গত কায়েক মাস ধরে পরিচালনা কমিটির দুই গ্রুপের দ্ব›েদ্বর কারণে জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ১০২ জন শিক্ষক-কর্মচারী তাদের বেতন বোনাস পাচ্ছে না। গত ঈদেও তাদের বেতন ও বোনাসের টাকা তুলতে পারেননি তারা। বেতন-বোনাস থেকে বঞ্চিত হয়ে তারা গত চার মাস ধরে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ক্ষেতলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ এবং হিন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের দুই গ্রæপের মধ্যে জটিলতা, পারস্পরিক দ্ব›দ্ব এবং আদালতে বিচারাধীন মামলা থাকায় ওই দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মরত ১০২ জন শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা গত চার মাস ধরে বন্ধ আছে। তাছাড়া ক্ষমতার দাপটে ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের কমিটি নিয়ে জটিলতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেই।
আগামী ১৪ জুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের অর্থ উঠানোর শেষ দিন। গত ঈদেও ওই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের বেতন এবং বোনাসের অর্থ তুলতে পারেনি ক্ষমতার দাপটে ক্ষমতাসিন দলের লোকজনের কাছে জিম্মি অসহায় শিক্ষক-কর্মচারীরা। কাজেই দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত আছে ১০২ জন শিক্ষক-কর্মচারী। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারী। বেতন না পাওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে দুঃসহ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি, উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপে মানবিক বিবেচনায় যেন তাদের বেতন ও বোনাসের অর্থ পরিশোধ করা হয়।
কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্কুল এবং কলেজ পরিচালনা কমিটির দ্ব›েদ্বর কারণে এক একটি প্রতিষ্ঠানের দুই পক্ষের লোকজনেই হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে পাল্টাপাল্টি মামলা করেছেন। এসব কারণে ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষের কক্ষে তালাও লাগিয়েছেন উভয় পক্ষ। কমিটি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের দুই পক্ষ যেভাবে পাল্টাপাল্টি মামলা ও পেশি শক্তি প্রদর্শন করছে তাতে শঙ্কিত সবাই। শিক্ষকরা উচ্চমহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির এক গ্রুপের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলী বলেন, যদি অন্যরা বাধা সৃষ্টি না করে, শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য বেতন-বোনাস থেকে বঞ্চিত হবে না। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সে ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানের অন্য গ্রুপের সভাপতি ও ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল মজিদ মোল্লা বলেন, আদালতে মামলা আছে। কোনোভাবেই তার স্বাক্ষরে শিক্ষকরা বেতন-বোনাস উত্তোলন করতে পারবে না। যদি তাদের বেতন হয়, তাহলে আমার স্বাক্ষরেই সম্ভব।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের আইন কর্মকর্তারা ওই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদানের বিষয়ে দুই ধরনের মতামত পোষণ করেছেন। সে কারণে আমরা চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে কাগজ পাঠিয়েছি। অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত পাওয়া মাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন