আশাশুনি (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা
আশাশুনি উপজেলার অন্যতম বর্ধিষ্ণু এলাকা দরগাহপুরে অবস্থিত দরগাহপুর এসকেআরএইচ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কমিটি-অভিভাবকদের বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও স্কুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সচেতন মহল দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন। স্কুলের অধ্যক্ষ, কিছু শিক্ষক এবং গভর্নিং বডির সদস্যবৃন্দ ও এলাকার মানুষের মধ্যে বিভেদ, দলাদলি, কাদাছড়াছড়ি, আইনী লড়াই, অধ্যক্ষকে বহিষ্কারের ঘটনা নিয়ে বিদ্যালয়টি বর্তমানে নাজুক অবস্থায় চলছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ছুটাছুটি, আলোচনা-সমালোচনা ও এক গ্রুপ অপর গ্রুপকে টেক্কা দিয়ে জয়ী হওয়ার যুদ্ধ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করলে স্কুলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টি ও সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এমনকি মানববন্ধন, মাইকিং, পাল্টাপাল্টি বক্তব্য এবং এলাকার মানুষের মধ্যে পক্ষপাতিত্ব সুস্পষ্ট হয়ে পড়েছে। আর এর পেছনে কিছু সিদ্ধান্ত/ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। পরিস্থিতি পর্যালোচলায় জানা গেছে, গত ২১ ডিসেম্বর’১৪ তারিখে রবিউল ইসলাম সিদ্দিকী বাবলুকে এডহক কমিটির সভাপতি করা হয়। গভর্নিং বডির সভায় ১৫ মে’১৫ নির্বাচনের তাং নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচনের ২৫ দিন পর বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যক্ষকে সভাপতির নাম প্রস্তাব পাঠাতে চিঠি দিলে অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম, এড. শেখ রহমত আলি ও শেখ রেদওয়ান আলির নাম দিয়ে প্রস্তাব পাঠান। এদিকে ১৫ মে এমপি মহোদয় শেখ মিয়ারাজ আলির পক্ষে ডিও লেটার দেন এবং অপর একটি পক্ষ মিয়ারাজ আলির নামে মামলার কপি বোর্ডে প্রেরণ করলে ১৮-৬-১৫ তাং রবিউল ইসলামকে সভাপতি মনোনীত করে পাঠান হয়। ৪ জুলাই’১৫ তারিখে কমিটির ১ম সভা হয়। সভায় ১০ জন সদস্যের ৪জন রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেননি। পরবর্তীতে একইভাবে সভা হলেও ৪ সদস্যের অনীহায় ক্ষুব্ধ সভাপতি নিজে পদত্যাগ করবেন ঘোষণা দেন বলে অধ্যক্ষ জানান। এরপর ৫/৬ মাস মিটিং করতে ব্যর্থ হন এবং এসময় সংরক্ষিত আসনের এমপি রিফাত আমিন ২৪-১২-১৫ তাং শামিনুর রহমানের পক্ষে ডিও লেটার প্রদান করলে বোর্ড তাকে সভাপতি মনোনীত করে। ২৬ জানুয়ারি রবিউল ইসলাম মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন (৯৪৮/১৬) করলে বিজ্ঞ আদালত কমিটি স্থগিত করেন। শামিনুর রহমান তখন স্টে অর্ডার ভ্যাকেটের জন্য আবেদন করলে দু’বার শুনানী হয়েছে এবং ২২ মে চূড়ান্ত তারিখ রয়েছে বলে অধ্যক্ষ জানান। এরই মধ্যে রবিউল ইসলাম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ৮ এপ্রিল গভর্নিং বডির সভায় (অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে) অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অধ্যক্ষ জুলফিকর বলেন, সাসপেন্ড অবৈধ হয়েছে। তাকে শোকজ করা হয়নি। মূল রেজুলেশন খাতা ব্যবহার করা হয়নি। কোর্টে মামলা বিচারাধীন থাকায় মিটিং আহ্বান ও সিদ্ধান্ত অবৈধ হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগও মিথ্যা। এইচএসসি পরীক্ষার দায়িত্ব বিশ্বজিতের উপর, আয়-ব্যয় হিসাব তার কাছে রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগ অমুলক। তাছাড়া সভাপতির পুনর্বহালের আদেশ কোর্ট থেকে দেয়া হয়নি। অবশ্য রবিউল ইসলাম সিদ্দিকী ভিন্নমত পোষণ করেন। সবমিলে কলেজ-স্কুল চলছে নানাবিধ সমস্যা মাথায় নিয়ে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন