শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

গোবিন্দগঞ্জে বৃদ্ধাশ্রমে অসহায় ১৭ বৃদ্ধের নতুন জীবন

উদ্যমী যুবকদের মানবিক প্রচেষ্টা

| প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) থেকে রবিউল কবির মনু
“মানুষ মানুষের জন্য” বাক্যটি বুকে ধারন করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কয়েক জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যুবক ও ছাত্রদের মানবিক প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দুনিয়াবী শেষ আশ্রয় স্থল ‘বৃদ্ধ সেবা বৃদ্ধাশ্রম। শখের বসে মানবিক উদ্দেশ্যে বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুললেও বাস্তবতায় এসে বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনা ব্যয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রম উদ্যাক্তা প্রায় বেকার সল্প আয়ের যুবকদের। তাই তারা বৃদ্ধাশ্রমটি বাঁচিয়ে রাখতে দানবীরদের সহযোগীতা কামনা করেছে।
জানা যায়, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ফুলবাড়ী ও দরবস্ত ইউনিয়ন এবং পৌরসভার কয়েকজন বন্ধু মিলে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বোয়ালিয়া মৌজার শিববাড়ী এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে প্রায় এক বছর আগে গড়ে তুলেছেন প্রবীন নাগরিকদে আবাস স্থল “বৃদ্ধ সেবা বৃদ্ধাশ্রম”। এখানে বর্তমানে ১২জন প্রবীন নারী ও ৫ পুরুষ আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রিতদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানসহ চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহ করছে উদ্দোমী যুবকদের গড়া ‘বৃদ্ধ সেবা বৃদ্ধাশ্রম। বৃদ্ধ সেবা বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধদের সেবায় এখানে কর্মরত আছেন নার্স, বাবুর্চি ও প্রহরি।
“বৃদ্ধ সেবা বৃদ্ধাশ্রম” এর পরিচালক ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ছোট সোহাগী গ্রামের ছাত্র ও ক্ষুদ্র নার্সারী ব্যবসায়ী মোঃ আপেল মাহমুদ জানান, তার গ্রামের এক বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তির দু:খ দূর্দশা দেখে তার মনে দাগ কাটে। এরপর সে তার বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে ২০১৭ সালের শুরুর দিকে এ বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলেন। শুরুতে অনেকেই সক্রিয় থাকলেও বর্তমানে ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম খোকন, নার্সারী ব্যবসায়ী জুলকার নাইন রাজ, ছাত্র ও ব্যবসায়ী আজম, ছাত্র শামচুজ্জোহা ও আতিয়ার রহমান বৃদ্ধাশ্রমটি বাঁচিয়ে রাখতে সংগ্রাম করছে। আশ্রমের বাসিন্দাদের তিন বেলা খাবার, সেবিকা,রান্ধুনী ও নৈশ প্রহরীর বেতন এবং বাড়ী ভাড়া বিদ্যুৎ বিলসহ প্রতি মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। পরিচালনা কমিটির সদস্যদের প্রতি মাসের চাাঁদা ও স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তির দানে এ ব্যয় নির্বাহ করা হয়। সরেজমিনে “বৃদ্ধ সেবা বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে দেখা যায় ১৫জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সেখানে বসবাস করছে। কথা হলো ৯৫ বছরের আজিজার রহমান, জবেদালী (৮৪), ছবেদুল(৮৫), ফুলজান বেওয়া (৯০), ছামিনা বেওয়া (৮০), মেহেরন নেছা (৮৫), আবেদা বেওয়া(৯৩)সহ আশ্রমের বাসিন্দাদের সাথে। তারা সকলেই প্রায় একই রকম কথা বললেন। তারা বললেন তাদের কোন সহায় সম্বল নেই। কারো সন্তান সন্তোদি নেই, আবার কারো সন্তান থাকলেও বৃদ্ধ বাবা/মাকে দেখভাল করে না। এখানে আসার আগে তারা অনাহারে- অর্ধাহারে দিযাপন করেছেন অন্যের জায়গায়। প্রতিদিন নানা অপমান ও গনজনাসহ্য করতে হতো তাদের। এখানে এসে তারা নতুন জীবন পেয়েছে। দিনের অধিকাংশ সময় কাটে তাদের ইবাদত বন্দিগী করে। বাকি জীবনটা যেন এখানেই কাটাতে পারে সে কামনায় করে তারা।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শীলাব্রত কর্মকার বলেন, নিসন্দেহে এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। তাদের এ উদ্যোগ চলমান রাখতে আমরা ইতিমধ্যে কিছু সহযোগীতা করেছি এবং আরো করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
RAYHAN SARKER ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৭:২৫ পিএম says : 0
বৃদ্ধাশ্রম পরিচালকের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম
Total Reply(0)
RAYHAN SARKER ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৭:২৫ পিএম says : 0
বৃদ্ধাশ্রম পরিচালকের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম
Total Reply(0)
Md. Omar Parbez ২৯ আগস্ট, ২০১৮, ৮:০২ পিএম says : 0
আপনারা যারা এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ।আমি আপনাদের এই মহৎ কাজের অংশীদার হতে চাই।তাই,আপনারা যারা এটি পরিচালনা করছেন,আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাই।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন