গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) থেকে রবিউল কবির মনু : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া নদী কাইয়াগঞ্জ খেয়াঘাটে একটি সেতুর অভাবে পৌরসভাসহ চারটি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রতিদিন নানা বিড়ম্বনার শিকার। এতে পিছিয়ে পড়ছে আর্থসামাজিক উন্নয়ন। তাই ভ‚ক্তভোগী এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি, এখানে একটি সেতু নির্মাণ করে উপজেলা সদরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা। তাই অবহেলিত এলাকাবাসী আশা করছেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেবে সরকার।
এলাকার মুরব্বিরা জানালেন, বহু আগে থেকেই কাইয়াগঞ্জে এ করতোয়া নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা লাভ করে ছিল গঞ্জেরহাট নামে। তখন গঞ্জের ঘাটে বড় বড় নৌকা নোঙ্গর করত, দেশি-বিদেশি বণিক ও সওদাগররা ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আসতেন। করতোয়া তার মূল স্রোতধারা হারিয়ে খর্বকায় হতে থাকায় কালের গর্ভে হারিয়ে যায় এ বাণিজ্যকেন্দ্র। বর্তমানে গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া নদীর মূল স্রোত কাটাখালির মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাঙালি নদীতে পতিত হয়। করতোয়ার মূল প্রমত্তা করতোয়া নদীর উৎস স্থলে পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় যৌবন হারিয়েছে বহু বছর আগেই। যৌবন হারিয়ে বৃদ্ধ এই নদীটি কোন মতে বেঁচে থাকলেও দুঃখ বাড়িয়েছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের তরফমনু, সাপমারা ইউনিয়নের তরফকামাল, দরবস্ত ইউনিয়নের তালুকরহিমাপুর, ফুলবাড়ী ইউনিয়নের খানসা পাড়া ও গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার খলসী মৌজাসহ ৩০টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার বাসীন্দার। এ বিশাল জনগোষ্ঠীর উপজেলা সদরের সাথে যাতায়াতের একমাত্র পথ মাত্র এক শ’ গজ প্রস্থের করতোয়া নদীর কাইয়াগঞ্জ খেয়াঘাট। শুধু তাইনয় সরাসরি সড়ক যোগাযোগ না থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে না পারায় প্রতারক চক্র জীনের বাদশাসহ বিভিন্ন অপরাধীচক্র রাতের বেলায় আস্তানা গেড়ে বসে করতোয়া নদীর উত্তর প্রান্তে। তালুকরহিমাপুর গ্রামের বাসীন্দা কাইয়াগঞ্জ খেয়াঘাটে স্থাপিত চাঁদপুর আরেফিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আকমল হোসেন জানান, নদীর উত্তর প্রান্তের কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য পায়না সড়ক যোগাযোগের অভাবে। এ খেয়াঘাট থেকে উপজেলা সদরের দূরত্ব মাত্র চার কিলোমিটার হলেও ভারী কোনো পণ্য নিয়ে আমরা যেতে পারি না। এলাকার বাসীন্দারা ভারী কোনো পণ্য উপজেলা সদর থেকে আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে দরবস্ত ইউনিয়নের বিশুবাড়ী-বালুয়াহাট হয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আসা-যাওয়া করতে হয়। একই কথা বললেন সংবাদপত্র বিক্রেতা ময়নুল, দর্জিশ্রমিক এরশাদ, ব্যবসায়ী খোরশেদ ও কৃষক নাজিম। তারা আরো বলেন, প্রতিদিন নানা কাজে একাধিকবার এ খেয়াঘাট পার হয়ে উপজেলা সদর বিভিন্ন স্থানে যেতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তাই এখানে একটি সেতু নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী ছাবের আলী জানান, কাইয়াগঞ্জে করতোয়া নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে রংপুর বিভাগ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-দ্বিতীয় পর্যায়ের আওতায় সেতু নির্মাণে প্রস্তাব করা হয়েছে। কাইয়াগঞ্জে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দ্রæত বাস্তবায়নে এমপি মহোদয় জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন