তাদের দেয়া এতিমের তালিকা অনুযায়ী এতিমদের সেখানে পাওয়া যায়নি তাই গত তিন মাস থেকে তাদের সরকারি অনুদানের টাকা বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনে এতিমের টাকা আতœসাতকারিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদুক) মামলা করা হবে। এব্যাপারে ইসলাহিয়া এতিমখানার সুপার দুরুল হুদা বলেন, তিনি শুধু হুকুমের গোলাম সবকিছু দেখভাল করেন সভাপতি মকছেদ আলী। তবে তিনি বলেন, এলাকায় এতিমের সংখ্যা একেবারে নগন্য যে কারণে প্রয়োজনীয় এতিম পাওয়া যায় না। এব্যাপারে চাপড়া শিশু সদনের সুপার সুলতান আহম্মেদ বলেন, এলাকায় তেমন কোনো এতিম না থাকায় এতিমের সংখ্যা কম। তিনি বলেন, এতিমখানার সব কিছু দেখভাল করেন সভাপতি আনসার আলী তাঁর করনীয় কিছু নাই। এব্যাপারে সভাপতি আনসার আলীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন