ইনকিলাব ডেস্ক : পাকিস্তানের বহুল আলোচিত শিশু জয়নবকে (৬) ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে প্রধান অভিযুক্ত ইমরান আলীকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। দেশটির একটি সন্ত্রাস-বিরোধী আদালত অভিযুক্তকে চারবার মৃত্যুদন্ড এবং একবার যাবজ্জীবন সহ ৩০ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। শনিবার কট লাখপটস্থ লাহোরের কেন্দ্রীয় কারাগারে এই রায়ের ঘোষণা দেওয়া হয়। আদালতের একজন আইনজীবী জানান, অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যাকান্ড এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে আদালত ইমরান আলীকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে। সমকামিতার অপরাধে ইমরান আলীকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়। এ ছাড়া জয়নবকে হত্যাকাÐের পর তার লাশ ঝোঁপে লুকিয়ে রাখার দায়ে অপর শাস্তিটি দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৯ জানুয়ারি লাহোরের দক্ষিণের কাসুর শহরের একটি ময়লার ভাগাড় থেকে জয়নবের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ৪ জানুয়ারি থেকেই নিখোঁজ ছিল জয়নব। পরে জানা যায়, মক্তবে কোরআন পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে সে অপহৃত হয়। ওমরাহ পালন করতে ওই সময় তার পিতা-মাতা সৌদি আরবে ছিলেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জয়নবকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার কথা বলা হয়। যে ভাগাড়ে জয়নবের মৃতদেহ পাওয়া যায় সেটা তার বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে। পরে পুলিশি তদন্তে একটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়। সেখানে জয়নবকে এক ব্যক্তির হাত ধরে চলে যেতে দেখা যায়। জয়নবের মৃতদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে দুই বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। খবরে বলা হয়েছে, চারটি অভিযোগ আমলে নিয়ে ইমরানের ফাঁসির দÐ দেওয়া হয়েছে। তাকে শিশু হত্যা, শিশু অপহরণ, শিশু ধর্ষণ এবং শিশুর সঙ্গে অস্বাভাবিক কর্মকাÐে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া শিশুর দেহ উন্মুক্ত করে নির্যাতন চালানোর দায়ে ইমরানকে আরও সাত বছরের কারাদÐ ও দশ লাখ টাকা জরিমানার দÐ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি কোরআন ক্লাস শেষে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় পাঞ্জাবের কাসুরের সাত বছরের শিশু জয়নাব আনসারি। বাবা-মা সৌদিতে ওমরাহ পালনে যাওয়ায় কয়েকদিনের জন্য খালার বাড়িতে থাকা শিশুটির মরদেহ ৯ জানুয়ারি শহরের একটি আবর্জনার স্তুপে পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায় ধর্ষণের পর হত্যার শিকার সে। এক বছরের মধ্যে বারোতম শিশু হিসেবে ধর্ষণের শিকার হওয়া জয়নাবের মৃত্যুতে শুরু হয় বিক্ষোভ। কাসুরের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হলে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন