শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিবন্ধ

চিঠিপত্র

| প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শিশুদের খেলাধুলার সুযোগ দিন
সকাল ৭টায় স্কুলের জন্য বাসা থেকে বের হতে হবে। তাই মাকে ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠতে হয়। রান্নাবান্না করা, স্কুলের জন্য সোনামণিদের তৈরি করা। পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য কাজ করা- সব মিলিয়ে গৃহিণীদের ব্যস্ততাপূর্ণ সময় কাটে রোজ সকালে। উদ্দেশ্য একটাই, সন্তানের ভালো রেজাল্ট। ভালো রেজাল্টের প্রত্যাশা মানুষকে এতটাই অন্ধ করেছে যে, ভালো-মন্দ বোঝার সক্ষমতা হারিয়ে গেছে, যে কোনো মূল্যে জিপিএ ৫ পেতেই হবে। যে স্কুলে বেশি জিপিএ ৫ পাওয়া যায়, সন্তানকে সেই স্কুলে ভর্তি করাতে যেন চলছে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। আর তাতে সন্তানের শারীরিক বৃদ্ধি কতখানি হচ্ছে, সেদিকে কোনো নজরই নেই। স্কুল-প্রাইভেট-কোচিং এই করে কেটে যাচ্ছে দিনের ১২ ঘণ্টা। একটা শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ নিয়ে অভিভাবকরা যেন উদাসীন। শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে, শারীরিক গঠনে শিশুদের হূষ্টপুষ্ট করতে হলে খেলাধুলার বিকল্প নেই। যে টাইট সিডিউল লেখাপড়ার তাতে সময় কোথায় খেলাধুলার! তাছাড়া মাঠের সংকট তো আছেই। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করতে তাই খেলাধুলার সময় রেখে পরিবর্তন আনতে হবে শিক্ষা গ্রহণের সময়সূচিতে।
প্রকৌশলী সাব্বির হোসেন,
শ্রীপুর, গাজীপুর

সুস্থ সমাজ চাই
বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন কারও বিষয়েই আমরা এখন যেন আর দায়িত্ববোধ করি না। আগে কেউ অসুস্থ হলে প্রতিবেশীরা ছুটে যেত। এখন আমরা পাশের বাড়ির মানুষদেরই চিনি না। আমাদের সবকিছুই প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। পারিবারিক-সামাজিক অনুষ্ঠান, জন্মদিন, বিয়েবার্ষিকীতে দেখা করে কার্ড দেয়ার চলও উঠে যাচ্ছে। এসএমএস, ফেসবুক আর ই-মেইলেই ঘরে বসে কাজ সেরে ফেলছি। কারও সঙ্গে হেসে কথা বলার রেওয়াজও প্রায় উঠে গেছে। দেখা যায় একটা বাড়িতে স্বামী, স্ত্রী, সন্তান সবার হাতেই মোবাইল ফোন। তারা যে যার বৃত্তে ‘চ্যাট’ করে চলেছে। নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা নেই। এ ব্যাপারটাকে আমরা বলি ‘অ্যালোন টুগেদার’, যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। মানবিক সম্পর্কগুলো এভাবেই অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। সে জন্য চোখের সামনে কেউ দুর্ঘটনার কবলে পড়লেও দাঁড়াই না।
এখন আত্মীয়-বাড়ি যাওয়ার ট্রেডিশনও হারিয়ে যেতে বসেছে। মামার বাড়ি, খালা-ফুপুর বাড়ি যাওয়া আর হয়ে উঠে না। আমাদের জীবন এখন এভাবেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। একাকিত্বের চর্চা করতে গিয়ে রক্তের সম্পর্কের আপনজনও দূরে সরে গেছে। এখন মানবিক স্পর্শ পাওয়ার জন্য অনাত্মীয়দের নিয়ে একেকটা গ্রুপ বানিয়ে বিনোদন খুঁজতে হয়। আমাদের মন নামক মানবজমিন এভাবেই শুকিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মধ্যে জন্ম নিয়েছে ‘কোনো কিছুতেই আসে যায় না’ মানসিকতা। সে জন্য মা-বাবাকে দেখাশোনা করার দায়িত্বভার অনায়াসে ঝেড়ে ফেলে দিতে পারছি। দুস্থ আত্মীয়, পীড়িত প্রতিবেশী, অত্যাচারিত শিশু- কেউই আমাদের মনে সামান্যতম আলোড়ন তোলে না। এরকম একটা অশান্ত সময়ে মানুষে মানুষে সংঘবদ্ধ হওয়া খুব দরকার। একসঙ্গে অনেকে বেঁচে থাকার যে সুখানুভূতি তা হারিয়ে ফেলেছি আমরা। তা আবার ফিরিয়ে আনা দরকার সুস্থ সমাজের প্রয়োজনে। এ ব্যাপারে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লিয়াকত হোসেন খোকন,
রূপনগর, ঢাকা

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন