শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

সুন্নাতে খাতনা এইডস প্রতিরোধে সহায়ক

মুনশী আবদুল মাননান | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:২৭ এএম, ৪ জুন, ২০১৮

ঘাতকব্যাধি এইডস প্রতিরোধে মোজাম্বিকের জাম্বেজিয়া প্রদেশে অমুসলিমদের ব্যাপকহারে খাতনা করানো হচ্ছে। গত বছর সেখানে ৮৪ হাজার পুরুষের খাতনা করানো হয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। এইডস এমন এক রোগ যার প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু অবধারিত। অমিতাচার ও অনিয়ন্ত্রিত যৌনসংসর্গ এর বিস্তারের অন্যতম কারণ। চিকিৎসাবিদদের মতে সংযম, বেপরোয়া যৌনাচার বর্জন, সুশৃংখল জীবনযাপন, উচ্চ সতর্কতা ইত্যাদি এইডস থেকে বেঁচে থাকার উপায়।
চিকিৎসাবিদরা খতিয়ে দেখেছেন খাতনা এইডস প্রতিরোধে সহায়ক। জাম্বেজিয়ার গভর্নর নিজে একজন চিকিৎসক। তিনি এ কর্মসূচী সমর্থন করেছেন। সেখানে জোর করে কাউকে খাতনা করানো হচ্ছে না। স্বাস্থ্যকর্মীরা শুধু বলছেন, এটা এইডস প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। এতেই কাজ হচ্ছে। স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে পুরুষরা খাতনা করাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের একটি দাতব্য সংস্থা এ প্রকল্পে অর্থ জোগান দিচ্ছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা’র মতে, পুরুষের খাতনা এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি ৬০ শতাংশ কমায়। মুসলমান ছেলেদের জন্য খাতনা বাধ্যতামূলক। জন্মের দিন থেকে শুরু করে ৫/৭ বছরের মধ্যেই সাধারণত খাতনা করানো হয়। পরেও করা যায়। না জেনে না বুঝে একে অপ্রয়োজনীয় ও শিশুর জন্য কষ্টদায়ক ও ভীতিকর বলে ভাবতে পারেন অনেকে, বিশেষত অমুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা। মুসলমানদের কাছে এটা সুন্নত। সুন্নতে খাতনা বলে একে অভিহিত করা হয়। ইসলামের কোনো বিধান, মহানবী সা. এর কোনো নির্দেশিকা ও অনুমোদন অপ্রয়োজনীয় নয়। তার মধ্যে কোনো না কোনো কল্যাণ ও মঙ্গল নিহিত। খাতনার মধ্যেও তা বিদ্যমান। মহানবী সা. বলেছেন, কয়েকটি বিষয় মানুষের প্রকৃতিগত স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত (এতে কোনো ধর্মেই পার্থক্য নেই)। এর মধ্যে খাতনা, বগল ও নাভির নিচের চুল পরিষ্কার করা, নখ কাটা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এসব আসলে প্রকৃতিগত বিধান। সেই হিসাবে খাতনা মানব জাতির একটি সার্বজনিন সুন্নতও বটে। আদি পিতা হযরত আদম আ. থেকেই খাতনা প্রচলিত। তার খাতনা হয়েছিল। শুধু তারই নয়, মুসলিম জাতির পিতা বলে অভিহিত হযরত ইব্রাহিম আ. সহ এক লাখ ২৪ হাজার নবীরও খাতনা হয়েছিল। আর মহানবী সা. এর জন্মই হয়েছিল খাতনাকৃত অবস্থায়। এ থেকেই উপলব্ধি করা যায়, খাতনা কতটা প্রয়োজনীয় ও উপকারী।
মুসলমানদের জন্য খাতনা একাধারে হযরত ইব্রাহিম আ. এবং হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সা. এর সুন্নত। সুতরাং এ সুন্নত উপেক্ষা করা বা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। মুসলমানদের সব দেশ ও সমাজেই খাতনার প্রচলন রয়েছে। ইহুদী ও অধিকাংশ খৃষ্টানদের মধ্যে খাতনার প্রচলন রয়েছে। আসমানী কিতাবীদের মধ্যেই খাতনার প্রচলন বিদ্যমান। হিন্দু-বৌদ্ধদের মধ্যে খাতনার প্রথা লক্ষ্য করা যায় না। তবে জানা যায়, আদি ব্রাহ্মন সম্প্রদায়ের মধ্যে খাতনা চালু আছে। শাস্ত্রীয় নির্দেশনা হিসাবে তারা এটা করে থাকে।
খাতনা স্বাস্থ্যসম্মত। স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় নিয়ে অনেকে চিকিৎসকদের পরামর্শে খাতনা করে থাকে। মূত্র নিঃসরনে বাধা অপসারণ ও ময়লা থেকে দুর্গন্ধ বা ইনফেকশনের আশংকায় চিকিৎসকরা খাতনার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আধুনিক সময়ে বহু চিকিৎসক শিশুর জন্মের পর পরই খাতনা করার পক্ষে। কেননা, এতে তার নাভি ও খাতনা একই যতেœ, একই সাথে সুস্থ হয়ে যায়। খাতনা দাম্পত্য জীবনের জন্য উপকারী বলেও তাদের অভিমত।
ইসলামকে বলা হয় প্রকৃতির ধর্ম। এর প্রতিটি বিধান ও নির্দেশ প্রকৃতিসম্মত। প্রকৃতির বিধানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, উপকারী ও কল্যাণকর। ইসলামের এই বিধানটি মেনে এইডসের মতো মরণব্যাধির ঝুঁকি থেকে ৬০ শতাংশ মুক্ত থাকা সম্ভব, এটা কোনো সহজ ও সাধারণ কথা নয়। মানবজাতির জন্য তা কোনো ক্ষুদ্র কল্যাণ নয়।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
আর সুধারাম চক্রবর্তী ৩ জুন, ২০১৮, ১:১৪ এএম says : 0
I appreciate this and fully support this as a doctor. Islam has has found a great way to prevent lots of disease, thanks for the writing.
Total Reply(0)
রুদ্রা এম নীলা ৩ জুন, ২০১৮, ১:১৭ এএম says : 0
I am amazed. If its true then all men should do this, regardless what religion they follow. Love from India.
Total Reply(0)
মুহাম্মদ ফারুক উর রশিদ ৩ জুন, ২০১৮, ৪:১০ পিএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ্‌। মহান রাব্বুল ইজ্জত উনার প্রিয় হাবীব রাসুলে পাক(দঃ) উনার মাধ্যমে সমগ্র কায়েনাতের মংগলের সর্বোচ্চ এবং উত্তম পন্থা শিক্ষা দিয়েছেন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন