সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নিবন্ধ

বাল্যবিবাহ একটি প্রচলিত শব্দ

| প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাল্যবিবাহের রীতিনীতি কালের আবর্তনে নতুন রূপে প্রত্যাবর্তন ঘটছে প্রচলিত গতিতে। যৌতুকের নামে উপহার আর বাল্যবিবাহের ব্যতিহার দুটো সামাজিক ব্যাধি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা তো আর এখনকার নয়, সেই পুরনো। ব্যাধি পুরনো হলেও ব্যাপ্তি যেন আরো ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।র বাল্যবিবাহের ব্যাধি যে তৎক্ষণাৎ, চাক্ষুষ প্রতিক্রিয়া ঘটায় তা নয় ব্যাধিটা সংক্রামক, দীর্ঘস্থায়ী, সামাজিকরণের পথ সঙ্কুল, সংকীর্ণ করার মতো উল্লেখযোগ্য ব্যাধি।
দারিদ্রতা, যৌতুক, অশিক্ষিত, সামাজিক রীতিনীতি, কুসংস্কার যে বাল্যবিবাহের অন্যতম কারণ হলেও এখন নতুন রূপে হচ্ছে পারিপার্শ্বিকতার ভয়ানক ছোবল ইভ টিচিং, যৌন হয়রানি, নারীদের নিরাপত্তা হীনতার কারণে। সচরাচর গ্রাম কেন্দ্রিক বাল্যবিবাহের মাত্রা অনেক বেশি। শুধু যে উল্লেখিত কারণে হচ্ছে তা কিন্তু নয় বাল্যবিবাহের কারণেও প্রশ্নসূচক বাল্যবিবাহের ব্যতিক্রান্ত হচ্ছে। গ্রামে সচেতনতার অভাব,আইনের শিথিল প্রয়োগ এর জন্যও দায়ী।
বাল্যবিবাহ শুধু একটি সমস্যা তা নয় এই ব্যাধিকে কেন্দ্র করে ব্যতিক্রান্ত সমস্যা ছড়াচ্ছে অনেক।ইদানীং এ ব্যাধির প্রভাবের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে দিনকে-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যৌথ পরিবার ভাঙন,সন্তান লালন পালনে যথোপযুক্ত ভাবে গড়ে না তুলা। সন্তানকে পালনে দায়িত্ব হীনতার কারণে সন্তানের সাথে পিতামাতার দূরত্ব চলে আসে । সন্তান ভালোভাবে বড় হওয়ার পিছনে পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব অন্যতম।বাল্যবিবাহ এবং যৌথ পরিবার ভাঙনের ফলে সন্তান যথাযথ শিক্ষা পাচ্ছে না। ফলশ্রুতিতে বাড়ছে ধর্ষণ, ইভ টিচিং, যৌন হয়রানির মতো ভয়াবহ ঘটনা।বিপরীতার্থে মেয়ের পরিবারের কপালে পড়ছে চিন্তার ভাঁজ। এর ফলে বিলাসিতাময় সামাজিক বিবাহ রীতিতে,দারিদ্রতার কবলে,যৌতুকের তাড়নায় মেয়ের নিরাপত্তা হীনতার জন্য মেয়ে সন্তানের পিতামাতা বাধ্য হয়ে প্রশ্রয় দিচ্ছে মেয়েকে বিবাহ দিতে।এর কারণে বাড়ছে বাল্যবিবাহ সাথে বাড়ছে সমস্যা। অপ্রাপ্ত বয়সের অপরিণত সংসারে ঘটছে অনাকাঙিক্ষত ঘটনা। আত্মহননের মতোও অনেক ঘটনা ঘটে যায় বাল্যবিবাহের ছোবলে। ফলাফলে অপ্রাপ্ত বয়সের অপ্রাপ্তির বিস্বাদ ইদানীং সমাজে বাড়ছে বৈ কমছে না।
বাল্যবিবাহ শুধু প্রচলিত শব্দের প্রচলিত ধারায় সীমাবদ্ধ রেখে সমস্যা নিরসন করা সম্ভব নয়। প্রয়োজন আইন প্রয়োগের শিথিলতা দূরীকরণ সাথে বৃদ্ধি করতে আমাদের দায়িত্ববোধ, করতে হবে সচেতনতা বৃদ্ধি। সমস্যা একটি হলেও সমাজে বাল্যবিবাহের ব্যাধির কিন্তু শাখা প্রশাখা ছড়াচ্ছে অনেক। সামাজিকরণে বেড়ে যাচ্ছে আত্মহত্যার মতো ভয়ানক ঘটনা। দারিদ্রতা,শিক্ষার হার কম,সচেতনতার অভাবে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ না করার ফলে বাল্যবিবাহের মতো আরো নতুন নতুন অনেক ব্যাধির প্রাদুর্ভাব হচ্ছে।সমস্যা নিরসনে প্রয়োজন সামাজিকভাবে গণসচেতনতা বৃদ্ধি সাথে আইনের কঠোর প্রয়োগ, পরিবর্তন করতে হবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দিতে হবে নারীর অধিকার, নারীর নিরাপত্তা।স্ত্রীলিঙ্গের সমীহ অজুহাত পরিত্যাগ করে বাল্যবিবাহ নামক প্রচলিত শব্দের প্রচলিত ধারার নিয়ম পরিহার করা আবশ্যিক বাঞ্ছনীয় এবং সামাজিকরণ উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
মাকসুদ আলম মিলন
শিক্ষার্থী,স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ,জার্নালিজম এন্ড
মিডিয়া স্টাডিজ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন