রংপুরে পীরগাছায় পানির অভাবে পাট জাগ (পচানো) দিতে না পেরে কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। বৃষ্টির অভাবে খাল-বিলে পানি না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে। কৃষকেরা জানান, ভাদ্র মাসেও বৃষ্টি না হওয়ায় এঅঞ্চলের খাল-বিলে পানি নেই। এ কারণে ক্ষেত থেকে পাট কেটে তারা জাগ দিতে পারছেন না। অনেকে জাগ দিতে না পারার ভয়ে পাট কাটছেন না। এতে পাটগাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পাটের সোনালি দিন আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে। প্রতিবছরই এ অঞ্চলে পাটের আবাদ বাড়ছে। বোরো ধানের বাম্পার ফলনের পর ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় এ অঞ্চলের চাষিরা হতাশ। উৎপাদন খরচের সঙ্গে ধানের দামের মিল না থাকায় কৃষকেরা ধানের বিকল্প হিসেবে পাট চাষের দিকে ঝুঁকছেন। চলতি মৌসুমে উপজেলায় সাড়ে আট হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ বেশি জমিতে পাট উৎপাদিত হয়েছে।
পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগেয়া গ্রামের কৃষক ছমির উদ্দিন জানান, পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় দুশ্চিন্তা হচ্ছে। ছাওলা ইউনিয়নের কৃষক রেজাউল করিম বলেন, ‘বোরো ধান চাষ করে উৎপাদন খরচ ওঠে না। তাই তিন হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছি। পাট ভালো হয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় উৎপাদন খরচ উঠবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছি।’
কৈকুড়ী ইউনিয়নের পাটচাষি নবিজল জানান, প্রতি দোন (২৪ শতাংশ) জমিতে ১৫০ থেকে ২০০ বোঝা পাট হলে সেই পাট জাগের জন্য খাল-বিলে পর্যাপ্ত পানি দরকার। সেই পানি কমপক্ষে দুই সপ্তাহ স্থায়ী হলে তবেই পাটগুলো ভালোমতো জাগ বা পচানো সম্ভব। কিন্তু বর্তমানে ওই পরিমাণ পানির উৎস নেই। আবার যেটুকু পানি পাওয়া যাচ্ছে তা পাট পচানোর জন্য একেবারেই অপ্রতুল। তিনি বলেন, বর্ষায় এ অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমান বৃষ্টির দেখা না মেলায় খাল-বিল, ডোবা-নালায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নেই। আর যেটুকু পানি আছে, সে পানিরও স্থায়িত্ব নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান জানান, বৃষ্টির জন্য বসে না থেকে কৃষকদের রিবন রেটিং পদ্ধতি (পাটগাছ থেকে ছাল ছড়িয়ে মাটির গর্তে পানি দিয়ে পুঁতে রাখা) ব্যবহার করে পাট পচানোর জন্য বলা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন