মোতাওয়াল্লি যুগ্ম-মোতাওয়াল্লির অজ্ঞতা, অদূরদর্শিতা ও দুরভিসন্ধির কারণে আমতলীর একটি ওয়াকফ আওলাদ এস্টেটের অর্ধ শতাধিক সদস্য চরম ভোগান্তিতে পরেছেন।
বরগুনা জেলার আমতলী থানা দপ্তরে পাতাকাটা গ্রামের আতাহার মীর গং ও আ. রব হাওলাদার গংয়ের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আমতলী উপজেলাধীন পাতাকাটা সাকিনের জনৈক ছফেরদ্দিন হাওলাদার ১৯২০ সালে ২৫ একর জমি নিয়ে দুই ছেলে ও এক নাতির অনুক‚লে ‘ছফেরউদ্দিন হাওলাদার ওয়াকফ এস্টেট’ নামে একটি আওলাদ এস্টেট প্রতিষ্ঠা করেন। এর ১২ আনি অংশের জমি দুই ছেলে তুল্যাংশে এবং চার আনি অংশের জমি এক নাতি ভোগদখল করবেন বলে দলিলে শর্ত রেখেছেন। দুই ছেলের ১২ আনি অংশে বিগত মোতাওয়াল্লি হাচন হাওলাদার নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেলে তার ভাগিনা আতাহার মীর ১৯৯৮ সালে মোতাওয়াল্লি নিযুক্ত হন এবং চার আনি অংশে বিগত যুগ্ম মোতাওয়াল্লি মোসলেম আলী মারা গেলে পুত্র আব্বাস আলী যুগ্ম মোতাওয়াল্লি নিযুক্ত হন। আতাহার মীর অশিক্ষিত, অলস, অকর্মণ্য ও জুয়াড়ি হওয়ায় মোতাওয়াল্লি নিযুক্তির অল্প সময়ের মধ্যে তার ভাতিজি জামাই জালালের কাছে জমি দেয়ার শর্তে হাজার হাজার টাকা ঋণী হয়ে পড়েন। ঋণের ভার লাঘবের জন্য আতাহার মীর এক ভাতিজি বর্তমান থাকা সত্তে¡ও পুনরায় তার আপন ছোট বোনকে জালালের কাছে বিয়ে দেন। আপন দুই ভাতিজিকে বিয়ে দিয়ে তাতেও রেহাই না পেয়ে এস্টেটভুক্ত দুই একর জমি জালালের ভোগদখলে হস্তান্তর করেন, ২০১৩ সালে যা ৪৬২২ নং কবলা দলিলমূলে রেজিস্ট্রি করে দেন। ২০০৭ সালে তিনি তার জেঠুস লাইলী বেগমকে ফুসলিয়ে ৮০ শতাংশ জমি রেজি. দলিলমূলে ওই জালালের নিকট বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন। ১৯৯২ সালে বিগত রেকর্ডিয় মোতাওয়াল্লি হাচন হাওলাদার এস্টেটের ৯৩ শতাংশ জমি জনৈক আ. ছত্তারের কাছে বিক্রি করেন, যা থেকে ৪০ শতাংশ জমি আতাহার মীর তার ওই দ্বি-ভাতিজি জামাই জালালের নামে ফেরত আনেন। জালাল সর্বমোট ওয়াকফ এস্টেটের ৩.২০ একর জমির মালিক হয়ে সেখানে বাড়ি তৈরি, বাগান সৃষ্টি ও পুকুর খনন করে ভোগদখলরত রয়েছে। অপরদিকে, ওই খতিয়ানটি ওয়াকফের নামে রেকর্ড না হওয়ায় বা বর্তমান মোতাওয়াল্লি অজ্ঞতা, অবহেলা বা অদূরদর্শিতার কারণে রেকর্ড সংশোধন না করায় এস্টেট বহির্ভূত জনৈক শাহজাহান আমতলী ভূমি অফিসের ৮০৫ আম/৭৯-৮০ নং নামজারি মূলে রেকর্ড সৃষ্টি করে জমি দখলের জন্য ২০১২ সালে কোর্টে মামলা করে, যা ২০১৭ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল। এসব মামলা-মোকদ্দমা ও জমাজমি হস্তান্তরের কারণে এস্টেটের বিরাট অংকের ভূমি উন্নয়ন কর ও ওয়াকফ ট্যাক্স বকেয়া পড়েছে। যুগ্ম মোতাওয়াল্লি আব্বাস আলী আতাহার মীরের এসব এস্টেট বিরোধী কর্মকান্ড অবগত থাকলেও এর প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উপরন্তু তিনি নামজারিকৃত রেকর্ডধারীদের পক্ষাবলম্বন করে বারবার এস্টেটভুক্ত জমির দখল পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করছেন।
বর্তমান মোতাওয়াল্লি আতাহার মীর ওয়াকফ জমি হস্তান্তরের কারণে অভিযুক্ত। এসব জমি উদ্ধার, মামলা ও হামলা থেকে রক্ষা পেতে ওয়াকফের নামে রেকর্ড সংশোধন করা তার পক্ষে অসম্ভব। বিষয়টি কবলা গ্রহীতা তার দ্বি-ভাতিজি জামাই জালাল জানতে পেরে বাড়ি-বাগান-পুকুরসহ ৩.২০ একর জমি রক্ষাকল্পে আতাহার মীরকে আর্থিক সহায়তাসহ মদদ দিচ্ছে যাতে তার পুত্রকে মোতাওয়াল্লি করা হয়। তার অসৎ উদ্দেশ্য, খামখেয়ালিপনা ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এস্টেটের আর্থিক মেরুদন্ড ভেঙে পড়েছে। আর এস্টেটের অর্ধ শতাধিক সদস্য চরম ভোগান্তির শিকারে পরিণত হয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন