শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

নাগরিক হিসাব-নিকাশে পিছিয়ে বর্তমান এমপি জোট-মহাজোটে নতুন মুখের পাল্লা ভারী

যশোর-৫ : মনিরামপুরে বইছে নির্বাচনী হাওয়া

| প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিজানুর রহমান তোতা : দেশের বৃহত্তম উপজেলা যশোরের মনিরামপুর। উপজেলাটি নিয়ে সংসদীয় আসন যশোর-৫। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান এজেন্ডা। সবাই নির্বাচনী মাঠ গুছাতে ব্যতিব্যস্ত। রাজনীতি সচেতন মানুষও নির্বাচন নিয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা, পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতি করছে নির্বাচনকেন্দ্রিক। সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্নপন্থায় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগসহ যেসব কর্মকান্ড করছে তা মূলত নির্বাচনকে ঘিরেই। রাজনৈতিক দলের নেতা ও কর্মীরাও বর্তমানে আগের চেয়ে অতিমাত্রায় চাঙা। নির্বাচন উপলক্ষে নেতাদের পেছনে কর্মী সংখ্যাও বেড়ে গেছে। বিশেষ করে সম্ভাব্য নতুর মুখের প্রার্থীদের পেছনে কর্মীদের পাল্লা ভারী দেখা যাচ্ছে। যখন সম্ভাব্য নতুন প্রার্থী কোনো অনুষ্ঠানে কিংবা ঘুরতে যাচ্ছেন তাদের পেছনে লম্বা লাইন পড়ছে কর্মীদের। এলাকার মুরুব্বিদের সঙ্গে সাক্ষাত হলে তারা বলছেন, পুরনোদের তো দেখলেন, এবার নতুনদের সুযোগ দিয়ে দেখেন।
এখানকার ১৭টি ইউনিয়নে প্রায় তিন লাখ ভোটার ও ছয় লাখ জনসংখ্যার এলাকাটির উন্নয়ন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেনি আওয়ামী লীগসহ মহাজোট। বিশাল জনগোষ্ঠীর আশা পূরণ হয়নি। চারিদিকে এ কথাটিই জোরালো উচ্চারিত হচ্ছে। কী চেয়েছিলাম, আর কী পেলাম তা নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ। আসনটি আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে একতরফা নির্বাচনে স্বপন ভট্টাচার্য এমপি হয়ে জনগণের আশা পূরণ করতে পারেননি। তার সুযোগ ছিল জনপ্রিয়তা অর্জনের। কিন্তু যে কোনো কারণে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এবার মনোনয়ন পাবেন কি পাবেন সেই প্রশ্নের চেয়ে একই ঘরে দুই ভাই এক ভাই এমপি আরেক ভাই আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। স্বপন ভট্টাচার্য জনকল্যাণে কর্তব্যবোধের চেয়ে নিজের দিকেই সবচেয়ে বেশি মনোযোগী ছিলেন বলে অভিযোগ। নির্বাচনী অঙ্গিকার পূরণ না হওয়ায় প্রবলভাবে জনমনে আঘাত হেনেছে। মহাজোটের শরিক দল হিসেবে নির্বাচনের পর কোনো কাজেকর্মে পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা কেউ অনুভব করেনি। এই আসনটিতে বারবার নির্বাচিত হন খান টিপু সুলতান। তার মৃত্যুর পর তার অনুসারীরা নতুন নেতৃত্ব খুঁজছেন। কারণ স্বপন ভট্টাচার্যকে তারা পছন্দ করেন না। এই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে সাবেক ছাত্রনেতা আওয়ামী লীগের কামরুল হাসান বারী। তিনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তার আশা তিনি মনোনয়ন পাবেন। আবার সিটিং এমপি স্বপন ভট্টাচার্য মনোনয়ন পাবেন বলে তিনি আশা করেন। মাঠ জরিপে দলীয় প্রধান কাকে মনোনয়ন দেবেন এটিই বলা যাচ্ছে না।
যশোর জেলার মধ্যে মনিরামপুর পিছিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম। সেখানকার দীর্ঘদিনের সমস্যা ভবদহ ও কপোতাক্ষ নদ। ভবদহ ও কপোতাক্ষ নদের করালগ্রাসে অনেক পরিবার সর্বশান্ত হয়েছে। পানিবদ্ধতায় অপূরণীয় ক্ষতি হয় প্রায় প্রতি বছর। ভবদহ সমস্যাকে জিইয়ে রেখে কোটি কোটি টাকা লুটপাট চলেছে। লোকাল এমপি হিসেবে তার দায় এড়াতে পারেন না। এই আসনে আওয়ামী লীগের আরো কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী অ্যাড. শহীদ ইকবাল, সাবেক ছাত্রনেতা ইফতেখার অগ্নি মাঠে কাজ করছেন। এই আসনে বিএনপি জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ও হেফাজতে ইসলামির নেতা সাবেক মন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস নির্বাচনী লড়াইয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। তবে জোরালো নয়। নতুন নতুন অনেক প্রার্থী মনোনয়ন সিগন্যালে কেন্দ্রে লবিং করছেন। সবকিছুই এখন প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে বিএনপি অথবা বিএনপি জোটের প্রার্থীর মূল লড়াইটা হবে বলে মনে হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন