জাম আমাদের একটি সুপরিচিত ফল। দেখতে কালো, তবে খেতে খুবই সুস্বাদু। খাদ্যমানেও ভরপুর। জাম দু’ধরনের হয়। ছোট এবং বড়। ছোট জামকে ক্ষুদিজাম বা বুনোজাম আর বড় জামকে বলে কালোজাম। কেউ আবার মহিষেজামও বলে। জামের কোনো উচ্চফলনশীল জাত নেই। সবগুলো স্থানীয়। এসব জাতের মধ্যে জাম্বু, জা¤ু^লা, জাভাপ্লাম, কালোপ্লাম, কালোজাম অন্যতম।
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, এর প্রতি ১০০ গ্রাম ফলে (বীজ বাদে) ৪ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম লৌহ এবং ৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-‘সি’ রয়েছে। অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের মধ্যে আমিষ ১ গ্রাম, শর্করা ১ দশমিক ৪ গ্রাম, চর্বি ০ দশমিক ৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২২ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ১২০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন-‘বি১’ ০দশমিক ০৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-‘বি২’ ০ দশমিক ০২৪ মিলিগ্রাম এবং খাদ্য শক্তি আছে ১১ কিলোক্যালরি। জাম সাধারণত তাজা ফল হিসেবে ব্যবহার হলেও এ থেকে তৈরি হয় জুস এবং স্কোয়াশ। জামে রয়েছে অনেক ভেষজগুণ।
খাদ্যে প্রধানত লৌহের ঘাটতি এবং সে সাথে আমিষের স্বল্পতা দেখা দিলে শরীরে রক্ত তৈরিতে ব্যাহত হয়। গর্ভবতী, প্রসূতি এবং শিশুরা এ রোগের সহজ শিকার। এ রোগ হলে বুক ধড়ফড় করে, কর্মক্ষমতা ও জীবনীশক্তি হ্রাস পায়। যেহেতু এ ফলে প্রচুর পরিমাণ লৌহ রয়েছে, তাই এ জাতীয় অন্য খাবারের পাশাপাশি জাম খাওয়ানো যেতে পারে। এতে অবশ্যই রক্ত স্বল্পতা দূর হবে। জামে ইলাজিক নামক এক প্রকার অ্যাসিড থাকায় ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাকের আক্রমণ প্রতিহত হয়। ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির প্রভাব হতে ত্বক ও চুলকে রক্ষা করে।
নিয়মিত জাম খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। উচ্চরক্তচাপ এবং হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে জাম অনন্য। রক্তে হিমোগেøাবিনের পরিমাণ বাড়ানো এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য আশ^ীর্বাদ। জামের রসের সাথে বিটলবণ মেখে ৩/৪ ঘন্টা রেখে দিয়ে, এরপর খেলে পাতলা পায়খানা, অরুচি ও বমিভাব দূর হয়। জামের কচি পাতার ২/৩ চা-চামচ রস একটু গরম করে ছেঁকে খেলে দু’তিন দিনের মধ্যে রক্ত আমাশয় সেরে যায়। জামের বিচি ডায়বেটিস রোগের মহৌষধ।
ষ নাহিদ বিন রফিক
টেকনিক্যাল পার্টিসিপেন্ট, কৃষি তথ্য সার্ভিস ও পরিচালক,
কৃষিবিষয়ক আঞ্চলিক অনুষ্ঠান বাংলাদেশ বেতার, বরিশাল;
মোবাইল নম্বর: ০১৭১৫৪৫২০২৬ ;
ই. মেইল: tpnahid@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন