মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

মাশরুমে চাষির ভাগ্য বদল

প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৭ এএম, ১৩ মে, ২০১৮

সাভার থেকে সেলিম আহমেদ : ঢাকার সাভারে বসছে মাশরুমের বাজার। মাশরুম চাষ করে নারী-পুরুষ মিলে অর্ধশত পরিবারের ভাগ্য বদলেছে। তারা আজ স্বাবলম্বী। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সংসারের অভাব দূর করতে সক্ষম হয়েছেন সাভারের মাশরুম চাষিরা। নিজের চাষ করা মাশরুম বিক্রি করে মাসে প্রায় অর্ধ লাখ টাকা আয় করছেন। এতে করে সংসারেও তাদের কদর বেড়েছে। সাভারে প্রায় অর্ধশত নারী-পুরুষের ভাগ্য পরিবর্তনের চাবিকাঠি ওষুধী গুণসম্পন্ন সবজি মাশরুম।
সাভারে জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকের ভেতরে বিভিন্ন জাতের তাজা, শুকনা ও পাউডার মাশরুমের পসরা সাজিয়ে (বাজার) বসে থাকেন চাষিরা। তাদের উৎপাদিত মাশরুম এখান থেকেই পাইকারি ও খুচরা দরে বিক্রি হয়ে যায়। সাধারণ ক্রেতাদের সুবিধার জন্য মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট চাষিদের জন্য এ ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এ ছাড়া প্রধান ফটক লাগোয়া দুটি দোকান বসেছে। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে মাশরুমের চপ, পাকুরা, ফ্রাই, মাশরুম টি, কফি, ফাস্টফুট খাবার।
সাভারের জামসিং এলাকার বাসিন্দা মুন্নি আক্তার। একসময় স্বামীর সংসারে অবহেলিত ছিল সে। এখন মাশরুম চাষ করে তার ভাগ্য বদলেছে। বেদে সম্প্রদায়ের গোলাপী বেগম, কণ্ঠ শিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া, বাউল জাহাঙ্গীর, সাভারের মিজানুর রহমান, কুলসুম আক্তার লাকী, মোশারফ হোসেন, সুজন আলী, কুলসুম আরা, বেদেনা বেগমসহ অনেকেই এখন মাশরুম চাষ করে স্বনির্ভর। যারা একসময় অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় জীবন কাটিয়েছেন। আজ মাশরুম তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। নিজেরা মাশরুম চাষ করে তা বাজারে বিক্রি করে সেই অর্থ দিয়ে চলে তাদের সংসার এবং সন্তানের লেখাপড়ার খরচ।
টঙ্গী সরকারি কলেজের মাস্টার্সের ছাত্রী তানিয়া আক্তার (২৪)। তিনি জানান, লেখাপড়া শেষ করে চাকরি নিতে অনেক সময় লেগে যাবে। তাই মাশরুম চাষ শিখে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করছি। মাশরুম চাষে পুষ্টি ও তুষ্টি দুই-ই মিলে।
জামসিংয়ের মুন্নি আক্তার জানান, মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ভেতরের মাশরুম বাজারে তার মতো সব চাষিই মাশরুম ও চাষের বিভিন্ন উপকরণ বিক্রি করেন। প্রতিদিন শুধু মাশরুম বিক্রি হয় ১০০ কেজিরও বেশি। বর্তমানে সাভারে খুচরা দরে তাজা ওয়েস্টার মাশরুম ৩০০ টাকা, শুকনা ও পাউডার ১৫ শ’, ঋষি মাশরুম পাউডার তিন হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এভাবে একজন চাষি মাসে অর্ধ লাখ টাকা আয় করতে সক্ষম হচ্ছেন।
মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক ড. নিরোদ চন্দ্র সরকার জানান, বর্তমান সরকার দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। এরই ফল হিসেবে মাশরুম চাষ এখন আলোর মুখ দেখাচ্ছে অসহায় ও অবহেলিত মানুষকে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত প্রচুর ওষুধীগুণসম্পন্ন এই সবজি এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
দারিদ্র্য বিমোচনে মাশরুম চাষ একটি লাভজনক সবজি। চেষ্টা করলেই বাসাবাড়িতেও গৃহবধূরাও মাশরুম চাষ করে বাড়তি আয় করতে পারেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন