বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাহিত্য

এ সপ্তাহের পদাবলী

প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বাঁচি কি করে
জহির চাখারী

ফাগুনের উদাস দিনে
আগুন যদি লাগে বনে
আমি না জ্বলে থাকি কি করে।
মৃগয়ার সন্ধানে
সবাই নেমেছে গোপনে
আমি না খুঁজে থাকি কি করে।

বিকেলের মাতাল হাওয়ায়
খোলা চুল আজ কে ওড়ায়
যা কিছু সকলই হারায়
যে তোমায় বিষণœ দেখায়-
আমি না দেখে থাকি কি করে।

খেলে যায় গন্ধ তোমার
কেবলি দুঃখ আমার
এতো হতাশায় বাঁচি কি করে।

বহমান বসন্ত
কাজী রিয়াজুল ইসলাম

ভুবনে কখন যে বসন্ত যায় আর আসে
জানতে তা ওল্টাইনি কখনো আর গণিতের পাতা
যেদিন থেকে জীবন-বদলের সাজে সেজে এলে পাশে,
সময় ধরলো মেলে দু’জনের মাথার উপরে একটি ছাতা।

সুশোভিত কাননে রূপ নিলো হৃদয়ের মরুভূমি
অগণন পুষ্পের হিল্লোলে মন-প্রাণ উঠছিলো নেচে-
এখনো বেজে যায় সেই স্মৃতিময় আবেশের ঝুমঝুমি,
হৃদয়ের কুঞ্জবনে একই রঙিন সাজে আছো তুমি সেজে।

কতোশত ভয়ঙ্কর সাইমুম-টর্ণেডো গেলো বয়ে
ভেঙে যায় ঘরের চাল, কিন্তু সেই যে সময়ের ছাতা-
এতোটুকু নড়েনি, থেকেছি দু’জন ভালোবাসার বলয়ে,
আজো তো সেলাই করে যাই কাক্সিক্ষত স্বপ্নের নক্সীকাঁথা।   

ভুবনে কখন যে জমে ওঠে বসন্তের রঙিনমেলা রমরমা,
তার কোনো সংবাদ রাখার কি প্রয়োজন আছে প্রিয়তমা?


ঋতুরানী
জাফর পাঠান

বসন্তরানীকে কেন বলো তোমরাÑ বসন্তরাজ
রাজা কি তবে ফুলে সেজে দেখায় পুরুষের ঝাঁজ,
নারীর সৌন্দর্যে ফুলের সম্পর্ক বলে পুষ্পরানী
ফুলোরূপে রূপায়িত বসন্তকে নারী রূপে মানি।

ফুলে নারী আর নারীকে ফুল করে উপমা টানি
ফুলে ফুলে বাসরঘরেরÑ নববধূকেই জানি,
রসেভরা ফলে যদি হয়Ñ ঋতুরাজ গ্রীষ্মরাজ
বসন্তকে ঋতুরানী বলতেÑ কেহ নয় নারাজ।

নারী খোঁপায় গাঁথলে ফুল নারী হয় অপরূপ
ষড়ঋতু মোহিনী সাজে বসন্তে পায় নবরূপ,
বসন্ত তুমি তো চাঁদিনী প্রকৃতির অভিসারিণী
তুমি বসন্তরানী নারীরূপে তুমি মনোহারিণী।

দখিন হাওয়ার আবহে
বাদল বিহারী চক্রবর্তী

তোমার ঠোঁটে
ঠোঁট ছোঁয়াবার আগেই-
আমি অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলাম।
প্রচ- তুষারপাতের জবরদস্তিতে
মুক্তির নিঃশ্বাস পেতে
আমি যখন মরিয়া,
আকুল কণ্ঠে বন্দিনী যুবার
কাতর প্রার্থনার মতো যখন
আমার চারপাশ হতে ধ্বনিত হচ্ছিল,
‘হে দিবাকর, তোমার প্রখরতায়
জ্বালিয়ে দাও শুষে নাও বরফ গলনের
শেষ জল বিন্দুটি তখন-
শর্ষে ফুলের সর্বশেষ হাসিটি দেখেই
আমি বুঝতে পেরেছিলাম
অগ্নিস্নাত পলাশ-শিমুলে এ আমার, এ তোমার
অনঙ্গ ঠোঁটের পবিত্র পরশ।
হে রাজন, হে আমার প্রিয় বসন্ত,
আমায় অশেষ করে নাও তোমার
দখিন হাওয়ার আবহে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন