একটি সুন্দর ফুল বাগানকে বিনষ্ট করার জন্য যেমনি একটি হুতোম পেঁচা›ই যথেষ্ট। তেমনি তরুণ সমাজকে বিনষ্ট করার জন্য মাদকই যথেষ্ট। মাদক একটি সামাজিক ব্যাধি। বর্তমানে মাদকাসক্তি আমাদের সমাজে এক সর্বনাশা ব্যাধিরূপে বিস্তার লাভ করছে। আজকাল তরুণ প্রজন্মের কাছে অতি সহজেই মাদকদ্রব্য পৌঁছে গেছে। সাধারণত মানুষ নেশার জন্য যা ব্যাবহার করে তাই মাদক দ্রব্য।আবার সেটা হতে পারে ইনজেকশন, ধুমপান, বা যে কোন মাধ্যমে। বিবিন্ন মাদক দ্রব্যের মধ্যে রযেছে যেমন- হিরোইন, কোকেন, আফিম, গাঞ্জা, ফেনসিডাল, বিভিন্ন রকমের ইনজেকশন, ইয়াবা ট্যাবলেট। বর্তমান সময়ে গোটা দেশে যত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, অপহরণ বাণিজ্যের মত সংঘবদ্ধ অপরাধ, মাস্তানি হয়ে থাকে মাদকাসক্তিকে তার অন্যতম প্রধান কারণ । এই মাদকাসক্তির কারণেও দাম্পত্য কলহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ দিন দিন বাড়ছে।
মাদক প্রতিরোধে পরিবার ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা , বন্ধু নির্বাচন, দায়িত্বশীলতা ইত্যাদি উপায়ে মাদকাসক্তি প্রতিরোধ করা সম্ভব। পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে মাদক বিরোধী অভিযান এক্ষেত্রে মা-বাবা কিংবা বড় ভাই-বোন মাদকের কুফল ও ভয়াবহতা সম্পর্কে পারিবারিক আলোচনা ও তা থেকে বিরত থাকতে পরিবারকে উৎসাহিত করতে হবে। পারিবারিকভাবে সন্তানের উপর খেয়াল রাখতে হবে যে সে কোন অস্বাভাবিক জীবন যাপন করছে কিনা, কেমন বন্ধু বান্ধবের সাথে সে মিশছে। পরিবারের কেউ মাদকে আসক্ত হলে তাকে এর খারাপ দিকগুলো বোঝাতে হবে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তুলতে হবে। আজকাল পরিবারে সদস্যদের মধ্যে বন্ধুত্বসূলভ না থাকার কারণে পরিবারের অনেক সদস্য মাদকাসক্তি জড়িত হচ্ছে। তাই পরিবারের সকল সদস্যের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকা অতি জরুরী। খেলাধূলাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্ম কার্যে নিয়োজিত থাকতে উৎসাহিত করতে হবে। মাদকদ্রব্য সেবন বন্ধ করার জন্য নিজের ইচ্ছায় যথেষ্ট ।
সামাজিকভাবে মাদক দ্রব্য প্রসার রোধে এর গনসচেতনতা সৃষ্টি করা। মাদকদ্রব্য সম্পর্কে নৈতিক শিক্ষা কার্যক্রম প্রদান করা। মসজিদের ইমাম ও খতীব এবং ওয়াজীনগন আজগুবি কিচ্ছা কাহিনী না বলে মাদক সম্পর্কে ওয়াজ নসীহত করা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা ক্লাসে কিংবা এসেম্বলিতে সকল ছাত্র- ছাত্রীদেরকে মাদকবিরোধী শিক্ষা দেয়া। তাছাড়া স্বেচ্ছায় রক্তদান করার জন্য সবাইকে উদ্ভুদ্ধ করতে হবে, যার ফলে মাদকাসক্তি অনেকটা কমে আসবে বলে অনেকেই ধারণা করছেন। এমনি কি মদকদ্রব্যের উপর কম বেশী ভ্যাট আরোপ না করে সরাসরি উৎপাদন বন্ধ এবং আমদানী-রাপ্তানী না করা। আর মাদকদ্রব্য বিক্রেতাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদলতের মাধ্যমে জরিমানা ও যথাপোযুক্ত শাস্তি প্রধান করতে হবে।
আসুন ‘মাদককে না বলি, মাদক মুক্ত দেশ গড়ি’ ¯েøাগানে নিজে সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন করে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। আর মাদকাসক্তি তরুণ-তরুণীদেরকে স্ন্দুর জীবন গড়ার সুযোগ করে দিই।
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
সংগঠক ও সমাজকর্মী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন