সমবায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক সেক্টর যার মাধ্যমে দেশের সার্বিক অর্থনীতি চাঙ্গা হতে পারে। কিন্তু এ সেক্টরের প্রতি বিভিন্ন মহলের বিমাতা সুলভ আচরণের কারণে এটি দাঁড়াতে পারছে না। যারা একটি নজির তুলে ধরছি।
ব্যাংক কিংবা অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বড় ব্যবসায়ী কিংবা শিল্প প্রতিষ্ঠান ঋণ গ্রহণকালে সম্পত্তি মর্গেজ করতে রেয়াতি হারে রেজিস্ট্রেশন ফিও স্ট্যাম্প শুল্ক বাবদ খরচ হয় এক কোটিতে সর্বোচ্চ $১০,০০০/- টাকা। অপর দিকে সমবায় সমিতি হতে ঋণ গ্রহণকালে দরিদ্র সমবায়ী সদস্যগণ সম্পত্তি মর্গেজ করতে রেজিস্ট্রেশন ফি ও স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ খরচ হয় ৫% (প্রতি কোটিতে পাঁচ লক্ষ টাকা)।
দরিদ্র সমবায়ীদের উপর হতে এ জুুলুম দূরীভূত করণার্থে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক ২১-০১-২০১৪ইং তারিখে সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন সচিব বরাবরে স্মারক প্রেরণ করেন। সমবায় মন্ত্রণালয় ০৪-০৯-২০১৪ইং তারিখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণার্থে আইন ও বিচার বিভাগে সারসংক্ষেপ প্রেরণ করেন। আইন ও বিচার বিভাগ মতামতের জন্য ১১-০২-২০১৫ইং তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবরে স্মারক প্রেরণ করেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ নন-ট্যাক্স রেভিনিউ শাখা-২ মতামত না দিয়ে (১) সমবায় সমিতিসমূহ যে হারে রেজিস্ট্রেশন ফি ও স্ট্যাম্প শুল্ক দিয়ে থাকে তা কবে থেকে এবং কোন আইনের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং (২) ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য স্ট্যাম্প শুল্ক ও রেজিস্ট্রেশন ফি কবে থেকে এবং কোন আইনের ভিত্তিতে কার্যকর করা হচ্ছে তা জানতে চেয়ে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব বরাবরে ২২-০৪-২০১৫ইং তারিখে চিঠি লিখেন।
আইনও বিচার বিভাগ উক্ত চিঠির জবাব না দিয়ে উক্ত তথ্যাবলী জানতে চেয়ে ২৯-০৬-২০১৫ইং তারিখে মহাপরিদর্শক, নিবন্ধন, নিবন্ধন পরিদপ্তর বরাবরে স্মারক প্রেরণ করেন। মহাপরিদর্শক, নিবন্ধনের অফিস এ যাবৎ উক্ত স্মারকের উত্তর দেয়নি। খোঁজ নিতে গেলেই জানানো হয় যে সব কিছু হয়ে গেছে- চিঠি চলে যাবে কিন্তু সে চিঠি আর যায় না। বিষয়টি এ পর্যন্ত আসতে ২ বছর সময় লেগেছে। মহাপরিদর্শক, নিবন্ধধনের অফিস হতে কবে নাগাদ উত্তর যাবে, কবে নাগাদ আইন মন্ত্রণালয় আবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে, অর্থ মন্ত্রণালয় হতে মতামত কবে পাওয়া যাবে এবং দরিদ্র সমবায়ীগণ কবে এ জুলুম হতে নিষ্কৃতি পাবে তা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। সরকারি অফিসগুলো কোন চিঠির উত্তর দিতে কিংবা মীমাংসা করতে কত দিন সময় নিতে পারে তার একটি সূচি রয়েছে বলে শুনেছি।
এ ক্ষেত্রে উক্ত সূচি মানা হয়েছে কিনা তা দেখার কেউ কি আছেন? দেশের দরিদ্র সমবায়ীদের উপর এ জুলুম নিরসন করে তাদের ভোগান্তির অবসান করতে এগিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি সনিবন্ধ অনুরোধ রইল। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে- কারণ মাত্রাতিরিক্ত ফি’র কারণে এখন সমবায় সমিতির নামে মর্গেজ দলিল রেজিস্ট্রেশন হয় না বললেই চলে।
ইয়াকুব আলী খান
১১, জিন্দাবাহার ১ম লেন, ঢাকা-১১০০।
আগুন থেকে সতর্ক থাকুন
এখন শীতকাল এবং শুল্ক মৌসুম। এ মৌসুমে আর্দ্রতামুক্ত থাকার করণে পথ-ঘাটে ধুলোবালি উড়তে থাকে। এ সময় গাছের পাতা ঝরে যায়। প্রতি বছর এ মৌসুমে দেশের প্রতিটি জেলায় আগুন কোটি কোটি টাকার সম্পদ নিমিষে ছাই হয়ে যায়, এমনিকি জীবনহানিও ঘটে। কথায় বলে চোরে চুরি করলে ঘরের বেড়া হলেও থাকে, আগুনে পুড়লে কিছুই থাকে না। জীবনের সঞ্চিত ধন-সম্পদ নিমিষে ছাই হয়ে যেতে পারে। অতি সম্প্রতি চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায়, রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আগুন লেগে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুন থেকে সতর্ক থাকলে হয়তো আগুনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রেহাই পেতে পারেন। চুলার আগুন ও বিড়ি সিগারেটের জ্বলন্ত শেষাংশ থেকে, শর্ট সার্টিক এবং নানাবিধ কারণে আগুন লাগতে পারে। গ্রামগঞ্জে চুলার আগুন থেকে বেশি অগ্নিকা- সংঘটিত হয়। রান্না শেষে চুলার মুখ ঢেকে রাখা আবশ্যক। প্রতিটি ঘরে দুই বালতি বালি ও পানি মজুদ রাখা বাঞ্ছনীয়। যত্রতত্র সিগারেট/বিড়ির জ্বলন্ত শেষাংশ ফেলবেন না। অনেক সময় রান্না ঘরে মেয়েদের শাড়িতে অসর্তক অবস্থায় আগুন লেগে যায়। শাড়িতে আগুন লাগলে দৌড়াদৌড়ি না করে মাটিতে গড়াগড়ি দিন। গ্যাসের চুলা সারাক্ষণ না জ্বালিয়ে রান্না শেষে নিভেয়ে দিন। গ্যাসের চুলার তাপে কাপড়-চোপড় শুকাবেন না। নিজের জীবন এবং সারা জীবনের সঞ্চিত সম্পদ রক্ষায় আগুন থেকে সাবধান থাকুন।
সুমিত্র বিকাশ বড়–য়া
সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি-যুব, চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহার, নন্দনকানন, চট্টগ্রাম।
নিরাপদ অভিবাসন কাম্য
বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৭৬-২০১৫ পর্যন্ত অভিবাসী কর্মসংস্থানের জন্য দেশের বাইরে ৯৬,৩৩,৫৫২ জন গিয়েছেন এবং এ সময়ের মধ্যে তাঁরা ১০,০৮,০৮১,২৩ কোটি টাকা রেমিটেন্স হিসেবে দেশে প্রেরণ করেছেন। বিদেশে জনশক্তির রফতানি ও এ থেকে প্রাপ্ত রেমিটেন্সের পরিমাণ জাতীয় অর্থনীতিতে অভিবাসী শ্রমিকদের অবদান সহজেই অনুমেয়।
বিদেশের মাটিতে সুউচ্চ ইমারত নির্মাণ থেকে শুরু করে গৃহশ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা। অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানদ-ের আলোকে সরকার আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। কিন্তু এত কিছুর পরও নিশ্চিত হয়নি শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ অভিবাসন। অভিবাসী শ্রমিকদের শোভন কাজ এবং অধিবাসনের নামে অবৈধ মানব পাচার বন্ধের যথাযথ ব্যবস্থা এবং অভিবাসন ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের জন্য সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষে গ্রহণ করেছে, যা সমস্যার ব্যাপকতা লাঘবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যদিও অভিবাসনের ক্ষেত্রে উদ্ভূত সংকটসমূহ নিরসনে সরকারি পদক্ষেপসমূহ যথেষ্ট নয়। তাই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক মানবাধিকার সংস্থাসমূহের সম্মিলিত ও অবিরত প্রচেষ্টা গ্রহণ একান্ত প্রয়োজন।
সৈয়দ সাইফুল করিম,
মিরপুর ১, ঢাকা-১২১৬।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন