সিলেট নগরীর সুরমা মার্কেট পয়েন্টে ছাত্রদলের দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বাদ জুম্মা সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মী ও কমিটি প্রত্যাখ্যানকারীদের মধ্যে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটে। এসময় ৪/৫টি ককটেল বিস্ফোরণ করে কমিটি প্রত্যাখ্যানকারী ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
এসময় কমিটি প্রত্যাখ্যানকারীদের ২/৩টি মোটরসাইকেলও ভাংচুর করা হয়। ৪/৫টি সিএনজি অটোরিকসা, একটি ট্রাক ভাংচুর করা হয়। ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনায় সুরমা পয়েন্টে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন দিগিবিদিক পালাতে থাকেন। কয়েকজন মহিলা পথচারীর পড়ে গিয়ে আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার জুম্মা বাদে নগরীর মাছুদিঘীরপাড় পয়েন্ট থেকে নবগঠিত জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ও কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল বের করেন। মিছিলটি তালতলাস্থ বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয় অতিক্রমকালে মিছিলকে লক্ষ্য করে ৪/৫টি ককটেল ছুড়েন সুরমা পয়েন্টে আগে থেকেই অবস্থান নেয়া কমিটি প্রত্যাখ্যানকারী নেতাকর্মীরা। এসময় মিছিলকে ধাওয়া দেন কমিটি প্রত্যাখ্যানকারীরা। তাৎক্ষণিক নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীরা তাদের পাল্টা ধাওয়া দেন। এতে কমিটি প্রত্যাখ্যানকারী নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রদলের দেলোয়ার হোসেন দিনার জানান, ‘আমরা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল নিয়ে বের হলে কয়েকজন বিদ্রোহী নেতাকর্মী মিছিলে ককটেল বিস্ফোরণ করে। পরে আমরা তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।
অন্যদিকে বদরুল আজাদ রানা বলেন, কমিটি পক্ষের কয়েকজন নগরীতে মিছিল বের করার চেষ্টা করেছিল, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা তাদেরকে প্রতিহত করেছেন। কমিটি বাতিলের দাবিতে, যোগ্যদের মূল্যায়নের দাবিতে এবং চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আমরা নগরীতে শান্তিপূর্ণ মিছিল-সমাবেশও করেছি।
এর আগে গত বুধবার রাতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার কমিটি অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আকরামুল হাসান এ কমিটি অনুমোদন দেন। গঠিত ২৮ সদস্য বিশিষ্ট জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে আলতাফ হোসেন সুমনকে সভাপতি, দেলোয়ার হোসেন দিনারকে সাধারণ সম্পাদক ও আব্দুল মোতাক্কাবীর সাকীকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। অপর দিকে মহানগর ছাত্রদলের ২৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে সুদীপ জ্যোতি এষকে সভাপতি, ফজলে রাব্বী আহসানকে সাধারণ সম্পাদক ও রুবেল ইসলামকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়।
অন্যদিকে কমিটিকে ‘ভারসাম্যহীন’ কমিটি আখ্যায়িত করে কমিটি থেকে পরেরদিনই পদত্যাগপত্র জমা দেন জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম, সহ সভাপতি মাসরুর রাসেল, সহ সভাপতি শিহাব খান, যুগ্ম সম্পাদক সুহেল ইবনে রাজা, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রাজু, মহানগর ছাত্রদলের সহ সভাপতি সুহেল রানা, যুগ্ম সম্পাদক শাকিলুর রহমান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুল মজিদ চৌধুরী মুহিব। বৃহস্পতিবার রাতে এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ মিছিলও অনুষ্ঠিত হয়। কমিটি নিয়ে ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ছে। দাবি করা হচ্ছে কমিটিতে যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন