এবারো ঈদ বাজারের কেনাকাটায় একটা বড় জায়গা করে নিয়েছে হিজাব ওড়না আর বোরকা। এক সময় নানী দাদী পর্দাশীল মহিলারা বোরকা হিজাবের ব্যবহার করলেও এখন তা ফ্যাশনের একটা অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। এখন সব বয়েসী মেয়েরা ব্যবহার করছে বোরকা, হিজাব আর ওড়না। তরুনীদের একটা বড় অংশ এখন এসবে আকৃষ্ট। হিজাব বোরকা ওড়না একটা শালীন পোশাক হিসাবে মনে করা হচ্ছে। এর সামাজিক মর্যদাও কম নয়। বিশেষ করে মুসলিমদের কাছে। বোরকা হিজাব ওড়না ব্যবহারের ফলে সূর্য তাপ ধুলো বালি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অনেক কিছু থেকে সুরক্ষা দেয়।
যদিও অন্যধর্মের তরুনীরাও ফ্যাশান হিসাবে হিজাব ব্যবহার করছে। আগে ব্যবহার শুরু হয় বোরকার। বয়স্কদের পাশপাশি তরুনীরাও ব্যবহার শুরু করে। বাজারে আসে বিভিন্ন ধরনের বোরকা। মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত তরুনীদের কাছে বোরকা প্রথমে ব্যবহার শুরু হয় অর্থনৈতিক কারনে। এটি সব ধরনের শাড়ি, কামিজ, থ্রিপিসের সাথে ব্যবহার করা যায়। এসব কমদামের পোষাকের উপর বোরকা চাপিয়ে অনায়াসে সর্বত্র চলাফেরা করা যায়। অন্যের বেশী দামী কাপড় আর নিজেরটা কম দামের এমন হীনমন্যতা থেকে রক্ষা করে বোরকা। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী এমনকি কর্মজীবী মহিলারা বোরকা ব্যবহার করছেন। কেননা তাদের প্রতিদিন ফ্যাশান করে নিত্যনতুন কাপড় পড়ে কর্মস্থলে যাবার সামর্থ নেই। এ থেকে রক্ষা করেছে বোরকা। তাছাড়া শালীন পোষাক হিসাবে এর অন্যরকম মর্যদা পাওয়া যায়্। এমনটি বলছিলেন শিক্ষানগরী রাজশাহীতে পড়তে আসা বেশ কজন শিক্ষার্থী। বোরকার কারনে তাদের ইউটিজিং এর শিকার কম হতে হয়। যদি কেউ কেউ বোরকাওয়ালী বলে ইভটিজিং করে। তবে তার সংখ্যা কম। এরা বলেন এটি ব্যবহার যেমন সাশ্রয়ী তেমনি শালীন ও ধর্মীয় দিক থেকেও এর মর্যদা রয়েছে। অনেকে সম্মানও করে। এখন বোরকার সাথে যোগ হয়েছে ওড়না আর হিজাব। চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। নিত্যনতুন ডিজাইন আর কাপড় ব্যবহার ম্যাচিং করার জন্য কারু কাজ লেস পাড়ের ব্যবহার হচ্ছে। রংবেরংয়ের বড় বড় ওড়না এসেছে। সব শেষে যোগ হয়েছে হিজাব। দিন দিন এসবের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এসব ফ্যাশান জগতে ঠাই করে নিয়েছে। এসব নিয়ে নিত্যনতুন ডিজাইন করতে ব্যাস্ত ফ্যাশান ডিজাইনাররা। এবারো ঈদ বাজারে এসেছে আকর্ষনীয় নানান ধরনের বোরকা হিজাব ওড়না। আগে কাপড়ের দোকানের সাথে এসবের ঠাই হলেও। এখন অবস্থা বদলেছে। শুধুমাত্র বোরকা, হিজাব আর ওড়নার অনেক দোকান। নানা রং আর ডিজাইনে ভরা। বেশকটি হিজাব ওড়নার দোকান পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় সেখানে প্রচন্ড ভীড়। ব্যবসায়ীরা বলেন প্রতিবছর হিজাব ওড়না আর বোরকার চাহিদা বাড়ছে। সবাই ঝুঁকছে ফ্যাশানেবল হিজাবের দিকে। তাছাড়া এখন তরুনীরা ইন্টারনেট ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এসব সম্পর্কে ধারনা পাচ্ছে। এসবের গ্রুপও পেজ রয়েছে। অনেকে মোবাইলে হিজাবের ছবি এনে তা দোকানীকে দেখিয়ে অর্ডার দিচ্ছে। ইন্টারনেটে মিলছে হিজাব বোরকা ব্যবহারের সুফল ধর্মীয় ও সামাজিক গুরুত্ব। রানীবাজারের হিজাব নামের দোকাটিতে ভীড় লক্ষ্য করা যায়। সাহেব বাজার আল আরাফা ব্যাংকের নীচে রয়েছে বেশকটি ওড়না আর হিজাবের দোকান। সেখানে গতকালও ছিল প্রচন্ড ভীড়। কত রংয়ের যে ওড়না তার শেষ নেই। মধ্যপ্রাচ্য হতে আমদানী করা বোরকা হিজাবও রয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা যায় বোরকা হিজাব ওড়না মান আর ডিজাইন ভেদে বিক্রি হচ্ছে দুশো হতে দুই হাজার টাকার মধ্যে। ফুটপাতের দোকানে বাচ্চাদের হিজাব বিক্রি হচ্ছে দুশো টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানালেন এবার এসবের বিক্রি মন্দ নয়্। ভালই বিক্রি হচ্ছে। বছর জুড়েই শিক্ষার্থীরা এসবের ক্রেতা থাকেন। ঈদকে সামনে রেখে উচ্চবিত্ত মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত সবাই কিনছেন। হিজাব সম্পর্কে জানতে ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা যায় বিশ্বে এখন ১ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব হিজাব দিবস পালিত হয়। ২০১৩ সালে বাংলাদেশী বংশোদ্বুব নাজমা খান ইন্টারনেটের মাধ্যমে এ দিবস পালনের আয়োজন করে হৈ চৈ ফেলেছেন। সেই হৈ চৈ এর রেশ এখন বাংলাদেশের প্রান্তরে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন