সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সুগন্ধার ভাঙনে সড়ক ফেরিঘাট ও বিমানবন্দর হুমকিতে

| প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আতঙ্কিত অসহায় এলাকাবাসী

বরিশাল ব্যুরো : সুগন্ধা নদীর করাল গ্রাসের মুখে বিমানবন্দর, বরিশাল-মুলাদী-মেহেন্দিগঞ্জ সড়ক ও মীরগঞ্জ ফেরিঘাটসহ বাবুগঞ্জের পূর্ব ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের একাধিক জনবসতি। একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও মাদরাসাও নদীভাঙনের মুখে। আতঙ্কে রাত যাপন করছেন ক্ষুদ্রকাঠিসহ আসেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামর ভাঙনকবলিত পরিবারগুলো। ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামটির পূর্বাংশের অন্তত ৫০টি পরিবার ভাঙনের কবলে ভিটেবাড়িসহ শেষ সম্বলটুকুও হারিয়ে নিঃস্ব। নদী আঘাত হানছে বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ের উত্তর প্রান্তের অদূরেই।
সুগন্ধা নদীর পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত স্রোত প্রবল বেগ আড়াআড়িভাবে পূর্ব ক্ষুদ্রকাঠির সরদার বাড়ি এলাকার নদী তীরে আঘাত হানছে। সরদার বাড়ির মসজিদ, পুকুর, বাড়ির বেশ কয়েকটি বসতঘর নদী গ্রাস করেছে। বাড়ির সামনের বরিশাল-বাবুগঞ্জ সড়ক নদীতে বিলীন হয়েছে। মূল বাড়ির মাত্র তিনটি ঘর বর্তমানে অবশিষ্ট থাকলেও তা আসন্ন বর্ষা মৌসুমে টিকবে কিনা সে বিষয়ে সন্দিহান এলাকাবাসী। এমনকি বরিশাল-মীরগঞ্জ-মুলাদী প্রধান সড়কটি থেকে সুগন্ধার ভাঙন এখন মাত্র ৫০ মিটার উত্তরে।
স্থানীয় অধ্যাপক গোলাম হোসেন জানিয়েছেন, সরকারি কিংবা জনপ্রতিনিধিদের কাছে এলাকাবাসী একাধিকবার আবেদন নিবেদন করেও কোনো ফল হয়নি। ফলে নিজেদের উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের ‘পার্কোপাইন’ দ্বারা ভাঙন প্রতিরোধ কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল। প্রথম দফায় তারা শতাধিক পার্কোপাইন নদীতে ফেলার পরে দ্বিতীয় দফায় বেশ কিছু বাঁশের খাঁচা তৈরি হলেও অর্থাভাবে কাজটি থেমে যায়। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই নদীর পানির স্রোত দেখে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। জনগুরুত্বপূর্ণ বরিশাল-মীরগঞ্জ-মুলাদী প্রধান সড়কটি ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান এলাকাবাসী। এলাকার সাধারণ মানুষের মতে, সরদার বাড়ির ঘেঁষে নদী তীর থেকে পশ্চিমে অন্তত ৫০০ মিটার এলাকা ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেলে শতশত পরিবার, সড়ক, স্থাপনা, প্রতিষ্ঠান, আবাদি জমিসহ পুরো গ্রামটিও সুরক্ষিত থাকবে। সুগন্ধার ভাঙনে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ের উত্তর প্রান্ত। এমনকি সুগন্ধার ভাঙনের কারণেই এ বিমান বন্দরটির স¤প্রসারণ পর্যন্ত ব্যাহত হচ্ছে।
এ সব ব্যপারে বরিশাল-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. শেখ মো. টিপু সুলতান সাংবাদিকদের জানিয়েছে, ‘সুগন্ধা নদীর ওই এলাকার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বরিশাল-মুলাদী যাতায়াতের একমাত্র সড়কটিও ঝুঁকির মুখে। গত অর্থ বছরে ভাঙন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে তিনি প্রকল্পের অনুক‚লে বরাদ্দের সুপারিশ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু মৌসুম শেষের কারণে বরাদ্দ হয়নি, তবে এ বছর পুনঃরায় বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হবে’ বলেও জানান তিনি।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের তরফ থেকে বিমানবন্দরসহ মীরগঞ্জ ফেরিঘাট ও বাজার আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন থেকে এবং আবুল কালাম ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন এলাকা সুগন্ধা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষায় একটি উন্নয়ন প্রকল্প-প্রস্তাবনাÑডিপিপি পেস করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় চার কিলোমিটার এলাকায় নদ-নদী তীর রক্ষাসহ ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকার ডিপিপি পেস করা হলেও এখনো তা খুব একটা অগ্রগতি লাভ করেনি। ডিপিপি’টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের যাচাই-বাছাই কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্গঠন কাজ প্রক্রিয়ধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে এ প্রকল্পটি আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগে পরিকল্পনা কমিশনের চ‚ড়ান্ত অনুমোদনের খুব একটা সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন