শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

পুরোদমে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আ.লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা

রাজবাড়ী-১ আসনের রাজনীতি

| প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাজবাড়ী থেকে নজরুল ইসলাম : রাজবাড়ী-১ (সদর ও গোয়ালন্দ) আসনে দলীয় মনোনয়নের জন্য আওয়ামী লীগ অন্তত ছয় সম্ভাব্য প্রার্থী নিজেদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগীতা শুরু করেছেন। তাদের কেউ কেউ নিজস্ব বলয়ে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে চাঙ্গা ভাব তৈরী হয়েছে। বিএনপি একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে চায় না।
চলছে নানা হিসাব নিকাশ। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ঈদের পূর্বে পুরোদমে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এ আসনে দশম সংসদ নির্বাচনে কোন প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ কাজী কেরামত আলী। অবহেলিত এ এলাকায় উন্নয়ন মূলক কাজে ভূমিকা রেখে অবস্থান তৈরী করেছেন। নিয়মিত মাঠের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। গোয়ালন্দ মোড় থেকে পাংশা শিয়ালডাঙি মোড় পযর্ন্ত ৪৫ কিঃ মিঃ রাস্তা ৩শ ৯৫ কোটি টাকা, দৌলতদিয়া ঘাট ও রাজবাড়ী শহর রক্ষা প্রকল্পে ৩শ ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ এবং রাজবাড়ী ফরিদপুর বন্ধ হয়ে যাওয়া রেল লাইন পুনরায় চালু করা তার বিশেষ উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের প্রতিশ্রুতি। তার পিতা মরহুম কাজী হেদায়েত হোসেন গণপরিষদের সদস্য ও গোয়ালন্দ মোহকুমার আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৫ সনের ১৮ আগস্ট চিহিৃত দুর্বৃত্তদের গুলিতে রাজবাড়ীতে কাজী হেদায়েত হোসেন নিহত হন। তার জনপ্রিয়তার জের ধরে কাজী কেরামত আলী এ পর্যন্ত ৪ বার এমপি নির্বাচিত হন। অন্যান্য মনোনয়ন প্রার্থীরা হচ্ছেন, তার ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক কাজী এরাদত আলী। বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ এর সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আকবর আলী মর্জি। তিনি জানান, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান শহীদ হওয়ার পর রাজবাড়ীতে আওয়ামী লীগের দুর্দিনে তিনি দলের নেতা কর্মীদের পাশে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে তিনি ২২ মাস কারাগারে আটক ছিলেন। সংরক্ষিত আসন-৩৮ এর এমপি কামরুন্নাহার চৌধুরী লাভলী। তিনি এবার স্বামী মুহাম্মাদ আলী চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে হজ পালন করেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যতকারে জানান, বরাট উচ্চ বিদ্যালয়কে কলেজে উন্নত করা হয়েছে। তিনি রাজবাড়ী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র শেখ মোঃ নিজাম তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি শিল্পপতি হওয়ায় ৮/১০ হাজার রিজার্ভ ভোট রয়েছে তার। প্রতিদিনই নদী ভাঙা, শিক্ষার্থীদের বই খাতা ক্রয়ের জন্য নিয়মিত আর্থিক অনুদান দিচ্ছেন। তার মায়ের নামে রয়েছে রাবেয়া ইদ্রিস মহিলা ডিগ্রি কলেজ। তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিবর্গ ও মন্ত্রী পর্যায়ের লোকজনের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। জানা যায়, তিনি একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর আর্শিবাদে রয়েছেন। মাত্র ২৫ বছর ৩ মাস বয়সে গোয়ালন্দ পৌর সভায় স্বতন্ত্র পদে ২০০২ সালে মেয়র নির্বাচিত হন। এ পর্যন্ত পর পর ৩ বার স্বতন্ত্রভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়ে গত বছর শিল্পপতি শেখ নিজাম বিপুল সংখ্যক জনগন নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তিনি দৌলতদিয়-পাটুরিয়া ২য় পদ্মা সেতু নির্মাণের স্বপ্ন দেখছেন। অপরদিকে বিএনপির রাজবাড়ী জেলা কমিটির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মোঃ খৈয়ম, রাজবাড়ী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ এড. এম এ খালেক, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এড. মোঃ আসলাম মিয়া। তিনি দলীয় কর্মসূচীতে রাজপথে নেতা ও কর্মীদের সাথে সবসময় এড. আসলামের দেখা যায়। তিনি দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচীতে স্থানীয় নেতা কমীদের নিয়ে মাঠে থাকায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে।
ঢাকা কলেজের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান গাজী মানিক। রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া। এড. এম এ খালেক জানান, ওয়ান ইলিভেন এর সময় দলের সাথে বেইমানীকারীদের মনোনয়ন তিনি মেনে নিবেন না। এড. আসলাম মিয়া জানান, সংস্কারপন্থীদের দলের মনোনয়ন দিলে তিনি মেনে নিবেন না। তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া জানান, বিএনপির সংস্কারপন্থীদের মনোনয়ন দেয়া হলে দলের ভরাডুবি হবে। অধিকাংশ জেলা পর্যাযের নেতাই আগামী নির্বাচনে সংস্কার পন্থিদের বিরুদ্ধে রয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সভাপতি আলী নেওয়াজ মোঃ খৈয়ম জানান, নির্বাচনের পূর্বে দলের মধ্যে কিছু ভুলবুঝাবুঝির উদ্ভব হলে তা নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা করে নেয়া হবে। রাজবাড়ী-১ আসনে অন্য কোন দলের হেভী ওয়েটের কোন প্রার্থী না থাকায় প্রধান দুই দলের মধ্যে নির্বাচন হবে হাড্ডাহাড্ডি লাড়াই হবে। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট যুদ্ধে ছাড় দিতে চায় না বিএনপি

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন