বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুকে দ্বিতীয় দিন প্রায় সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার ১০ টায় দিকে তিনি দুদক কার্যালয়ে আসেন। এরপর দুপুরের দিকে আবদুল হাই বাচ্চু অসুস্থ বোধ করায় ডাক্তার তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। জিজ্ঞাসাবাদ দুদক কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছিল জাতীয় পার্টির এই সাবেক এমপিকে। তবে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নেরই জবাব দেননি তিনি। কমিশনের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য সাংবাদিকদের বলেন, আব্দুল হাই বাচ্চুকে ৫৬টি মামলার মধ্যে ১৫টি মামলার বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুই তদন্ত কর্মকর্তা। অন্য মামলায় আবারও তাকে জিজ্ঞাসাদ করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আব্দুল হাই বাচ্চু দুদকের তলবে হাজির হলে সকাল ১০টার দিকে দ্বিতীয় দিনের মত জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। কমিশনের পরিচালক একেএম জায়েদ হোসেন খান ও সৈয়দ ইকবালের নেতৃত্বে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাবাসাদ শেষে দুদকের নতুন ভবনের তৃতীয় তলা থেকে নেমে এলে বাচ্চুকে ঘিরে ধরে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন সাংবাদিকরা। এক পর্যায়ে তিনি ভিড় ঠেলে মূল ফটক দিয়ে বেরিয়ে যান। কয়েকজন সাংবাদিক এ সময় বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি এবং দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে প্রশ্ন করেন বাচ্চুকে। তবে কোনো উত্তর তারা পাননি। গাড়ির অপেক্ষায় মোবাইল চাপতে চাপতে বাচ্চুকে বলতে শোনা যায়, কী বিপদেই না পড়লাম!
দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে দুপুরে খাবারের প্রস্তাব দিলে বাচ্চু শুধু চা-বিস্কুট খান। দুপুরে কিছুটা অসুস্থ বোধ করলে দুদকের মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক জ্যোতির্ময় চৌধুরী তাকে পরীক্ষা করে দেখেন। পরে চিকিৎসক জানান, উচ্চ রক্তচাপ ছাড়া তার তেমন কোনো সমস্যা নেই। বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কয়েক দফা পর্যবেক্ষণ আসার পর স¤প্রতি ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ নেয় দুদক। বাচ্চুর আগে ব্যাংকের সাবেক ১০ পরিচালককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ ওঠার পর তদন্তে নামে দুদক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন