শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

বিনিয়োগের সেবা মিলবে সারাদেশে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দেশে বিনিয়োগের বড় অংশই ঢাকা ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক। অন্যান্য অঞ্চলে সম্ভাবনা থাকলেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সেবার অভাবে বিনিয়োগকারীরা সেদিকে খুব বেশি আগ্রহ দেখান না। এ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার একটি উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নিকট ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের এক জায়গা থেকে সব সেবা দেওয়ার যে কাজ শুরু হতে যাচ্ছে, তাকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডা।
বিডা সূত্রে জানা গেছে, তাদের কার্যক্রম সারাদেশে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। এ জন্য সব বিভাগীয় শহরে বড় পরিসরে ‘বিনিয়োগ ভবন’ নির্মাণ করা হচ্ছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে এক হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। আগামী জুলাই থেকে এ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বর্তমানে রাজশাহী এবং রংপুর ছাড়া সব বিভাগীয় শহরে সীমিত পরিসরে বিডার অস্থায়ী কার্যালয় রয়েছে। তবে ভাড়া বাড়ি থেকে বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সেবা নির্বিঘেœ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে বিডার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। জানা গেছে, বিভাগীয় জেলার বিডার প্রতিটি ভবন হবে ১২ তলা বিশিষ্ট। ১ একর জায়গাজুড়ে বিনিয়োগ ভবনে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবস্থাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
প্রকল্পের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যায় বিস্তারিত প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) বলা হয়, শিল্পোন্নত এবং উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত হতে দ্রুত শিল্পায়ন দরকার। শিল্পায়ানের স্বার্থে সব ধরনের সেবা নির্বিঘ্ন হওয়া প্রয়োজন। বর্তমানে একজন বিনিয়োগকারীকে নাম নিবন্ধন থেকে উৎপাদনে যাওয়া পর্যন্ত একাধিক সংস্থার কাছ থেকে সেবা নিতে হয়। সীমিত পরিসরের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে সব সেবা দেওয়া সব সময় সহজ হয় না। ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) আইন বাস্তবায়নে বিভাগীয় শহরে বিডার নিজস্ব ভবন নির্মাণ অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে।
বিনিয়োগে প্রয়োজনীয় ২৭ ধরনের সেবা নির্ধারিত সময়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন পাস করা হয়েছে গত ফেব্রয়ারিতে। এ আইনে পৃথিবীর যে কোনো জায়গা থেকে অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়ার কথা। তবে আগামী জুনের আগে এসব সেবা পাচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। এখনও আইন বাস্তবায়নে বিধিমালা তৈরি করা হয়নি। ২৭ ধরনের সেবা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানো হয়নি। এ ছাড়া যে সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনভিত্তিক সেবা দেওয়া হবে, তাও তৈরি হয়নি।
বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে বিনিয়োগ বোর্ড এবং প্রাইভেটাইজেশন কমিশনকে একীভূত করে বিডা গঠন করেছে সরকার। এ ছাড়া ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বা বিডা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ আকর্ষণে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ইতিবাচক প্রচার জোরদার করা হয়েছে। বিনিয়োগের জন্য সুযোগ-সুবিধাও বাড়ানো হয়েছে। নতুনভাবে প্রচেষ্টার কারণে জাপান এবং সিঙ্গাপুরের উদ্যোক্তারা কয়েক খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। শিল্প ও সেবা খাতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনার জন্য সিঙ্গাপুরের একটি প্রতিনিধি দল আগামী জুনে ঢাকায় আসবেন। বিনিয়োগ আনার উদ্দেশ্য নিয়ে আগামী ১৮ এপ্রিল নেদারল্যান্ডস এবং বেলজিয়াম যাচ্ছে একটি প্রতিনিধি দল।
বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের এসব উদ্যোগের ফলে গত বছর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে নিবন্ধন বেড়েছে। প্রকল্পের সংখ্যা এবং বিনিয়োগের পরিমাণ দুই-ই বেড়েছে। ২০১৭ পঞ্জিকা বছরে বিনিয়োগ নিবন্ধন বেড়েছে ১১ শতাংশ। মোট দুই হাজার ৭০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। নিবন্ধিত প্রকল্পের সংখ্যা বেড়েছে আট শতাংশ। মোট এক হাজার ৮২৭ টি প্রকল্প নিবন্ধিত হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন