তিন জেলায় র্যাব ও পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চার যুবক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত শনিবার দিবাগত রাত ও রোববার ভোরে এ বন্দুকযুদ্ধে ঝিনাইদহে দুজন, গাইবান্ধায় এক ও ময়মনসিংহে একজন নিহত হন। র্যাব ও পুলিশের দাবি, নিহতদের মধ্যে তিনজন ‘মাদক ব্যবসায়ী’ ও অপরজন ‘ডাকাত দলের সর্দার’। তাদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য নিয়ে ডেস্ক রিপোর্ট :
ময়মনসিংহ ব্যুরো জানায়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তার নাম ফারুক মিয়া (৩০)। গত শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার আঠারবাড়ী তেলওয়ারী গন্ডি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফারুকের বিরুদ্ধে আটটি মাদকসহ প্রায় ১১টি মামলা আছে বলেও দাবি পুলিশের।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই পরিমল দাস দাবি করেন, বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই সাফায়েত, এএসআই মো. খলিল ও কনস্টেবল আনোয়ার হোসেন আহত হয়েছেন। তাদের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে ১০০টি ইয়াবা, সাতটি গুলির খোসা, একটি রামদা, একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এসআই পরিমল দাস জানান, শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ২টায় এলাকায় মাদক ভাগাভাগির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায় ঈশ্বরগঞ্জ থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলির একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে উদ্ধার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি এলাকায় র্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সাজ্জাদুর রহমান ও আব্দুর রাজ্জাক নামে দুই মাদক ব্যাবসায়ী নিহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার দিনগত রাত ২ টার দিকে। নিহত সাজ্জাদুর রহমান জেলা শহরের বাঘাযতিন সড়কের বাসিন্দা। অন্যদিকে আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ি পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামে। র্যাব-৬ ঝিনাইদহের কোম্পানী কমান্ডার সিনিয়র এএসপি গোলাম মোর্শেদ জানান, র্যাবের একটি টহল দল পবহাটি এলাকায় একটি বাড়িতে মাদক ব্যবসায়ীরা অবস্থান করছে এমন খবর পেয়ে অভিযান চালায়। অভিযানকালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা মটর সাইকেল যোগে র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। বন্দুকযুদ্ধ চলার পর সাজ্জাদুর রহমান ও আব্দুর রাজ্জাক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষনা করে। বন্দুকযুদ্ধে র্যাবেরও দুই সদস্য আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২টি ওয়ান শুটার গান, ৫৫ বোতল ফেনসিডিলও ১৫২ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে র্যাব। তারা শহরের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বলে র্যাব জানায়।
স্টাফ রির্পোটার, গাইবান্ধা থেকে জানান, পলাশবাড়ী উপজেলার সাকোয়া ব্রিজ এলাকায় গতকাল ভোর রাতে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ছামছুল হক (৩৮) নামে এক কুখ্যাত ডাকাত সর্দার নিহত হয়েছে। সে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য ও একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি ছিল। সে পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের সাকোয়া গ্রামের নওশিন আলীর ছেলে। গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহারিয়ার জানান, গত শনিবার ঢোলভাঙ্গা বাজার এলাকা থেকে ছামছুল হককে গ্রেফতার করা হয়। ছামছুল হকের দেয়া তথ্য মতে অস্ত্র উদ্ধার ও তার অন্য সঙ্গীদের ধরতে পুলিশ ভোরে তাকে নিয়ে তার নিজ গ্রামে অভিযানে যাওয়া যায়। এ সময় ছামছুলকে ছিনিয়ে নিতে তার সঙ্গীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছামছুল হক গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বিরুদ্ধে সদর, সাদুল্যাপুর ও পলাশবাড়ী থানাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতিসহ ১২টি মামলা রয়েছে। সে দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন