বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

৪ লাখ মানুষের সেবায় ১ জন ডাক্তার!

লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

লালমোহন (ভোলা) থেকে জহিরুল হক সেলিম | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলা প্রায় চার লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবায় মাত্র মপলজন ডাক্তার, তাও প্রেষণে রয়েছেন ভোলা সদর হাসপাতালে। অসহায় হয়ে পরেছে রোগীরা। ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। চিকিৎসা না পেয়ে অনেক সময় রোগীরা চলেও যাচ্ছে অন্যত্র।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সরেজমিনে ও ভুক্তভোগী রোগীদের মাধ্যমে জানা যায়, ২০০৮ সালে লালমোহন হাসপাতালটি ৩১ শয্যা হাসপাতাল থেকে ৫০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত হয়। কিন্ত অবকাঠামো ও কিছু যন্ত্রপাতি পাওয়া গেলেও জনবল কাঠামো বিশেষকরে ডাক্তারের কোনো উন্নতি হয়নি। বেড়েই চলছে জনগোষ্ঠী। লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রশিদ জানান, আমি মাত্র কিছুদিন হয় যোগদান করেছেন। কিন্তু হাসপাতালের তথ্যানুযায়ী এখানে মোট ২১ জন ডাক্তার থাকার কথা। কিন্তু কাগজে-কলমে ডাক্তার রয়েছেন মাত্র একজন। তিনি হলেন ডা. নাভিদ নুর। তাও প্রেষণে রয়েছেন ভোলা সদর হাসপাতালে। সে ক্ষেত্রে হাসপাতাল ডাক্তার শূন্যই বলা যায়। তাহলে এই লাখ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা কিভাবে চলে? এর উত্তরে তিনি বলেন তিন জন কনসালটেন্ট রয়েছেন ও এমবিবিএস ডাক্তার রয়েছেন দুইজন। তাও ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মামুন তজুমুদ্দিন হাসপাতাল থেকে এবং মঙ্গলসিকদার ইউনিয়ন স্বাস্থ কেন্দ্রের ডাক্তার মহসিনকে এনে উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। দৈনিক শত শত রোগী আসে তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। স্থানীয় এমপি আলহাজ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন সাহেবের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অনেকবার গিয়েছি, চিঠি পাঠিয়েছি, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। অনেক সময় নার্স দিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। নার্সরাই এখানে রোগীর ভরসা। রোগীরা বলেন, এখানে তেমন কোনো ডাক্তার পাওয়া যায় না। রোগী বেশি ডাক্তার কম।
নিয়মানুযায়ী এমবিবিএস ডাক্তাররা কনসালটেন্টদের কল করলে তারা এসে রোগী দেখবেন। সে ক্ষেত্রেও রয়েছে কিছুটা বিড়ম্বনা। তাও প্রায় সময়ই ট্রেনিংসহ বিভিন্ন কাজে বাইরে থাকে। এর মাঝে মাঝে যতটুকু সময় পান কনসালটেন্টরাই এখন রোগী দেখতে হচ্ছে। তারা না থাকলে রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা থেকে।
অন্য দিকে, লালমোহন হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডাক্তার বিনয় কৃষ্ণ গোলদার আউটডোরে রোগী দেখেন চরফ্যাশন গিয়ে। সে ওই সময়টা লালমোহনে থাকলে প্রাইভেট চিকিৎসাসেবাও পেত লালমোহনের রোগীরা তাও তিনি থাকছেন না। তিনি গাইনি ও সিজারে বিশেষজ্ঞ। তিনি চরফ্যাশনে চেম্বার করায় গর্ভবতী রোগীরা লালমোহন থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। সে ক্ষেত্রে বিত্তবানরা পারলেও গরিব রোগীরা খুবই অসহায় হয়ে পরে। অনেক সময় ভোলা জেলা সদরে নেয়ার পথে সন্তান প্রসব করে বা রোগী মারাও যায়। লালমোহন হাসপাতালে গর্ভবতী নারীদের সিজারের সব ব্যবস্থা থাকলেও ডাক্তার না থাকায় রোগীর সিজার করা যাচ্ছে না বলে জানান কর্তৃপক্ষ। তারা আরো জানান এক্স-রে মেশিনসহ অনেক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি থাকলেও জনবলের অভাবে রোগীদের সেবা দেয়া যাচ্ছেনা। অন্য সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মহিবুর রহমান হাসপাতাল ডিউটির বাইরে আউটডোর লালমোহনে বিভিন্ন চেম্বারে বসে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ডাক্তার রিয়াজ উদ্দিন রাজিব রয়েছে ট্রেনিংয়ে।
এ ব্যাপারে ভোলা সিভিল সার্জন ডা. রথীন্দ্র নাথ বলেন, অন্যান্য হাসপাতালের চেয়ে লালমোহন হাসপাতালে অনেক বেশি ডাক্তার রয়েছেন। কনসালটেন্টসহ ছয়জন ডাক্তার আছে। তারপরও আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তারসহ ডাক্তারের ব্যাবস্থা করার চেস্টা করব এবং ডাক্তার বিনয় কৃষ্ণ গোলদারকে লালমোহন চেম্বারে রোগী দেখার জন্য বলব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md.Rubel Hossain ২৩ মার্চ, ২০১৮, ২:১৭ পিএম says : 0
Only Paper Maitence do Doctor but Chamber Outdoor,So Take Care It.
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন