বিদেশী বিনিয়োগ আনার নামে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জাপানি তামাক কোম্পানি জাপান টোব্যাকো (জেটি) গ্রুপকে বাংলাদেশে সরাসরি ব্যবসার সুযোগ দিতে যাচ্ছে সরকার। বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে স্থানীয় আকিজ গ্রুপের মালিকানায় থাকা ইউনাইটেড ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড (ইউডিটিসি) অধিগ্রহণের জন্য ১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ইউএস ডলারের এক লোভনীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে জেটি এবং আকিজ গ্রুপ। দেশের জনস্বাস্থ্যকে আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলার এই পদক্ষেপ চরম নিন্দনীয় এবং জনস্বাস্থ্যবিরোধী। বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো পণ্যের বৈচিত্র্যময়তা এবং আগ্রাসী বিপণন কৌশল অবলম্বন করে দ্রুত স্থানীয় বাজার দখল করে নেয়, বিশেষ করে তরুণ সমাজ এতে আকৃষ্ট হয় বেশি। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৩১ শতাংশই তরুণ। সুতরাং বিশে^র চতুর্থ বৃহত্তম তামাক কোম্পানি জেটি’র লক্ষ্যও এই তরুণ সমাজ। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ব্যবসা স¤প্রসারণের জন্য জাপান টোব্যাকো (জেটি) তথাকথিত নিরাপদ তামাকপণ্য ব্যাপার কিংবা ইলেক্ট্রনিক সিগারেট বিক্রয়ের কথা বললেও, আসলে সিগারেটের বাজার তৈরিই তাদের মূল লক্ষ।
এছাড়াও স¤প্রতি জাপানের বাজারে জেটি’র সিগারেট বিক্রয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে এবং জাপানের স্থানীয় বাজারে তাদের ব্যবসা ৫ দশমিক ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তাই সিগারেট বাজারে বিশ্বের ৮ম স্থানে থাকা বাংলাদেশ এখন জাপান টোব্যাকোর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে মৃত্যুবরণ করে, অসুস্থ হয় আরও কয়েক লাখ মানুষ। তামাকের এই ভয়াবহতা উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। অথচ, নতুন বিনিয়োগের নামে তামাক ব্যবসা স¤প্রসারণের সুযোগ প্রদান এই অঙ্গীকারের পরিপন্থি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন