প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে প্রমাণিত হলে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রশ্নপত্র ফাঁস করলে কেউ রেহাই পাবে না বলেও তিনি জানান। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর ধানমন্ডি গভ. ল্যাবরেটরি উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা দেখতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, এই পরীক্ষা নিরাপদ রাখতে মানুষের পক্ষে যা যা করা সম্ভব, এবার তা-ই করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস করলে কেউ রেহাই পাবে না।
কী হবে আমি নিজেও বলতে পারি না। তবে চরম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীক্ষা শুরুর আগে ফেইসবুকে প্রশ্নপত্রের অনুলিপি ছড়ানো হয়েছে মন্ত্রীকে জানানো হলে মন্ত্রী, সচিব ও কেন্দ্রে দায়িত্বরতরা ওই অনুলিপি মূল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন। তবে অনুলিপিটি ভুয়া বলে তারা জানান। এসময় শিক্ষামন্ত্রীর সাথে ছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো সোহরাব হোসাইন। তবে শিক্ষামন্ত্রীর শক্ত পদক্ষেপ আর কড়া হুঁশিয়ারিতেও কোনো কাজ হয়নি। এবারও এসএসসি পরীক্ষা শুরুর দিনই বাংলা প্রথমপত্র প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগেই ফেইসবুকের বিভিন্ন পেইজে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ে। যে প্রশ্নের সাথে পরীক্ষায় আসা প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়া যায়। ফেইসবুকের নির্দিষ্ট কয়েকটি গ্রুপে রাত থেকেই পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেসব পেইজে প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। যারা সেটির সাথে সংযুক্ত হয়েছেন তাদেরকে পরীক্ষা শুরুর আগে ম্যাসেঞ্জারে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। আবার পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সেই পেইজে বলা হয়, এটি বিনামূল্যে দিলাম কারণ নিশ্চিত হতে চেয়েছি প্রশ্ন মিলে কিনা। যারা পেয়েছেন তারা নিশ্চয় প্রমাণ পেয়েছেন প্রশ্ন শতভাগ মিলেছে। আর আমরাও নিশ্চিত হলাম আগামী দিনের প্রশ্নপত্রও মিলে যাবে। বিষয়টি জানানো হলেও শিক্ষা কর্মকর্তারা প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কথা মানতে নারাজ। ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার জানান, যা ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই নিয়েছি। আমরা জানি প্রশ্নফাঁস হয়নি।
এদিকে প্রশ্নফাঁসের কথা ছড়িয়ে পড়ার পর পরীক্ষা বাতিল করা হবে বলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পরে। অনেকেই ফেইসবুকে লিখেছেন প্রশ্নফাঁস হয়েছে পরীক্ষা বাতিল হবে। এই নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্তিতে পড়েন। আসলেই পরীক্ষা বাতিল হবে নাকি হবে না। দৈনিক ইনকিলাবে অনেকই বিকেলের পর থেকেই ফোন দিয়ে জানতে চান পরীক্ষা বাতিল হয়েছে কিনা। তাদের কাছে কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রশ্নফাঁস হয়েছে বলে পরীক্ষা বাতিল হবে জানিয়ে অনেকেই ফেইসবুকে লিখছেন। তারা আরও বলেন, শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষা শুরুর আগে গত কয়েকদিন ধরেই বলেছেন প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পেলে পরীক্ষা বাতিল করা হবে। প্রথম দিনেই তো প্রশ্নফাঁস হবে এজন্য শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্তিতে পড়ে গেছেন।
গতকাল চলতি বছরের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা সকাল ১০টায় শুরু হয়। এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ শিক্ষার্থী। সারাদেশের ৩ হাজার ৩৩৬টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষায় গতকাল অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ২৬জন ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে ১৭ জন এবং কারিগরি বোর্ডে ৭ জন। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ২ জনকে বহিষ্কার করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন