শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

হজরত সুলায়মান (আ:)-এর কোরবানি ও শেষ নবী আগমনের সুসংবাদ

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

নবুওয়াত ও দুনিয়ার রাজত্ব এ দুইটারই অধিকারী করেছিলেন আল্লাহ তায়ালা হজরত সুলাইমান (আ:)-কে। তাঁর পিতা হজরত দাউদ (আ:) আসমানি গ্রন্থ ‘যবুর’প্রাপ্ত নবী-রসূল ছিলেন। দু’জনের কথাই কোরআনের বহু স্থানে বর্ণিত হয়েছে। জ্বিন, শয়তান, পশু-পাখি, বাতাস ইত্যাদি সব কিছুকে আল্লাহ পাক হযরত সুলায়মান (আ:)-এর অধীনস্থ ও অনুগত করেছিলেন এবং বিহঙ্গ ও কুলের বুলি তিনি বুঝতেন।
তাঁর যানবাহন ছিল ‘তখতে সুলায়মানী’। তাঁর হজ আদায়ের সফরটাও ছিল এ তখতের মাধ্যমে। তাঁর বিস্ময়কর এই সফরের কাহিনীটি বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে, যাতে তিনি হাজার হাজার পশু কোরবানি করেছিলেন। হজরত সুলায়মান (আ:)-এর পানি অনুসন্ধানের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল হুদহুদ পাখি। হুদহুদ একবার পানি অনুসন্ধান করতে গিয়ে অনুপস্থিত ছিল এবং এ অনুপস্থিতিতে সাবার রানী বিলকিসের খবর নিয়ে এসেছিল, যার বিস্তারিত বিবরণ কোরআনে রয়েছে। হুদহুদ পানি তালাশ করতে গিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বহন করে নিয়ে আসত। তাঁর অনুপস্থিতিকালে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল, যা নিম্নরূপ :
কথিত আছে যে, হজরত সুলায়মান (আ:) যখন বায়তুল মোকাদ্দাসের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন, তখন হজের উদ্দেশ্যে মক্কা মোর্কারমার দিকে সফরের নিয়ত করেন। সফরের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন এবং তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে মানুষ, জি¦ন, শয়তান, বিহঙ্গকুল ছাড়াও সকল জীবজন্তুকে নিয়ে যাত্রা করেন, যার ফলে এক বিশাল স্থানে সৈন্যরা ছড়িয়ে পড়ে। তার ‘তখত’ সকলকে নিয়ে উড়াল দেয় এবং দ্রুত তিনি মক্কার হেরমে উপনীত হন এবং যতদিন ইচ্ছা ততদিন অবস্থান করেন এবং সেখানে তাঁর অবস্থানকালে প্রতিদিন মক্কায় পাঁচ হাজার উট, পাঁচ হাজার গরু এবং পাঁচ হাজার বকরি জবাই করেন।
মক্কায় অবস্থানকালে হজরত সুলায়মান (আ:)-এর সফরসঙ্গী নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন : এই স্থানে অমুক অমুক গুণের অধিকারী এক নবী জন্মগ্রহণ করবেন এবং শান, শওকত ও প্রভাব-প্রতিপত্তি এক মাসের দূরত্ব পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে। সত্যের ব্যাপারে তাঁর আত্মীয়-স্বজন ও অপরিচিত সবাই তার নিকট সমান হবে। কোনো নিন্দুকের নিন্দা তাঁর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। লোকেরা জিজ্ঞাসা করে : ‘হে আল্লাহর নবী! সে নবী কোন ধর্মের ওপর হবেন?’ তিনি বললেন, ‘দ্বীনে হানিফের ওপর। সে ব্যক্তি হবে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে তার যুগ পাবে এবং তাঁর প্রতি ঈমান আনবে।’ লোকেরা জিজ্ঞাসা করে : ‘আমাদেরও তার আবির্ভাবের মধ্যে কত সময় বাকি আছে?’ তিনি জবাবে বললেন এক হাজার বছর। সুতরাং এখানে যারা উপস্থিত তারা অনুপস্থিত লোকদের নিকট আমার এই বাণী পৌঁছে দেবে। তিনি নবীগণের সর্দার ও খাতামুন নাবীয়ীন (সর্বশেষ নবী) হবেন’। হজরত সুলায়মান (আ:) হজের আরকান শেষ হওয়া পর্যন্ত মক্কায় অবস্থান করেন।
শেষ নবীর আগমন সম্পর্কে হজরত সুলায়মান (আ:) মক্কা শরীফে হজ করতে গিয়ে যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়িত হয়। বায়তুল মোকাদ্দাসের নির্মাতা হজরত সুলায়মান (আ:) হজ করতে গিয়ে সেখানে অবস্থানকালে প্রতিদিন হাজার হাজার পশু আল্লাহর নামে কোরবানি করার এক বিরল নজির স্থাপন করেছিলেন, যা ইতিহাসের একটি বিস্ময়কর ঘটনা। শেষ নবী হজরত মোহাম্মদ (সা:) ও বিদায় হজকালে একশত উট কোরবানি করে ‘ইব্রাহিমী সুন্নাত’ সুপ্রতিষ্ঠিত করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Add
শাজাহান ১২ আগস্ট, ২০১৮, ৩:৩৫ এএম says : 1
প্রতিদিনের এই লেখাগুলো আমার খুব ভালো লাগে
Total Reply(0)
Add
Shafiqul Islam ১২ আগস্ট, ২০১৮, ১০:১৫ এএম says : 0
খুব ভাল লাগলো। ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের ভাল একটি মাধ্যম । ধন্যবাদ ইনকিলাব পত্রিকা-কে।
Total Reply(0)
Add
MD.ZIAUL HAQUE HAKIM ১২ আগস্ট, ২০১৮, ৭:০৯ পিএম says : 0
এই লেখা গুলো আমার খুব লাগে। এই জন্য ইনকিলাবের সকলকে জানাই শুবেচ্ছা।
Total Reply(0)
Add
১২ আগস্ট, ২০১৮, ৭:৫৯ পিএম says : 2
মাশাল্লাহহ অসাধারণ! জাযাকাল্লাহ
Total Reply(0)