বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বিজয় মেলার নামে চলছে হাউজি জুয়া, লাকি কুপন ও অশ্লীল নৃত্য

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য, এসএসসি পরীক্ষার্থীরা বিপাকে

প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা : স্কুল অথবা কলেজ মাঠে কোন মেলার আয়োজন করা যাবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশনা অমান্য করে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ভাঙিয়ে জেলার বালিয়াকান্দি এবং কালুখালী উপজেলা শহরে পুরোদমে চলছে ‘বিজয়’ মেলা। আর ওই মেলা আয়োজনের ফলে বিকাল থেকে গভীর রাত অবধি উচ্চ স্বরের মাইকের শব্দে এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় পড়–য়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় চরম বিঘœ সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পরেছেন এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে ওই পরীক্ষা। তবে অধিক শব্দের কারণে তাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ঘটছে বিঘœ। স্থানীয় অভিভাবকরা বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষেকে জানালেও হচ্ছে না কোন সমাধান। যদিও গত রোববার রাতে বালিয়াকান্দিতে সার্কাস ব্যতিত অনুমোদনের বাইরে থাকা লাকি কুপন, হাউজিসহ অন্যান্য জুয়া বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি কালীন সময় জানুয়ারি মাসে এসে জেলা প্রশাসন জেলার বালিয়াকান্দি কলেজ এবং কালুখালীর রতনদিয়া রজনীকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় ও রতনদিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ওই মেলার অনুমোদন প্রদান করেন। মেলা দু’টি অনুমোদন  দেয়া হয় বালিয়াকান্দি ও কালুখালী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নামে। তবে খাতা-কলমে তারা থাকলেও মূলত কালুখালীর মেলা পরিচালনা করছেন ওই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম এবং বালিয়াকান্দির মেলা পরিচালনা করছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুর আহম্মেদ আল মাসুদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা। যদিও মেলাগুলোতে জেলা প্রশাসক শুধুমাত্র সার্কাস চলার অনুমোদন দিয়েছেন। তবে আয়োজকরা সেটি মানছেন না, তারা অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিতে লাকি কুপন, হাউজিসহ নানা ধরনের জুয়া এবং সার্কাসের নামে অশ্লিল নৃত্যের আয়োজন করেছেন। কালুখালী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আকামত আলী জানান, খাতা-কলমে তারা মেলার আয়োজক হলেও পুরোটাই দেখভাল করছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তারা উপজেলার সোনাপুর মোড়ে একটি ‘বিজয় স্তম্ভ’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। মূলত এ মেলার আয় থেকে কিছু টাকা ‘বিজয় স্তম্ভ’ নির্মাণের জন্য দেয়া হবে। তবে জুয়ার টাকায় ‘বিজয় স্তম্ভ’ নির্মাণের বিষয় সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তার একটাই কথা “সব জানে সাইফুল চেয়ারম্যান”। রতনদিয়া রজনীকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী জানান, এ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হলো কালুখালী উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম। ফলে বিদ্যালয় মাঠে মেলার আয়োজন ওই চেয়ারম্যানই করেছেন। রতনদিয়া রজনীকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটো জানান, এখানে মেলার নামে অশ্লিল নৃত্য, র‌্যাফেল ড্র’র নামে হাউজি ও লাকি কুপনের মত জুয়া প্রকাশ্য পরিচালনা করা হচ্ছে। উচ্চ স্বরে মাইক বাজানোর ফলে দু’টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি চরম ভাবে বিঘœ হচ্ছে। একই সাথে এলাকাবাসীর ঘুমের ব্যাঘাতও হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি তিনি কালুখালী থানা পুলিশকে অবহিত করেছেন। অথচ থানার পেছনের মাঠে ওই কা- হলেও পুলিশ কোন কর্নপাত করছে না। কালুখালী থানার ওসি নুরে আলম ফকির জানান, এ মেলায় লাকি কুপন, হাউজি ও সার্কাস চলছে। তবে জেলা প্রশাসন শুধুমাত্র সার্কাসের অনুমোদন দিয়েছে। সার্কাসে কোন অশ্লীল নৃত্য চলছে না। মাঝে মধ্যে আয়োজকরা দ্বিতীয় শ্রেণির নায়িকাদের মঞ্চে আনছে। তার মতে মেলার কারণে বিদ্যালয় দু’টি শিক্ষার্থী এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কোন সমস্যা হচ্ছে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন