মাগুরা সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের গাফিলতির কারণে ৪ লেন সড়ক নির্মান কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে। রাস্তার পাশের গাছগুলো কেটে ফেললেও রাস্তা প্রসস্থের কাজ করতে পারছেনা সড়ক জনপথ বিভাগ। মাগুরা সাব রেজিস্ট্রি অফিস পুরাতন রেজিস্ট্রি মোতাবেক তথ্য দেয়ায় এ জটিলতা দেখা দিয়েছে। আর এর ফলে অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা কম নির্ধারণ হওয়ায় মাগুরা শহরের ৪ লেনের সড়ক প্রসস্থকরণ প্রকল্প পিছিয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। অধিগ্রহণে ভূক্তভোগী এলাকাবাসির অভিযোগে জেলা প্রশাসক এর নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল জেলা রেজিস্টার অফিসে গেলে এ তথ্য উঠে আসে।
শহরের পার্শ্ববর্তি পারনান্দুয়ালী এলাকার আব্দুল গফুরসহ প্রায় ৩০ জন এলাকাবাসি অভিযোগ করেন ঢাকা-খুলনা হাইওয়ের পাশে তাদের ৭৬.০৯ শতক জমি অধিগ্রহণের সম্প্রতি জন্য সরকার নোটিশ দেয়। নোটিশে বানিজ্যিক এ জমির মূল্য মাত্র ৯৬ হাজার টাকা শতক করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। মূল্য এত কম দেখতে পেয়ে ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে রেজিস্ট্রি হওয়া জমির দলিলসহ আবেদন করেন। ওই এলাকায় প্রতি শতক বাণিজ্যিক জমির বর্তমান বাজারমূল্য কমপক্ষে৬/ ৭ লাখ টাকা বলে জানান তারা।
মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা.আক্তারুন্নাহার জানান- এলাকাবাসির আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে রেজিস্ট্রি অফিস পরিদর্শনে দেখা যায় ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারী থেকে ২০১৬ সালের ৩০অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে রেজিস্ট্রিকৃত দলিলের উপর ভিত্তি করে বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই সময়ে কোন দলিলই রেজিস্ট্রি হয়নি। পুরাতন হিসাবমত দায়সারাভাবে ওই তথ্য দেয়া হয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর রেজিস্ট্রিকৃত দলিলকে তারা বালাম বইয়ে উঠায়নি। এরফলে দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই জটিলতা তৈরী হয়েছে। এখন পুনরায় ওই জমির মূল্য নির্ধারণ করে মন্ত্রনালয়ে অতিরিক্ত টাকা চেয়ে আবেদন করতে হবে। অতিরিক্ত টাকা প্রাপ্তির পরই ওই জমি অধিগ্রহণ করা হবে। ফলে ৪ লেনের কাজ কিছুটা বাধাগ্রস্থ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
মাগুরা সদরের সাব রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান ছুটিতে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে ওই অফিসের অফিস সহকারি মিহির কুমার সেন জানান- তথ্যগত বিভ্রাটে ভুলবশত এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তারা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানান।
২০১৭ সালের ২৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাগুরায় এসে শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া ঢাকা- খুলনা মহাসড়কের ৪ কিলোমিটার রাস্তা ৪ লেন করাসহ মোট ১০ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্থ করার ঘোষণা দেন। ৬২ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দে ওই প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের জুন মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। ইতিমধ্যে রামনগর থেকে আবালপুর পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু শহরের ৪ কিলোমিটার অংশে কিছু জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন না হওয়ায় ৪ লেনের কাজ শুরু করা যাচ্ছেনা বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম। এরফলে নির্ধারিত সময়ে ৪ লেনের কাজ সম্পন্ন না হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বেশী বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন