শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চাঁদপুরে ৬ লাখ ৮০ হাজার বস্তা আলু পচে যাওয়ার উপক্রম

বাজারে মূল্য না পাওয়ায় মজুতের ৫৫ ভাগ আলু নিচ্ছে না কৃষক

বি এম হান্নান, চাঁদপুর থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

উৎপাদিত আলু নিয়ে বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। অবিরাম বর্ষণে ক্ষেতের আলু এক দফা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার আলুর মূল্য না পাওয়ায় কোল্ড স্টোরেজ থেকে আলু নিচ্ছে না কৃষক। অন্যদিকে আলু চাষের জন্য জমি প্রস্তুত হয়নি। আগে-ভাগে আলু এনে কী করবে কৃষক। এ কারণে চাঁদপুর জেলার ১১টি কোল্ড স্টোরেজে কৃষকের লাখ লাখ বস্তা আলু পড়ে আছে। আগামী দু’ সপ্তাহের মধ্যে এসব আলু কৃষক না নিলে পঁচে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত কৃষক তাদের মজুদকৃত খাওয়ার আলু মাত্র ৪৫ভাগ নিয়েছে। বাকী ৫৫ভাগ অর্থাৎ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন আলু কোল্ড স্টোরেজগুলোতে পড়ে আছে। যা বস্তায় ৬ লাখ ৮০ হাজার। সরকারিভাবে এসব আলু রপ্তানির দাবিও করেছে কৃষক। এ দিকে পাইকাররাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তারা ব্যাংক থেকে লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে আলু ক্রয় করে কোল্ড স্টোরেজে রেখেছিল। কিন্তু দাম না পাওয়ায় এবার তারাও ক্ষতিগ্রস্ত।
মনোহরখাদি কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন সিদ্দিকী জানান, চাঁদপুর জেলায় ১১টি কোল্ড স্টোরেজে প্রায় ৫৫হাজার মেট্রিক টন খাওয়ার আলু মজুদ করেছে কৃষক। ২ মেট্রিক টন করে ৬ লাখ ৮০ হাজার বস্তা। গত সপ্তাহ পর্যন্ত মাত্র ৪৫ভাগ আলু কৃষক সংগ্রহ করেছে। তিনি আরো জানান, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এসব আলু কৃষক সংগ্রহ না করলে পঁচে যাবে। এতে তারা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মতলব দক্ষিণ মার্শাল এন্ড মমতা কোল্ড স্টোরেজ এর ম্যানেজার আনোয়ার পাটওয়ারী জানান, আলুর দাম না থাকায় তাদের কোল্ড স্টোরেজও এখনো ৫৫ভাগ আলু পড়ে আছে।
পাইকারী বিক্রেতা হোসেন আহমেদ জানান, ‘আলু মৌসুমে ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকার সিসি ঋণ নিয়ে কৃষকের কাছ থেকে আলু ক্রয় করে কোল্ড স্টোরেজ রেখেছি। কিন্তু বর্তমানে আলুর দাম না থাকায় ১২ লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। তিনি এখন ঋণ দিতে না পেরে দেউলিয়া হয়ে পড়ছেন।
কৃষক মিজানুর রহমান জানান, এবার বৃষ্টিপাতে আলুর প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পর যে আলু হয়েছে তা কোল্ড স্টোরেজে রেখে দাম না পেয়ে আরো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এভাবে বার বার ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে তারা এবার আলু চাষ করবে কিনা, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এভাবে আলুতে ক্ষতি হতে হতে হতাশায় চাঁদপুরে তিনজন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। অথচ সরকার আলুর ক্ষতিপূরণ বা ভুর্তুকি দিচ্ছে না। চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলী আহমেদ জানান, এবার অধিক বৃষ্টির কারনে সকল ফসল রোপন ও কর্তন পিছিয়ে পড়ছে। এখনো আমন ধান কাটা হয়নি। জমি রসালো, আলু চাষের জন্য প্রস্তুত হয়নি। কৃষক আগে-ভাগে আলু এনে কী করবে। বাজার মূল্য কম থাকায় খাবার আলু কোল্ড স্টোরেজ থেকে তারা মাকেটিং এর জন্য হয়তো সংগ্রহ করছে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
তৌকির ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ২:৫৯ এএম says : 0
সরকারের উচিত তাদেরকে ক্ষতিপূরণ বা ভুর্তুকি দেয়া
Total Reply(0)
কামরুজ্জামান ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:০০ এএম says : 0
কৃষকদের চাষাবাদ ব্যয় কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
Total Reply(0)
নাভিল ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:০১ এএম says : 0
দাম কমলে কৃষক বাড়লে সাধারণ মানুষ বিপদে পরে। এ দেখি উভয় সংকট
Total Reply(0)
Mahbubur Rahman ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:১৮ পিএম says : 0
হায়‌রে অামার দে‌শের কৃষক তো‌দের কপাল এত খারাপ !
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন