শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ফেনীতে তাকিয়াবাড়ি প্রাইমারি স্কুলের জরাজীর্ণ ভবনে চলছে ঝুঁকিপূর্ণ পাঠদান

| প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো ওমর ফারুক, ফেনী থেকে : ফেনী শহরের শাহ সৈয়দ আমীর উদ্দীন প্রকাশ পাগলা মিয়ার তাকিয়া সংলগ্ন অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপিঠ তাকিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা গেছে, ওই এলাকার কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির প্রচেষ্টায় ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্কুলটি। সে সময় বেড়ার ঘরে স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয় পাঠদান কার্যক্রম। প্রতিষ্ঠার সময় বিদ্যালয়ের জায়গার পরিমাণ ছিল ৩০ শতক। কিন্তু কালক্রমে তা বিভিন্নভাবে দখল হয়ে বর্তমানে মাত্র ৬.২৫ শতকে এসে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে একমাত্র টিনশেড ভবনে কাদা আর পানিতে ভিজে বৃষ্টিতে ক্লাস করতে হয় শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকরা নানা প্রতিক‚লতা উপেক্ষা করে নিয়মিত ক্লাসে হাজির হন। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ও স্কুলভবনের ফ্লোর থেকে চারপাশের এলাকা উঁচু হওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টিতে শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়ে। ফলে পানিতে ডুবে যায় শ্রেণিকক্ষ।
প্রধান শিক্ষিকা ও শিক্ষকরা জানান, একমাত্র জরাজীর্ণ টিনশেড ভবনটি ভেঙে একটি নতুন বহুতল ভবন করার জন্য সদর আসনের এমপি নিজাম হাজারী, পৌরমেয়র হাজী আলাউদ্দীন ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকমকে বহুবার বলা হয়েছে। উল্লিখিত ব্যক্তিরা এ ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে গেলেও অদ্যাবধি ভবন নির্মাণের ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি এলজিইডি।
স্কুলের ভবন না থাকায় শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটের কারণে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের দুই শিফটে ভাগ করে পাঠদান চলছে। প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র চারটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। তাও আবার ভাঙাচোরা। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে এসে ভাঙাচোরা ভবনে বিভিন্ন প্রতিক‚লতার শিকার হচ্ছে।
তাহমিনা নামের এক ছাত্রী জানায়, তাদের শ্রেণিকক্ষে বর্ষাকালে পানি ঢুকে পড়ে। এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষ না থাকায় গাদাগাদি করে একটি টেবিলে ৭-৮ জন করে বসতে হয়। এতে পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ দেয়া যায় না বলে জানায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী।
প্রধান শিক্ষিকা কাজী মমতাজ বেগম বলেন, জরুরিভিত্তিতে ভবন নির্মাণ কাজ না করলে টিনশেড ভবনটি ধসে পড়ে যে কোনো সময় প্রাণহানী ঘটতে পারে। এদিকে স্কুল সংলগ্ন রোডে হলুদ মরিচের সারি সারি দোকান থেকে মেশিনের উগ্র শব্দে যেমন পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে, তেমনি হলুদ-মরিচ ও মসলার ঝাঁঝ নাকে-চোখে পড়ে চোখ জ্বালা-পোড়া হয়। দোকানগুলো এখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিলে উপকার হবে বলে তিনি জানান।
তাকিয় বাড়ি স্কুলের জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে জানতে ফেনী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে জেলার সকল প্রাইমারি স্কুলের তথ্য দিতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ সম্পর্কিত একটি ওয়েবসাইটও খোলা হয়েছে। সে হিসেবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় কাজ করবেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মানিক বলেন,ভবন নির্মাণের বিষয়ে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নুরুল আফছার নামের এক ব্যক্তির মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ভবন নির্মাণ ও স্কুলের যাবতীয় কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন