বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উপ সম্পাদকীয়

ইসি’র সংলাপ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা

মহিউদ্দিন খান মোহন | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপ শেষ হয়েছে গত ১৮ অক্টোবর। শেষ দিনে ইসি বৈঠক করে ক্ষমতাসীন দল অওয়ামী লীগের সঙ্গে। নির্বাচন কমিশনের এ সংলাপ প্রক্রিয়ায় দেশের ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। দলগুলোর কাছ থেকে নির্বাচন কমিশন মোট ৫৩১টি প্রস্তাব পেয়েছে। প্রতিটি দলের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য করে তোলার লক্ষ্যেই তারা প্রস্তাবনাসমূহ উপস্থাপন করেছে। যদিও এসব প্রস্তাবনার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে, কোনো কোনো বিষয়ে তাদের অবস্থান একেবারে বিপরীত।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সংলাপে অংশ নেয়া ৪০টি দলের মধ্যে বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ ২৪টি দল নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে সেনাবাহিনী নামানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি দল সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে এবং কয়েকটি দল ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতাসহ মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সেনা মোতায়েনের সরাসরি বিরোধিতা না করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে বা ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে তাদের অবস্থান ঘোষণা করেছে। ৫টি দল সেনা মোতায়েনের সরাসরি বিপক্ষে মত দিয়েছে। অপর ৫টি দল বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগসহ ১২টি দল ইভিএম (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) ও ডিভিএম (ডিজিটাল ভোটিং মেশিন)-এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণের প্রস্তাব দিলেও বিএনপিসহ ১০টি দল এর বিপক্ষে মত দিয়েছে। নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় পার্টিসহ ১২টি দল। সে সরকারে অওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপির প্রতিনিধিত্ব রাখার পক্ষে মত দিয়েছে কয়েকটি দল। আর বিএনপিসহ ১১টি দল নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপ এখন দেশে আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু। এ সংলাপ প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত সফল হবে কিনা, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে কতটা শক্ত অবস্থান নিতে পারবে, বিএনপিসহ সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা- এসব প্রশ্ন সর্বত্র এখন আলোচিত হচ্ছে। পত্রপত্রিকায়ও এ বিষয়ে বিশিষ্টজনদের অভিমত প্রকাশিত হচ্ছে। তাতে দেখা যায়, একটি ব্যাপারে প্রায় সবাই একমত যে, সংলাপে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে এবং যে প্রস্তাবগুলোর পক্ষে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের সমর্থন রয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়নের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের এবং এটা তাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তারা এও বলেছেন যে, সংলাপে উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো ইসির পথচলার জন্য সহায়ক হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সুবিধা মতো সুপারিশ করেছে। বেশিরভাগ দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাইলেও সরকার পক্ষ বলছে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ইসি কতটুকু ভূমিকা পালন করতে পারবে- এটি এখন দেখার বিষয়।’ সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সুবিধামতো প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের মানদন্ড হলো নির্বাচনে জয়ী হওয়া। আর নির্বাচন কমিশনের মানদন্ড হলো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা। সে আলোকেই ইসিকে প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিবেচনা করতে হবে। অনেক প্রস্তাব বিপরীতমুখী ও সাংঘর্ষিক। তবে, যেগুলো ইসি বাস্তবায়ন করতে পারবে, সেগুলো তাদের করা উচিত। যেগুলো সরকারের বিষয়, সেগুলো নিয়ে সরকারকে অনুরোধ করতে হবে। সরকার না শুনলে সে অবস্থায় ইসি যদি মনে করে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, তাহলে সেটা তাদের স্পষ্ট করে বলতে হবে’।
অন্যদিকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা বলেছেন, ‘সংলাপে অনেক প্রস্তাব এসেছে। সব ইসির এখতিয়ারাধীন নয়। অনেক কিছু সরকারের ওপর নির্ভরশীল। আরপিওতে বলা আছে, ইসি যা চাইবে তা সরকার দিতে বাধ্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য- অতীতে দেখেছি বিভিন্ন সময় ইসি চাওয়ার পরও সরকার সহযোগিতা করেনি।’ সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম. সাখাওয়াত হোসেন (অব.) বলেছেন, নির্বাচনে প্রার্থী, ভোটারসহ সংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে সে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’ সেনা মোতায়েন প্রশ্নে তার অভিমত হলো-‘দুই কারণে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করার প্রয়োজন হয়। প্রথমত. সেনাবাহিনীর ওপর মানুষের আস্থা বেশি। দ্বিতীয়ত. জাতীয় সংসদে একই দিনে সারা দেশে কমবেশি ৪০ হাজার কেন্দ্র ও দুই লাখ ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ হয়। এতসংখ্যক কেন্দ্র ও ভোটকক্ষের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপ্রতুলতার কারণে সেনা মোতায়েন করতে হয়।’ সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ ছহুল হোসাইন বলেছেন, ‘সংলাপে নির্বাচনকালীন সরকার সংসদ ভেঙে দেয়াসহ বেশকিছু প্রস্তাব এসেছে, যেগুলো জাতীয় বিষয়, রাজনৈতিক ইস্যু। নির্বাচনের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে এর সমাধান করতে হবে। তবে, নির্বাচন কমিশন সংলাপের প্রস্তাবগুলো বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করতে পারে। তিনি বলেন, আরপিওতে না থাকলেও সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ইসি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করতে পারে’। অপরদিকে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেছেন, সংলাপে যেসব প্রস্তাব আসছে, সেগুলোর মধ্যে যেসব ইসির এখতিয়ারে আছে তা আমরা বিবেচনা করব। আর যেগুলো আমাদের এখতিয়ারে নেই তা পুস্তক আকারে প্রকাশ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
উপরোক্ত মন্তব্যসমূহ থেকে এটা মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের একক কর্তৃত্বই যথেষ্ট নয়। বিদ্যমান অবস্থায় এর অনেকটাই নির্ভর করে সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। ইসির ক্ষমতা এবং সরকারের ইচ্ছা যদি একত্রিত করা যায়, তাহলে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় তার কতটুকু সম্ভাবনা রয়েছে, তা একটি বড় প্রশ্ন। বিরোধী দলগুলোর চাওয়া এবং সরকারের দেওয়া যদি একেবারে কাছাকাছি না আসে তাহলে সে প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কম।
অবশ্য এটা ঠিক যে, বিএনপি জোট কর্তৃক দাবিকৃত নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের বিষয়টি সম্পূর্ণই রাজনৈতিক। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার নেই। কমিশন বড়জোর দলগুলোর দাবির কথা সরকারকে অবহিত করতে পারে। একমাত্র ক্ষমতাসীন সরকারই পূরণ করতে পারে এ দাবি । সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের এ যাবত কথাবার্তায় সে ধরনের আভাস পাওয়া যায়নি। বরং বিএনপির ওই দাবিকে অযৌক্তিক ও উদ্ভট বলে আওয়ামী লীগ নেতারা এক রকম উড়িয়ে দিচ্ছেন। সরকারের কাছ থেকে এ ধরনের দাবি আদায় করতে হলে আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার, সেটা বিএনপি কতটা পারবে সেটা দেখার বিষয় কীনা তাও বিবেচনায় রাখা দরকার। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রভূত ক্ষমতা আছে। আর সে ক্ষমতা দিয়েছে সংবিধান। সংধিানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে।’ আর ১২০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘এই ভাগের অধীন নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালনের জন্য যেরূপ কর্মচারীর প্রয়োজন হইবে, নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করিলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনকে সেইরূপ কর্মচারী প্রদানের ব্যবস্থা করিবেন।’ সংবিধানের উপরোক্ত দু’টি ধারা মোতাবেক নির্বাচনকালীন সেনা মোতায়েন নির্বাচন কমিশনের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। ইসি চাইলে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের অন্যতম সেনাবাহিনী তাদের সহযোগিতা করতে বাধ্য এবং রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ করলে তিনিও সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা যদি সরকারি দল অর্থাৎ আওয়ামী লীগের ‘পরার্মশ’ ও ‘নির্দেশনা’র জন্য অপেক্ষা করেন, তাহলে এর সম্ভাবনাও ক্ষীণ বলে ধরে নেয়া যায়।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, সংলাপ শেষ হওয়ার পর দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে। গত ২০ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংএ দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগ যে ১১ দফা প্রস্তাব পেশ করেছে, তা গণতন্ত্র ও সুঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক নয়। তাদের প্রস্তাবে ভোটের ফলাফল পাল্টে দেয়ার কৌশল আছে। কীভাবে নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কীভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কীভাবে ভোটের ফলাফল পাল্টে দেয়া যায়, সে কৌশল আছে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবনায়। রিজভী বলেন, সবাই চায় সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সেনাবাহিনী মোতায়েন। কিন্তু আওয়ামী লীগ চায় সেনাবাহিনী ঠুটো জগন্নাথ হয়ে বসে থাকুক। সে কারণেই তারা সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিতে চায় না।’ অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ গত ১৯ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করতে আওয়ামী লীগ যে ১১ দফা নির্বাচন কমিশনের কাছে দিয়েছে, তা দলীয় প্রস্তাব নয়, জনগণের প্রস্তাব। কিন্তু বিএনপির প্রস্তাব হচ্ছে দলীয় প্রস্তাব।
বোঝা যাচ্ছে নির্বাচন কমিশনে পেশ করা প্রস্তাব নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের এ বাকযুদ্ধ আরো বিস্তৃত হবে এবং আরো অনেকেই সে যুদ্ধে শানিত বাক্যবাণ নিয়ে শামিল হবেন একে অপরকে ধরাশায়ী করার জন্য। নির্বাচনী যুদ্ধের আগেই এ বাকযুদ্ধ হয়তো বেশ উপভোগ্যই হবে। তবে, বাক যুদ্ধ যাতে কদর্যরূপ ধারণ না করে সে বিষয়ে উভয় পক্ষেরই সচেতন থাকার প্রয়োজন আছে।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপের পর বিএনপি কোন পথে সামনের দিকে এগোবে তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংলাপের পর নির্বাচন কমিশন কী পদক্ষেপ নেয়, তা দেখেই দলটি পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। আরও বলা হয়েছে, ইতোমধ্যেই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই তা দলের চেয়ারপার্সনের হাতে দেয়া হবে। এরপর উপযুক্ত সময়ে তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।
অপরদিকে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কিছু মন্তব্য পর্যবেক্ষক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, সংলাপের শুরুতে স্বাগত বক্তৃতায় সিইসি কে এম নূরুল হুদা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, ‘নিবাচন কমিশনে দায়িত্ব পালনে আপনাদের পরামর্শ, সুপারিশ, সহযোগিতা ও সাহায্য কামনা করি। কীভাবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে পারি, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা নিতেই আপনাদের সংলাপে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’ সিইসির এ বক্তব্যকে অনেকেই তাৎপর্যপূর্ণ ও ইঙ্গতবাহী বলে মনে করছেন। সিইসির এ বক্তব্য আগামী সংসদ নির্বাচন কেমন হবে তার একটি পূর্বাভাস বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। উল্লেখ্য, বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সময় সিইসি জিয়াউর রহমান এবং বিএনপির প্রশংসা করলেও বিএনপি নেতৃবৃন্দের কাছে নির্বাচন পরিচালনার জন্য কোনো ‘দিকনির্দেশনা’ প্রার্থনা করেননি। সুতরাং এ সন্দেহ করা অমূলক নয় যে, নির্বাচন কমিশন সংলাপ-আলোচনা যতই করুক, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে যতই প্রস্তাবনা নিক, আখেরে তারা সরকারের নির্দেশিত পথেই হাঁটবে। আর সরকার বা সরকারি দলের দিকনির্দেশনাকে শিরোধার্য করে যদি নির্বাচন কমিশন অগ্রসর হয়, তাহলে বহুকাঙ্খিত একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশা হয়তো শেষ পর্যন্ত সোনার হরিণ হয়েই থাকবে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন