শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও প্রতিহিংসামুলক -রিজভী প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ কাল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির ঘটনা সম্পূর্ণরুপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও প্রতিহিংসামূলক বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দেশে সরকারের সৃষ্ট বিভেদ-বিভাজনের রাজনীতিকে আরো তীব্রতর করা হলো। বিএনপি চেয়ারপার্সনকে মানসিকভাবে দুর্বল করতে সরকারের এহেন প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে বলেও মনে করেন তিনি। গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আগামীকাল সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে দলটি। গতকাল (সোমাবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, দেশবাসী জানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে, তিনি এখনও লন্ডনে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা শেষে তিনি যথাসময়ে দেশে ফিরবেন। তাঁর ফেরার সময়ও প্রায় আসন্ন। আর ঠিক এই মূহুর্তে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির ঘটনা সম্পূর্ণরুপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও প্রতিহিংসামূলক। কুমিল্লার জেলা জজ আদালতে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধান বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থের মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসে শেখ হাসিনা বলেছিলেন-‘বিএনপি’র সঙ্গে আর কোন সংলাপ বা সমঝোতা হবে না’। শেখ হাসিনার ঐ বক্তব্যের মাঝেই চরম আক্রোশের একটা পূর্বাভাস ছিল। এখন তিনি দেশে ফিরে বিরোধীদল শূণ্য বাংলাদেশ বানানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ওপর সরকারের যে সন্ত্রাসী আক্রমণ তার প্রথম নমূনা আজ আমরা বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে প্রত্যক্ষ করলাম। নিম্ন আদালতকে কব্জায় নেয়ার পর এখন গায়ের জোরে সর্বোচ্চ আদালতকে ক্রমান্বয়ে নিয়ন্ত্রণে নিতে সরকার সকল ধরণের নীলনকশা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, পরিকল্পিতভাবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে একক নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রব্যবস্থাকে কায়েম নিশ্চিত করতে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলোকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে সরকার তা নিশ্চিহ্ন করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। সেই লক্ষ্য পূরণে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বাধীন স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত সর্বোচ্চ আদালতকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে কব্জায় নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। আমরা সম্প্রতি পাশবিক কায়দায় সর্বোচ্চ আদালত ধ্বংসের ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করছি। ক’দিন ধরে সর্বোচ্চ আদালতের ওপর সরকারের বেপরোয়া আস্ফালনে দেশবাসী বিমূঢ় ও বিস্ময়ে হতবাক। এখন সেই আস্ফালনে উৎসাহিত হয়ে সরকার বিএনপি চেয়ারপার্সনসহ জাতীয়তাবাদী শক্তির ওপর আক্রমণ শুরু করেছে। যার প্রথম বহি:প্রকাশ হলো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যেকোন ষড়যন্ত্র ও কুটকৌশলের মাধ্যমে তাঁকে হেনস্তার সকল অপচেষ্টা রুখে দিবে। বেগম খালেদা জিয়া ক্রান্তিকালে দেশ ও জনগণের সাথে সবসময় পাশে থেকেছেন। বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে সরকারের কোন অশুভ পরিকল্পনা সফল হবে না। তিনি বিএনপি’র পক্ষ থেকে চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। একই সাথে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আগামীকাল ঢাকা মহানগরীসহ দেশব্যাপী বিএনপি’র উদ্যোগে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দুই বছর আগে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে আটজন পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলায় গতকাল কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ আদালত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এদিকে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আজ সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ এবং ছাত্রদল আজ এবং আগামীকাল উপজেলা, পৌরসভা ও কলেজে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সংবাদের পর মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, এসএম জিলানীসহ নেতাকর্মীরা আলাদা আলাদাভাবে নয়া পল্টনের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন