আজ সকাল থেকেই কমলাপুর স্টেশনে ঘরমুখো যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় শুরু হয়েছে। তবে ট্রেন ছাড়তে দেরিতে অসন্তোষ জানিয়েছেন যাত্রীরা।
বুধবার বাড়ি যাচ্ছেন ৪ জুন অগ্রিম টিকেট কেনা যাত্রীরা। এদিন সকালে রাজশাহী, দেওয়ানগঞ্জ, পার্বতীপুর, লালমনিরহাট ও খুলনার উদ্দেশে পাঁচটি বিশেষ ট্রেন ছেড়ে যায়। সারাদিনে মোট ৫৯টি ট্রেন ছাড়বে কমলাপুর থেকে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক সিতাংশু চক্রবর্ত্তী জানান, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ১০টি লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকছে। তিনি বলেন, বুধবার বেলা ১০টা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে ২১টি ট্রেন ছেড়ে যায়।
সকালে কয়েকটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের পর কমলাপুর স্টেশন ছেড়েছে। এরমধ্যে দুটি বিশেষ ট্রেনের দুটিই ছাড়তে দেরি হয়।
দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ছাড়ার সময় ছিল সকাল পৌনে ৯টার; তা ছেড়েছে নির্ধারিত সময়ের পৌনে একঘণ্টা পর।
লালমনিরহাটের লালমনি ঈদ স্পেশাল ট্রেন বেলা সোয়া ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা। এটি ছাড়ে সকাল ১১টায়।
দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল ট্রেনের যাত্রী ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মী তারা মিঞা বলেন, সকাল ৮টায় এখানে এসে বসে আছি। কিন্তু ট্রেন ছাড়তে দেরি করছে। এখন তো আরও দেরি করবে। কখন পৌঁছাব জানি না।
রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও তা সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ছেড়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস কমিউটার ট্রেন সকাল সাড়ে ৯টার পরিবর্তে ২০ মিনিট দেরি করে বেলা ৯টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে গেছে।
জামালপুরের তারাকান্দি রুটের অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেন আধাঘণ্টা দেরি করে সকাল সোয়া ৯টায় ছেড়েছে।
এছাড়া দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেস ২০ মিনিট দেরি করে বেলা ১০টা ২০ মিনিটে ছেড়েছে।
নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাড়ার সময় সকাল ৮টায়। তবে ট্রেনটি আধাঘণ্টা দেরি করে সকাল সাড়ে ৮টায় গেছে।
অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেনে ময়মনসিংহ যাচ্ছেন একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি আবদুল আলীম। ঈদে বাড়ি যেতে পেরে খুশি হলেও রেলসেবা নিয়ে অসন্তোষ জানান তিনি।
আলীম বলেন, ট্রেনের ভেতরের অবস্থা ভালো না। দেখেন আমরা প্রথম শ্রেণির চেয়ার কোচের টিকেট কিনেছি। কিন্তু সিট ভাঙা। আবার কয়েকটি সিট পেছনে কাত হয়ে যায়। সোজা হয়ে বসা যায় না। আবার প্রথম শ্রেণিতে অনেক দাঁড়ানো যাত্রী নেওয়া হয় বলে প্রচণ্ড ভিড়ে কষ্ট হয়।
ট্রেনের সেবা আরও উন্নত করা সময়ের দাবি বলে মনে করেন অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেনের আারেক যাত্রী আব্দুল খালেক। অবসরপ্রাপ্ত এই সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ঈদের আগে টিকেট কেনা থেকে শুরু হয় ভোগান্তি।
তিনি বলেন, টিকেট কেনার জন্য মানুষকে কি ভোগান্তিটা পোহাতে হয়। ছোট্ট একটা জায়গায় হাজার হাজার মানুষ। সেখানে সারাদিন দাঁড়িয়ে থেকেও অনেক সময় টিকেট পাওয়া যায় না। আর রেলের কোচ-বগি এসবের সঙ্কট তো আছেই। এসব বাড়ানো খুব জরুরি।
তবে এসব কষ্ট বাড়ি যাওয়ার আনন্দের কাছে ‘কিছুই না’ মিরপুরের গৃহিনী শামীমা মেহফুজের কাছে। একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের এই যাত্রী পরিবারের সঙ্গে দিনাজপুর যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বাড়িতে বাবা-মা ও শ্বশুর-শাশুড়ি আছেন। এছাড়া আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ঈদ করার আনন্দই তো অন্যরকম। এছাড়া ঈদের পরে আমার ছোটভাইয়ের বিয়ে। গরম অনেক এজন্য কিছুটা কষ্ট হচ্ছে তবে এটা খুব বেশি কিছু না।
বুধবার আগের চেয়ে ভিড় বেশি হয়েছে বলে জানান কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক সিতাংশু চক্রবর্ত্তী। তিনি বলেন, কয়েকটি ট্রেন সামান্য দেরি করেছে, এটা বড় কিছু নয়। বিভিন্ন কারণে কয়েকটি ট্রেন দেরি করে গেছে। তবে ঈদের সময় ১৫-২০ মিনিট দেরি করে যাওয়া বড় কিছু নয়। এটা ঠিক হয় যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন