শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটে বারান্দায় পাঠদান

তাড়াশ চরকুশাবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) থেকে এম ছানোয়ার হোসেন | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

উপজেলার সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত চরকুশাবাড়ি এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়ানোর ব্রত নিয়ে ১৯৭৯ সালে স্থাপিত হয় চরকুশাবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ে দোচালা টিনের ঘরের দুইটি কক্ষে সেই সময় পাঠদান করা হত গ্রামীণ শিশু শিক্ষার্থীদের। ১৯৯৪ সালে টিনের ঘরের জায়গায় একটি চার কক্ষ বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করে দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। এরপরও শ্রেণিকক্ষ সংকটে বছরের পর বছর ধরে বিদ্যালয়ের বারান্দায় চলছে পাঠদান। আর চারশ’ পঁয়তাল্লিশ জন ছাত্রছাত্রীর পাঠদানে হিমসিম খেতে হচ্ছে তিন শিক্ষককে। পাঁচজন শিক্ষকের মধ্যে একজন প্রশিক্ষণে রয়েছেন। আরেকজন আছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির সরু বারান্দায় পাঠদান চলছে শিশু শ্রেণির চল্লিশজন ছাত্রছাত্রীর। জায়গা স্বল্পতার কারণে দুই সারিতে গাদাগাদি করে বসে আছে কোমলমতী শিশু শিক্ষার্থীরা। মাঝখানে সুবিধামত বইখাতা রাখার জায়গা পর্যন্ত নাই। প্রখর রোদ এসে পড়েছে শিশুদের গায়। বিদ্যালয়টির অফিস কক্ষের অবস্থা আরো শোচনীয়। একেবারে ছোট এ কক্ষটিতে পাঁচজন শিক্ষককে সঙ্কুচিত হয়ে বসতে হয়। কক্ষের ভেতরে হাঁটা-চলাও মুশকিল। স্থান সংকটে এলোমেলোভাবে রাখা হয়েছে বইখাতাসহ বিদ্যালয়ের যাবতীয় উপকরণ।
শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদা খাতুন, ইসরাত পারভীন, মরিয়ম খাতুন, শাহানাজ পাভীন, হাবিব উল্লাহসহ অনেকে জানায়, শ্রেণিকক্ষ সংকটে বছরের পর বছর ধরে তাদের বিদ্যালয়ের বারান্দায় পাঠদান হয়। কখনো রোদে পুড়ে আবার কখনো বৃষ্টিতে ভিজে। বৃষ্টির পানিতে বইখাতা নষ্ট হয়ে যায়। পড়নের পোশাকও ভিজে যায়। ঝরের সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় শুরু হয় ছুটোছুটি। এভাবে পড়ালেখায় মনোযোগ নষ্ট হয়। বছর জুড়ে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ও প্রচন্ড শীতে জ¦র শর্দীতে মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ে তারা।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছা. আয়েশা খাতুন, মেঘনা খাতুন, রিতা পারভীন, রিমা খাতুন, আবু বক্কার, আরাফাত হোসেন, শাহিন আলম জানায়, শ্রেণি কক্ষেও জায়গা স্বল্পতার কারণে এক ব্রেঞ্চে ৫-৬ জন গাদাগাদি করে বসতে হয়। এভাবে মনযোগের অভাব ঘটে পড়ালেখায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল লতিফ জানান, প্রতি বছরই বাড়ছে শিক্ষার্থী। বাড়ছে শিক্ষার মান। ফলও ভালো হচ্ছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় শ্রেণিকক্ষ না থাকায় ২ শিফটে চলছে পাঠদান। প্রথম শিফটে শিশু শ্রেণি, প্রথম, দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান হয়। দ্বিতীয় শিফটে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান চলে। এরপরও শিশু শ্রেণির পাঠদান চলছে বারান্দায়। এতে পাঠদানে চরম বিঘ্ন ঘটছে। আর সরু ও ছোট অফিস কক্ষে তাদের বসা, হাঁটা-চলা, শিক্ষা উপকরণ রাখা দায় হয়ে পড়েছে। এ বিদ্যালয়টিতে আরো একটি অনুরুপ ভবন হলে ভালো হয়।
চরকুশাবাড়ি দুই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সংকট নিরসনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফকির জাকির হোসেন জানিয়েছেন, শিগগিরই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত আবেদন নিয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন