শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ঝিনাইদহ স্বাস্থ্য বিভাগের চার নারী চিকিৎসক লাপাত্তা!

| প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঝিনাইদহ থেকে মোস্তফা মাজেদ : ঝিনাইদহ জেলাব্যাপী চিকিৎসা সঙ্কটের মধ্যে চার জন নারী চিকিৎসক ছুটি নিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারছে না ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস। তবে আশঙ্কা, ছুটি নিয়ে তারা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। দফায় দফায় তাদের চিঠি দিয়েও তারা কর্মস্থলে যোগদান করছেন না। খোঁজ না পাওয়া চিকিৎসকরা হলেন- ডা: শানজিনা ইয়াসমিন শম্পা, শাহানারা সুলতানা, মুনিরা শারমিন ও সাদিয়া আফরিন মুন্না।
তথ্যানুসন্ধান করে জানা গেছে, ডা: শানজিদা ইয়াসমিন শম্পা ছুটি নিয়ে ২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট থেকে লাপাত্তা। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার চরকালীদাসপুর (সুতাইল চর) গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল মান্নান। সিভিল সার্জনের দপ্তর থেকে দফায় দফায় ডাকযোগে তার স্থায়ী ঠিকানায় চিঠি পাঠানো হচ্ছে, কিন্তু কর্মস্থলে যোগদানে কোনো সাড়া নেই। একইভাবে সহকারী সার্জন ডা: শাহানারা সুলতানা ২০০৯ সালের ২ মে থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। কোটচাঁদপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা: মুনিরা শারমীন ২০১২ সালের ১৭ জুন থেকে এবং হরিনাকুন্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা: সাদিয়া আফরিন মুন্না ২০১৪ সালের ২৫ মে থেকে কর্মস্থলে আসছেন না। ছুটির পর নিখোঁজ চারজন নারী ডাক্তার বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন বলে ধারণা করছে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস। তবে তারা কোন দেশে আছেন এবং কি করছেন তা জানেন না সিভিল সার্জন ডা: রাশেদা সুলতানা। তিনি জানান, চিকিৎসা সঙ্কটের মধ্যে এই চার নারী চিকিৎসক কর্মস্থলে যোগদান না করায় সেবা ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, আমলাতান্ত্রিক কিছু জটিলতার কারণে এই সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ছুটি নিয়ে নিখোঁজ চার নারী চিকিৎসককে কাজে যোগ দিতে বারবার চিঠি দেয়া হচ্ছে, কিন্তু তারা সাড়া দিচ্ছে না। তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, এ জেলায় প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ রয়েছে এক হাজার ১২৪টি। এর মধ্যে শূন্য পদের সংখ্যা ৩৫৭টি। ২১০ জন ডাক্তারের পদ রয়েছে। তদস্থলে কর্মরত আছেন মাত্র ৭৭ জন। ১৩৩ জন ডাক্তারের পদ শূন্য। সিভিল সার্জনের দপ্তরে দীর্ঘদিন জেলা স্বাস্থ্য তত্ত¡¡াবধায়ক নেই। নেই ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ডাক্তার। নার্সিং সুপারভাইজার দুইজন এবং সিনিয়র স্টাফ নার্সের ১১টি পদ শূন্য। সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট চক্ষু ও সিনিয়র কনসালটেন্ট শিশু পদে বছরের পর বছর কোনো ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। একই হাসপাতালে জুনিয়ার কসসালটেন্ট রেডিওলজি ও প্যাথলজির কোনো ডাক্তার নেই। সদর হাসপাতালে জুনিয়র কনসালটেন্ট অ্যানেসথেশিয়া পদটি বছরের পর বছর শূন্য। তিনি আরো জানান, ঝিনাইদহ জেলায় পাঁচটি আধুনিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। এর মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ ছয়জন, হরিনাকুন্ডু সাতজন, শৈলকুপায় পাঁচজন, কোটচাঁদপুরে পাঁচজন এবং ভারত সীমান্ত সংলগ্ন মহেশপুর উপজেলায় মাত্র তিনজন চিকিৎসক রয়েছেন। ঝিনাইদহ জেলায় ১৩টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (সাব-সেন্টার) ১১টিতে কোনো ডাক্তার নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন