দক্ষ মানবসম্পদ জাতীয় উন্নয়নের পূর্ব শর্ত। এই সম্পদ তৈরিতে জাতীয় শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদেশের শতকরা ৮৯% শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত। এদের অধিকাংশই এমপিওভুক্ত ও জাতীয় স্কেলভুক্ত এদের চাকরিবিধি আছে। কিছুক্ষেত্রে বৈষম্য থাকলেও সরকারি চাকরির মতো সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। এদের বেতন ভাতা বর্তমানে অনুদান হিসাবে নয় বরং সরকারের রাজস্ব তহবিল থেকে শতভাগ প্রদান করা হয়। সরকার যখনই নতুন জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণা করেন, তখনই এই শিক্ষক-কর্মচারীগণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা প্রাপ্ত হন। এ পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা) শিক্ষক-কর্মচারীদের পৃথক পৃথক চাকরিবিধি আছে। কিন্তু এ বিধিতে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা উল্লেখ নেই। চাকরি থেকে অবসরের বয়স উল্লেখ আছে (৬০ বছর)। এ কারণে যে কেউ শিক্ষক বা কর্মচারী হিসাবে ৫৯ বছর বয়সেও চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারেন। দেখা গেছে, কেউ কেউ জীবনের অধিকাংশ কাল প্রবাসে থেকে শেষ বয়সে এসে ৪০/৫০ বছর বয়সে এ পেশায় প্রবেশ করেন। এটা কেমন নিয়ম? একটি গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের বিধি-বিধান সংবিধান ও আইনের পরিপন্থি। এছাড়াও এ ধরনের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরিবিধি-বিধান এতই অসম্পূর্ণ ও অস্পষ্ট যে, এ কারণে এই পেশায় শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হয়ে আর্থিক, সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ আদাল হাইকোর্ট/ সুপ্রিম কোর্টে শিক্ষা অধিদফতর/মন্ত্রণালয়/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার মামলা বিচারাধীন আছে। নি¤œ আদালতে এর সংখ্যা আরো বেশি। বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। শিক্ষা ক্ষেত্রে এই সরকারের ভূমিকা সর্বজন স্বীকৃত। এ পর্যায়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়োগ, ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিসহ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় বিষয়সমূহের সুস্পষ্ট আইন যা ‘শিক্ষা আইন’ হিসাবে প্রচলিত হবে- অবিলম্বে প্রণয়ন করলে বর্তমান শিক্ষা নীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সার্থকভাবে বাস্তবায়িত হবে। অতএব, চাকরিবিধিতে যেখানে বয়সবিধি নেই- এহেন ত্রুটিপূর্ণ বিধিমালা স্থগিত করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগে সরকারি চাকরির মতো প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ নির্ধারণ করা অপরিহার্য। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মো. শফিকুজ্জামান
প্রভাষক, গলাচিপা ডিগ্রি কলেজ,
পটুয়াখালী।
৪৫ বছরেও গেজেটে নাম ওঠেনি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের
১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে আবদুর রহমান অস্ত্র হাতে সম্মুখ সমরে অংশ নিয়েছিলেন। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর আজ তিনি বয়সের ভারে ন্যূজ-বৃদ্ধ। দীর্ঘ সময়েও তার নাম গেজেটে ঠাঁই পায়নি। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাননি বলেই তিনি রাষ্ট্রীয় সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বর্তমানে ৬৫ বছরের ওপর এই বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত। তার আনন্দও গর্ব স্বাধীনতা সংগ্রামে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া। অন্যদিকে তার দুঃখ-দেশে একটি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থাকার পরেও মুক্তিযোদ্ধার সপক্ষে ২০১৩ সাল থেকে যথাযথ কাগজপত্র জমা দিয়েও মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে নাম ওঠেনি।
তিনি কি মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতির গেজেট জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারবেন? এহেন আকৃতি তার। এই মুক্তিযোদ্ধা ১৯৭১ সালে ৮ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। ভারতের করিমপুরে তিনি মুক্তিযোদ্ধার প্রশিক্ষণ নেন। পরিশেষে, তার নাম গেজেট অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আবদুল মোতালেব,
খোকসা, কুষ্টিয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন