বরুড়া (কুমিল্লা) থেকে মোঃ আবুল হাসেম : কুমিল্লার বরুড়ায় আখের বাজার জমে ওঠছে। বরুড়া বাজারে প্রতিদিন ভোর থেকে আখ চাষীরা তাদের উৎপাদিত রসালো উন্নত মানের আখ বিক্রয়ের জন্য নিয়ে আসে। স্বল্প সময়ের মধ্যে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা কিনে নিয়ে স্থানীয় হাট-বাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশি লাভের আশাই চালান করছে। কুমিল্লা জেলায় চিনি কল না থাকলেও শুধুমাত্র আখের রস সেবনের জন্যই এর কদর অনেক বেশি। কিশোর-কিশোরীসহ সব বয়সের মানুষের অতীব পছন্দনীয় এই রসালো মিষ্টি আখ লাভজনক হওয়ায় স্থানীয় চাষীরা আখ চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠছে এবং এর চাষ দিন দিন বেড়েই চলেছে। বেচা-কিনা ভাল হওয়ায় লাভের পরিমাণ বেশি হাতে পাওয়ায় চাষিরাও বেজায় খুশি।
জানা যায়, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের এলাকা ভেদে কম বেশি আখ চাষ বছরের জুন হতে নভেস্বর মাস পর্যন্ত জমি হতে আখ কেটে বিক্রয় করার মৌসুম। আর এই সময়ে প্রতিদিন ভোর হতে বিকাল ৪ টা পযর্ন্ত উপজেলার বরুড়ার আখের বাজারে চলে জমজমাট বেচা-কিনা। খুচরা আখ ব্যবসায়ীরা বছরের এই সময়ে প্রায় ছয় মাস জমজমাট ব্যবসা করলেও বছরের অন্য সময়ে শুষ্ক মৌসুমে কৃষি কাজ করে জীবন-যাপন করেন। খুচরাভাবে আখ বিক্রয়ে দ্বিগুন লাভ হওয়াই বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ এই ব্যবসা করছেন।
বাজারে পাইকারি হিসেবে ভাল মানের এক জোরা আখ ৫০ টাকা করে ক্রয় করা হলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা এক জোড়া ভালমানের আখ ১০০-১২০ টাকায় বিক্রয় করছে। প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় বড় পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা আখ কিনে স্থানীয় হাট-বাজার ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশি লাভের আশাই চালান করছে এই এলাকার সুস্বাদু রসালো আখ।
উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের তালুকপাড়া গ্রামের মৌসুমী আখ ব্যবসায়ী মরহুম এবাদ উল্লার ছেলে সোহেল জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবারো আখ চাষ করেছেন। এর মধ্যে ১৩ শতাংশ জমির আখ বিক্রি করেছে ৬২ হাজার টাকার দামে। প্রতিটি শলাকার দাম পড়েছে ২৫ টাকা। এতে তিনি খুব খুশি, চাহিদার চেয়ে দিগুন দাম পেয়েছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। এাছাড়া তালুকপাড়া গ্রামের আরেক কৃষক ভাই মেহের আলী ৯ শতাংশ জমির আখ ৩৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
বরুড়া বাজারের আখ ব্যবসায়ী দেলোওয়ার মিয়া জানান, তিনি প্রতি বছরই এই সময় বরুড়ার পাইকারি বাজার থেকে আখ কিনে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করেন। এতে তার প্রতিদিন ভালই লাভ হয়। এখানকার আখগুলো ভাল মানের হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা আখ কিনতে আসে। কাক ডাকা ভোর থেকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা আখ বিক্রয়ের জন্য এখানে নিয়ে আসে। আবার অনেকেই জমিতে রেখেই বিক্রি করছেন আখ।
বরুড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ তারিকুল ইসলাম মাহমুদ জানান, এ বছর প্রায় ১২০ জন কৃষককে আখ চাষের উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন