লালপুর (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা : এখন শরৎ কাল মাঠের সবুজ ঘাসে শীতের আগমনি বার্তা মেলেনি তবে আর ক’টা দিন পরে শীত নামবে এমন প্রত্যাশায় নাটোরের লালপুর উপজেলায় খেজুরের রস সংগ্রহের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে গাছ ঝোড়ার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এই অঞ্চলের গাছিরা ।
উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রতিটি এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার দুই ধারে, মাঠে-প্রান্তরে অবহেলায় অযতেœ প্রাকৃতির নিয়মে বেড়ে ওঠা এই খেজুরের গাছের কদর এখন বেশ ভালো। আর ১০-১৫ দিনের মধ্যেই উপজেলার সকল এলাকার খেজুর গাছ ঝোড়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে। আশ্বিন মাসের মাঝা মাঝি সময়ে পুরোপুরি ভাবে গাছ হতে রস সংগ্রহ শুরু হবে। চলতি বছরে প্রতিটি খেজুরের গাছ ৩০০/৪০০শত টাকা করে গাছের মালিককে দিয়ে ৬ মাসের জন্য লিজ নিচ্ছেন এলাকার গাছিরা। তারা শুধু শীতের মৌসুমে এই খেজুরের গাছ হতে রস সংগ্রহ করবে বলে। লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া বাজারের আনাচে কানাচে জমে উঠেছে এই খেজুর গাছ লিজ নেয়ার কাজ। এ ব্যাপারে গাছের মালিকের কোন মাথা ব্যথা না থকলেও আছে গাছিদের। গাছের ঠিকঠাক খবর নিয়ে সন্ধ্যা হলেই মালিকের নিকট হাজির হয়ে যাচ্ছে তারা। আবার কেউ কেউ এক বছর আগেই একটু কম বা বেশি দামেই আগাম গাছ লিজ নিয়েছে আর সেই সকল গাছেই চলছে আগাম রস সংগ্রহের প্রস্তুতি হিসেবে গাছ ঝোড়া। দেশের উত্তর জনপদের নাটোরের লালপুর উপজেলার খেজুর গুড়ের আছে ব্যাপক প্রসিদ্ধ। এ ব্যাপারে উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের গাছিদের সঙ্গে কথা বললে মুনির, বাবলু, তয়জাল বলেন, ‘খেজুর গাছ হতে আগাম রস সংগ্রহের জন্য আমরা গাছ ঝুড়ছি আর কিছু দিন পর থেকেই রস সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। তবে আমাদের এলাকাতে এ বছর বেশ কিছু খেজুর গাছ কেটে ইট ভাটাতে দেয়া হয়েছে যে কারণে দিন দিন এই মূল্যবান সম্পদ এই অঞ্চল হতে বিলুপ্ত হতে চলেছে। এ খাতে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ অঞ্চলের জনসাধারণ অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হবে’। তারা জানান কিছু অসাধু লোক তাদের স্বার্থসিদ্ধির আশায় খেজুর গুড়ের নামে (সুগার মিলের চিটা গুড়, চিনি, ময়দা, রং, হাইড্রোজ, ফিটকিরি দিয়ে) দোজালির ভেজাল গুড় তৈরী করে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছে যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। সে সাথে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এ শিল্প। সরকারের মাধ্যমে এসব অসৎ লোকদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ঐতিহ্যবাহি খেজুর গুড়ের সুনাম ও খ্যাতি অটুট থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন