সউদী আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদ পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি তার দেশের ঘোষিত অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দান ও মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের মার্কিন সিদ্ধান্তের জবাবে বাদশাহ সালমান বুধবার বলেন, ফিলিস্তিনিদের ইসরাইল দখলীকৃত পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করার অধিকার আছে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের জবাবে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে মুসলিম বিশে^র প্রদান সংগঠন ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) জরুরি শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সউদী বাদশাহ বুধবার রিয়াদে শূরা পরিষদে এ টেলিভিশন ভাষণ দেন।
উল্লেখ্য, সউদী বাদশাহ ওআইসি শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেননি। পরিবর্তে সউদী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেন। ওআইসি শীর্ষ বৈঠকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বিশে^র প্রতি আহবান জানান। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ না নেয়া পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যে কোনো শান্তি আসতে পারে না।
বাদশাহ সালমান বলেন, সউদী আরব আঞ্চলিক সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের আহবান জানায়। এর মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে ফিলিস্তিন সমস্যা এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকারসহ ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকার পুনরুদ্ধার। সউদী বাদশাহ বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক প্রস্তাবে নিশ্চয়তা প্রদানকৃত জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের অধিকারের বিরুদ্ধে চরম পক্ষপাতিত্বের পরিচায়ক। তিনি বলেন, মার্কিন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমি নিন্দা ও গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি।
আবদুল্লাহর সাথে বৈঠক
বুধবার বাদশাহ সালমান তার প্রাসাদে জর্দানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সাথে বৈঠকে মিলিত হন।
সউদী প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানায়, সালমান ও আবদুল্লাহ বিশেষ করে জেরুজালেম সম্পর্কিত বিষয় এবং জেরুজালেম বিষয়ে মার্কিন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে মারাত্মক প্রতিক্রিয়াসহ এ অঞ্চলের সর্বশেষ ঘটনাবলী নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকে দু’ শাসক জেরুজালেমে ঐতিহাসিক কীর্তি ও ফিলিস্তিনি জনগণের দৃঢ় অধিকার অধিকার রক্ষায় আরব, ইসলামী ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার ও সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তারা আন্তর্জাতিক সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব ও আরব শান্তি উদ্যোগ অনুসারে ফিলিস্তিন সমস্যার একটি ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার উপরও জোর দেন।
জর্দানের উপর চাপ সৃষ্টি
এদিকে জর্দানের রাজনীতিক ও বিশ্লেষকদের মতে, দু’টি আরব দেশ জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দান এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বড় রকম কর্তিত রূপ মেনে নেয়ার জন্য জর্দানের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে।
জর্দানের এক এমপি ওয়াফা বনি মুস্তাফা সম্প্রতি আল জাজিরাকে বলেন, দুই প্রধান শক্তি হচ্ছে ইউ এ ই এবং সউদী আরব। সউদী আরবে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান প্রাধান্যমূলক ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।
জর্দান ফিস্তিনিদের পক্ষ নিয়েছে এবং ট্রাম্পের জেরুজালেম সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বনি মুস্তাফা বলেন, বিন সালমান ও ইউ এ ই তাদের প্রস্তাবে সম্মত হওয়া, তাদের নেতৃত্বের কাছে মাথা নোয়ানো এবং ট্রাম্পের তথাকথিত চূড়ান্ত চুক্তির ব্যাপারে রাজি না হওয়া পর্যন্ত জর্দানকে অর্থনৈতিক ভাবে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন