আগুন
মাহমুদুল হাসান নিজামী
আগুন লেগেছে আগুন-আগুন- আগুন- আগুন
দ্বাদশী বসতিতে প্রণয় ফাগুন
পলাশ উদ্যানে রক্তবরণ আগুন
কে আছেন- বাহে- একটু দেখুন-একটু দেখুন
হাড়ের রেললাইনের পাশে হৃদয় বসতি জ্বলে ছারখার
কেউ চেয়েও দেখলে না একবার
আগুন লেগেছে আগুন - বলো- এই দায় কার
ফায়ার ব্রিগেড- নাকি একাদশী আরিফার
বোধ পরিক্রমণ
পৃথ্বীশ চক্রবর্ত্তী
[উৎসর্গ : ইসরায়েলি হিংস্র হায়েনাদের হামলায় নিহত গাজা’র নিরীহ নারী-পুরুষ ও শিশুদের]
শূন্যে উড়ে জলে ভাসে স্থলে চড়ে মনের আবেগ
জীবন তো আঁকাবাঁকা ঝাকানাকা ঝাকানাকা ট্রেন
পাখা মেলে লাল-নীল পাখ-পাখি, প্রজাপতি, মেঘ
রঙ-ঢং-সং নাকি মানুষের অকৃত্রিম ব্রেন?
অন্ধকার ক্ষুধা-তৃষ্ণা এলোমেলো ভালোবাসা জানি
রাতদিন সর্বক্ষণ স্মৃতিগুলো চোখজলে ভাসে
জল্পনা ও কল্পনার হয় যদি পরিণতি পানি
ধীরে ধীরে দেহখানা অনায়াসে হিম হয়ে আসে।
ঘূর্ণিত ও সন্তরিত মহাকাশে গ্রহ-চাঁদ-তারা
সুখ আসে, দুখ যায়; শীত-গ্রীষ্ম অনুভূত হয়
জাগতিক সবকিছু আলো-কালো-ভালো-মন্দে হারা
এসবের আবর্তন কোনদিন নির্বাসিত নয়।
আজ-কাল পরশু ও আগামীরা স্বর্গনীড় বাঁধে
ভূ-লুণ্ঠিত মানবতা লুটেপুটে অন্যকালে কাঁদে।
সেই সময় সেই তোমাদের
মনিরুজ্জামান
সেই সময় সেই তোমাদের মনে পড়ে যায়
বার বার অসংখ্যবার রৌদ্রের মতো মনে পড়ে যায়
বায়ান্নর সেই স্বপ্নঘন দিনে সূর্যের প্রগাঢ় উষ্ণতায়
তোমরাই তো এক যমুনা রক্ত দিয়ে সেদিন বাঁচিয়েছিলে
আমার কবিতা লেখার সঞ্চয়
সেদিনের মতো সূর্য এত লোহিত কখনো দেখেনি বাঙালি
কিশোরীর কালো চোখ লাল হয়েছিল
তোমাদের রক্তের আগুনে
তোমাদের মৃত্যুতে আমরা মৃত্যুকে শিখেছি
দেখেছি মৃত্যুর পরাজয়
তাই আজও এদেশে মিছিল হয় অবিরাম
হাজার হাজার সেøাগানে পদ্মা, মেঘনা, যমুনায়।
রক্ত
মাকসুদুর রহমান মারুফ
নিশীথিনীর পেট চিরে ভোরের পূর্ব আকাশ
প্রত্যেহ একদলা রক্ত প্রসব করে।
নিত্যদিন প্রকৃতির নির্মম আঘাতে
গোধূলির পশ্চিম অন্তরীক্ষ রক্তে ভেসে যায়
ফোঁটা ফোঁটা গড়িয়ে পড়ে
নিষ্পাপ তরু-মহীরুহের পত্রপল্লবে।
নিসর্গের পথের ধার, পুকুরপাড় সজ্জিত হয়Ñ
রক্তজবা, রক্তগোলাপ, নাম না জানা কত রক্ত মেখে!
প্রকৃতির ওইসব রক্ত দেখে আমি হাসি।
জাতীয় শিক্ষাঙ্গনে রক্তপ্রবাহ
বায়ান্ন, একাত্তর ও মতিঝিলের রক্ত-ট্র্যাজেডি
বন্ধুকযুদ্ধের নামে নিরপরাধ রক্তের আর্তনাদ
অলিগলিতে, পথপ্রান্তরে, রাজপথে...
নিষ্পাপদের স্যাঁতসেঁতে রক্তের ছোপÑ
আমাকে কাঁদায়।
একদিন আমি তোমার ছিলাম
রিক্তা রিচি
একদিন আমার সকাল হতো তোমার কণ্ঠে
আমার কর্মব্যস্ততা, ক্যাম্পাস শুরু হতো তোমার কণ্ঠের আঁচে
একদিন আমারও দুপুর ছিল
দুপুরগুলো সাজতো প্রণয়ের খেলা নিয়ে
দুপুরের ঘামগুলো গলা বেয়ে নামতো
তুমি গোলাপচোখে তাকিয়ে আমাকে দেখতে
আর আমি লজ্জা পেতাম
একদিন আমারও বিকেল হতো
বিকেলগুলো কুসুমকোমলের মতো ঢেউ খেলত
বিকেলের ছাদে চায়ের কাপ হাতে দাঁড়িয়ে
মুঠোফোনে তোমার কণ্ঠ শুনতাম
এখন আমার সকাল নেই, দুপুর নেই, বিকেল নেই
সকাল, দুপুর, বিকেলগুলো অভিমানের তারায় ঘর বেঁধেছে
এখন আমার বড্ড প্রিয় রাত! অন্ধকার রাত!
রুদ্ধদুয়ার
এস এম কাইয়ুম
এতদিন আমি ঘুমের ভেতর ঘুমিয়ে ছিলাম।
বেঁচে ছিলাম না মরে গিয়েছিলাম
বরফ যুগের সেই হিম প্রবাহে
বুঝতে পারি না!
আজ এ প্রভাতে জেগে দেখি
আমি যে অন্য এক গাঁয়ে;
অন্য প্রকৃতি- ভিন্ন এক পৃথিবী।
এখন একলা আমার দুপুরবেলা
আদরের উপবাস
ইচ্ছে রঙে রাঙিয়ে যাই রুদ্ধদুয়ার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন